অলিম্পিকে মেয়েদের কুস্তির ৫০ কেজি বিভাগের সোনার স্বপ্ন দেখছিলেন বিনেশ ফোগাট। আজ ফাইনাল ছিল ভারতীয় এই তারকার। তবে মাত্র ১০০ গ্রামের জন্য তাকে প্রতিযোগিতা থেকেই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ৫০ কেজি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অনুমোদিত ওজনের চেয়ে বিনেশের ১০০ গ্রাম বেশি ছিল।
এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। উত্তাল ভারতীয় সংসদও। আসলে ফাইনালের আগের দিন হঠাৎ করে ২ কেজি ওজন বেড়ে যায় বিনেশের। ওজন কমাতে জগিং, স্কিপিং এবং সাইক্লিং করেছিলেন সারা রাত। চুলও কেটে ফেলেছিলেন, শরীর থেকে বের করেছিলেন রক্ত। পানিও খাননি।
তাতে অনেকটাই ওজন কমে। তারপরও বুধবার সকালে ওজন মাপা হলে ৫০ কেজির চেয়ে ১০০ গ্রামের মতো ওজন বেশি পাওয়া যায় বিনেশের। তাই ইভেন্টটি থেকে বাতিল করে দেওয়া হয় বিনেশকে।
সারা রাত ওজন কমানোর জন্য যে চেষ্টা করেছিলেন, তাতে অসুস্থ হয়ে প্যারিস গেমস ভিলেজের হাসপাতালে ভর্তি হন বিনেশ। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করেন ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট পিটি উষা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘যেভাবে বিনেশ ডিসকোয়ালিফাই হয়েছে তা দেখে আমি স্তম্ভিত।’’
ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিংয়ের (ইউডব্লিউডব্লিউ) সভাপতি নেনাদ লালোভিচ এ নিয়ে জানালেন, ‘‘ওর ওজন সামান্য বেশি ছিল। কিন্তু নিয়ম তো নিয়মই। সবার সামনে সব কিছু হয়েছে। সেখানে অন্য খেলোয়াড়েরাও ছিল। অনুমোদিত ওজন না থাকা এক জনকে কী করে অনুমতি দেওয়া যায়?’’
সব নিয়ম মেনে ফাইনালে পৌঁছানোর পর তো অন্তত রুপা পাওয়ার কথা বিনেশের। কিন্তু তিনি সেটাও পাচ্ছেন না। এর ব্যাখ্যায় নেনাদ লালোভিচ জানালেন, ‘‘এ ভাবে পদক দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ওজনের জন্য ও অন্য ক্যাটাগরিতে চলে যাচ্ছে। ভারত আবেদন করেছে। কিন্তু তাতে কিছু বদল হওয়া সম্ভব নয়।’’
বিনেশের বাদ পড়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতীয় সংসদ। তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন বিরোধী সংসদ সদস্যরা। তারা ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যর বিবৃতি দাবী করেন। ক্রীড়ামন্ত্রী বিবৃতিতে জানান, “বিনেশকে ডিসকোয়ালিফাই করা হয়েছে ১০০ গ্রাম বেশি ওজনের জন্য। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদিন সকালে কুস্তিগিরদের ওজন মাপা হয়। বুধবার সকালে তার ওজন হয় ৫০ কেজি ১০০ গ্রাম। আইওএ এর বিপক্ষে তীব্র প্রতিবাদ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে আইওএর প্রধান পিটি ঊষার সঙ্গে কথা বলেছেন। এ নিয়ে যা যা পদক্ষেপ করা যায়, করার জন্য অনুরোধ করেছেন।”
গোটা বিবৃতিতে ষড়যন্ত্র বা অন্তর্ঘাতের কোনও তত্ত্ব ক্রীড়ামন্ত্রী দেননি। উল্টো সরকার অলিম্পিকের আগে বিনেশকে কী কী সাহায্য করেছে, সেটার হিসাব দিয়েছেন তিনি।