Beta
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

জিরোনা চমকের ইতি টানলেন ভিনিসিয়ুস

tt
[publishpress_authors_box]

ভিনিসিয়ুস-বেলিংহামের সামনে পড়তেই সব চমক হাওয়ায় ভেসে গেল জিরোনার। তাদের ৪-০ গোলের বন্যায় ভাসিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ৬১ পয়েন্ট নিয়ে পৌঁছে গেল শক্ত-পোক্ত অবস্থানে। আর এতদিন ধরে শীর্ষে থাকা লস ব্লাঙ্কোসদের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলে শিরোপা দৌড় জমিয়ে রাখা জিরোনা পিছিয়ে পড়ল ৫ পয়েন্টে।

এবার লা লিগার দুর্দান্ত চমক জাগানিয়া প্যাকেজ জিরোনা। লিগের শুরুতে কয়েক ম্যাচে তাদের চমৎকার পারফরমেন্সকে ক্ষণিকের ঝলক হিসাবে দেখেছিল কেউ কেউ। পরে সেই ঝলক যখন নিত্য হয়ে যায়, তখন ভুল ভাঙ্গা শুরু হয়। স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মতো দলকে হারিয়ে তাদের সামনে এগোতে দেখে চোখ ছানাবড়া হয় সবার। শিরোপা দৌড়ে জিরোনা হয়ে উঠে রিয়ালের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। সেই প্রতিদ্বন্দ্বী কিনা শনিবার রাতে বার্নাব্যুতে একটি শটও নিতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদের পোস্টে ! একটা ‘ডিফেন্সলেস’ দলের বিপক্ষে তাদের চমকের রফা-দফা হয়ে গেল ৪ গোলে !

২১ ম্যাচে ১৬ গোল বেলিংহামের। পিচিচির দৌড়ে শীর্ষে তিনি। ছবি : এক্স

এই লিগে আগের সাক্ষাতে জিরোনার মাঠে গিয়ে হারিয়েছিল রিয়াল। এবার প্রতিশোধের সুযোগ ছিল। চার-চার জন সেন্টারব্যাকের ইনজুরিতে রিয়ালের ডিফেন্স একদম অরক্ষিত। ফাঁক-ফোকরে ভর্তি। এটা ছিল সুযোগ আবার একই সঙ্গে ফাঁদও। ফাঁদটা হলো অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে জিরোনা হাফ-লাইনের উপরে উঠে খেলতে গিয়েছিল শুরু থেকে। ভুলে গিয়েছিল রিয়ালের দ্রুত গতির বিধ্বংসী উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস ও নতুন ইংলিশ সেনসেশন জুড বেলিংহামের কথা।

তারই মাশুল গুনেছে জিরোনা পুরো ম্যাচ জুড়ে। ৬ মিনিটের মাথায় ড্রিবল করে দুই জনকে ছিটকে ভিনিসিয়ুস জায়গা করে নেন। এরপর ডান পায়ে দেখার মতো এক শট করে এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড এগিয়ে নেন রিয়াল মাদ্রিদকে। শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও ম্যাচে ফিরে জিরোনার চমক দেখানোর সময় আছে অনেক। কিন্তু ওই যে ফাঁদ, সবাই গোলের খোঁজে নেমে আরেক গোল খাওয়ার ব্যবস্থা করে ফেলে ৩৫ মিনিটে। অবশ্য প্রতি আক্রমণে কৃতিত্বটা দিতে হবে অনেকখানি পেছন থেকে দারুণ থেকে বল বানিয়ে দেওয়া ভিনিসিয়ুসকেই। তার নিখুঁত পাসে বেলিংহামের সামনে খুলে যায় গোলমুখ। গোলরক্ষককে কাটিয়ে তার বাঁ পায়ের চমৎকার ফিনিশে জিরোনা পিছিয়ে পড়ে ২-০ গোলে।

ম্যাচ কিন্তু তখনো শেষ হয়নি। বিরতির পর নতুন কৌশলে ফিরে পারতো জিরোনা। সেটাও হতে দিলেন না ওই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ৫৪ মিনিটে তার দুই পায়ের শিল্পিত ফুটবলে দুই ডিফেন্ডার কুপোকাত। বাঁদিক দিয়ে ঢুকে তার নেওয়া শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিয়েও গোল ঠেকাতে পারেনি। জুড বেলিংহামের লক্ষ্যভেদী টোকার পর পুরো গ্যালারি মাতোয়ারা হয় বিটলসের সেই গানে, “হেই জুড, ডোন্ট মেক ইট ব্যাড। টেক এ সেড সং অ্যান্ড মেক ইট বেটার।” সমর্থকদের প্রত্যাশা মতোই জোড়া গোলে তিনি পার করে দিলেন আরেকটা কঠিন হার্ডল। লিগে ২১ ম্যাচে ১৬ গোল করে রিয়াল সমর্থকদের মনে ২০ বছর বয়সী এই ইংলিশ ফুটবলার জ্বালিয়ে দিয়েছেন নতুন আশার দ্বীপ।

গোলের হিসাবে বেলিংহাম হলেও পুরো ম্যাচের চরিত্র বদলের নায়ক আসলে ভিনিসিয়ুস। এই ব্রাজিলিয়ানের গোলে ম্যাচে শুভযাত্রা হয়েছে রিয়ালের। এরপর বেলিংহামের দুই গোলে পরোক্ষ অবদান রেখে তিনি ৬১ মিনিটে স্বদেশী রোদ্রিগোর গোলটিও বানিয়ে দিয়েছেন। একজন ফুটবল শিল্পীর পায়ে খেলাটা এভাবে মোহনীয় হলে প্রতিপক্ষের কি আর চমক দেখানোর সুযোগ থাকে ! তাছাড়া এই ম্যাচে সবকিছু তাকে ঘিরেই হবে বলে যেন শেষ মিনিটে সতীর্থ হোসেলুর পেনাল্টি কিকটাও আটকে গেল পোস্টে গিয়ে। তাহলে নির্দ্বিধায় লেখা যায়, ভিনিসিয়ুসেই জিরোনা চমকের ইতি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত