ইসরায়েল ইরানে পাল্টা হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র তাতে অংশ নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
রবিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে বাইডেন ইরানে পাল্টা হামলা নিয়ে তার দেশের এই অবস্থানের কথা জানান বলে বিবিসি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলায় তিন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ ইরানের সাত সামরিক উপদেষ্টা নিহত হয়। এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এর উপযুক্ত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
সেই হুঁশিয়ারকে বাস্তবে রূপ দিতে বেশি সময় নেয়নি ইরান। শনিবার রাতভর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় দেশটি, যা ছিল ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের প্রথম সরাসরি হামলা।
অবশ্য লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই ইরানের প্রায় ৯৯ শতাংশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও ক্রজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, এই যে ইরান সারারাত ধরে ইসরায়েলে কয়েকশ বার হামলা চালিয়েও লক্ষ্যে আঘাত হানতে ব্যর্থ হলো- এই ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে ইরানের চেয়ে ইসরায়েল সামরিকভাবে অগ্রসর।
ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েল কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, এ নিয়ে উত্তেজিত আন্তর্জাতিক অঙ্গন। এই উত্তেজনার মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে জানালেন, তারা যদি ইরানের বিরুদ্ধে বদলা নিতে চায়, তাতে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না।
হোয়াইট হাউজের এক জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে বলেছেন, ইরানের নজিরবিহীন হামলাকে ইসরায়েলি বাহিনী যেভাবে প্রতিহত করেছে, তা খুব সতর্কতার সঙ্গে এবং কৌশলগতভাবে চিন্তা করতে হবে।
তিনি বলেন, “সিরিয়া বা অন্য যেকোনো জায়গায় নিজেদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার ইসরায়েলের আছে বলে আমরা মনে করি। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের নীতি। এর কোনও পরিবর্তন হবে না। তবে ইরানে ইসরায়েলের পাল্টা জবাবে আমাদের অংশগ্রহণ থাকবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবিও একই মত দেন। রবিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এবিসির ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ইসরায়েলের আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র তাকে সহায়তা দিয়ে যাবে। তবে তেহরানের সঙ্গে কোনও যুদ্ধ চায় না হোয়াইট হাউজ।”
