Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

জনগণকে কেন্দ্রে রেখে সম্পর্ক গড়তে চায় দিল্লি, বার্তা বিক্রমের

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
[publishpress_authors_box]

সমালোচনা ছিল, দিল্লি সম্পর্ক বজায় রাখছিল আওয়ামী লীগের সঙ্গে, সেখানে বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া-পাওয়া ছিল উপেক্ষিত। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন তা আরও স্পষ্ট করছিল। এই প্রেক্ষাপটে ঢাকায় এসে বৈঠক করে নতুন বার্তা দিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

প্রতিবেশী দুই দেশের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে সোমবার ঢাকায় এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার পর বিক্রম মিস্ত্রি সাংবাদিকদের বলেছেন, ঢাকার সঙ্গে জনকেন্দ্রিক ও জনমুখী সম্পর্ক গড়তে চায় দিল্লি। এই সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে সব মানুষের কল্যাণ।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে খোলামেলা, অকপট ও গঠনমূলক সম্পর্ক রাখতে চায় ভারত।

জুলাই অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বিনির্মাণের কথা সম্প্রতি বলেছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা বলছিলেন, বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগের চোখে দেখে আসছিল ভারত, তাই তাদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে।

বাংলাদেশে গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সমর্থনে টিকে ছিল বলে বিএনপি নেতারাও বলে আসছেন।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপড়েনের শুরু হয়। এরপর গত মাসে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তা উত্তেজনায় গড়ায়।

এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলা হয় এক বিক্ষোভ থেকে। পাল্টা বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশেও। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ েথকে ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগও তোলা হয়েছে।

সচিবালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
সচিবালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

এরমধ্যেই পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার সকালে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান বিক্রম মিশ্রি। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিক্রম মিশ্রিই ভারতের সবচেয়ে বড় কর্মকর্তা, যিনি ঢাকায় এলেন।

প্রথমে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) যোগ দেন বিক্রম। এরপর সচিবালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করে তিনি সাংবাদিকদের সামনে আসেন।

প্রতিবেশী দেশ হিসাবে বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রেখেই ভারত চলতে চায় বলে জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে অত্যন্ত খোলামেলা, গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমি জোর দিয়ে বলেছি, যে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্ক চায়।

“আমরা ভবিষ্যতেও এই সম্পর্ককে একটি জনকেন্দ্রিক ও জনমুখী সম্পর্ক হিসেবে দেখব। যে সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে সব মানুষের কল্যাণ।”

পরস্পরের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলে উভয় দেশের জনগণ যে উপকৃত হবে, তা তুলে ধরেন তিনি।

“আমি আজ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য ভারতের আগ্রহের কথা তুলে ধরেছি।”

৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটক ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত, অন্য ভিসা দিলেও তা বেশ কম। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের নেতারা। আবার অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছে ভারত।

বৈঠকে সেই বিষয়টিও তুলেছেন জানিয়ে বিক্রম মিশ্রি বলেন, “আমি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি। আমরা সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও কূটনৈতিক সম্পত্তির ওপর হামলার কিছু দুঃখজনক ঘটনা নিয়েও আলোচনা করেছি।”

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বৈঠকে হিন্দু ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার ঘটনাগুলোর নিন্দাজনক বলেছেন বিক্রম মিশ্রি।

“সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিয়ে আমি আলোচনা করেছি এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে,” বলেন বিক্রম।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত