ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি কমলা হ্যারিস, কে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউজে? এ প্রশ্নর উত্তর জানতে যেমন সারাবিশ্ব অপেক্ষা করছে। এরমধ্যে অনেকে ভাবছে, যদি ট্রাম্প জিতে যায়, তাহলে কমলা কী করবেন? একইভাবে উল্টো ফল হলে অর্থাৎ যদি কমলা জিতে যান, তাহলে ট্রাম্প কী করবেন?
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে নিয়ে এই প্রশ্নটিই একদল ভোটারের সামনে রাখা হয়েছিল একটি জরিপে; যার ফল বলছে, কমলা হার মেনে নিলেও ট্রাম্প মানতে চাইবেন না।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭২ শতাংশের ধারণা, যদি নির্বাচনে বেশি ভোট পেয়ে ট্রাম্প জয়ী হন, তাহলে কমলা তা মেনে নেবেন। ট্রাম্পের জয়কে তিনি স্বীকৃতিও দেবেন।
কমলার সমর্থকদের ৯৫ শতাংশ আর ট্রাম্পের সমর্থক ৪৮ শতাংশ ভোটার মনে করেন, ফলে ট্রাম্প জয়ী হলে কমলার তা স্বীকার করে নেওয়া উচিৎ।
একই প্রশ্নে ভিন্নচিত্র দেখা গেছে ট্রাম্পের প্রসঙ্গে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ২৪ শতাংশের ধারণা, হেরে গেলে ট্রাম্প তা মেনে নেবেন। ৭৪ শতাংশেরই ধারণা এর উল্টো।
যদিও ট্রাম্প সমর্থকদের ৪৬ শতাংশ এবং কমলার সমর্থকদের ৪ শতাংশের আশা, তেমনটা হলে ট্রাম্পের উচিৎ কমলাকে বিজয়ী হিসেবে মেনে নেওয়া।
কমলা হ্যারিসের সমর্থকদের ৬১ শতাংশ এবং ট্রাম্পের সমর্থকের ৩২ শতাংশ মনে করেন, যদি তাদের প্রার্থী ভোটে হেরে যায়, তাহলে বিপক্ষ প্রার্থীকে দেশের বৈধ রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি দুই প্রার্থীকে নিয়ে ভোটারদের মনোভাব জানতে এই জরিপ পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পিউ রিসার্চ সেন্টার। গত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৫ হাজার ১১০ জন এই জরিপে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ২৫ জন নিবন্ধিত ভোটার।
অবশ্য জরিপে ট্রাম্পকে নিয়ে এমনটা ভাবার কারণও রয়েছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারের পর ট্রাম্প তা মানতে চাননি।
সেবার ফল ঘোষণার আগেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করে এক ধরনের ভজঘট পাকিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বাইডেন বিজয়ী হলেও পরাজয় স্বীকার করেননি ট্রাম্প। তার দাবি, ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে তার বিজয় কেড়ে নেওয়া হয়।
যার জেরে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমর্থকরা যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলাও করে বসে এবং দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন এক সহিংসতা চালায়। এজন্য দায়ী করা হয় ট্রাম্পকে।
পিউ রিসার্চের জরিপে দেখা যাচ্ছে, কমলা বা ট্রাম্প, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রধান প্রার্থীকে নিয়ে বেশিরভাগ ভোটারই ইতিবাচক মনোভাবের তুলনায় বেশি প্রকাশ করেছে নেতিবাচক মনোভাব।
কমলা হ্যারিসের বিষয়ে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৬ শতাংশ আশা করছে, তিনি ভালো বা সেরা প্রেসিডেন্ট হবেন, ১৮ শতাংশের ধারণা তার নেতৃত্ব হবে গড়পরতা, আর ৪৬ শতাংশ মনে করছেন তিনি খারাপ বা ভয়াবহ প্রেসিডেন্ট হবেন।
অন্যদিকে একই ধরনের ফলাফল আসছে ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও। সেখানে ৪৮ শতাংশের ধারণা, ট্রাম্প হবেন খারাপ বা ভয়াবহ ধরনের প্রেসিডেন্ট, তিনি ভালো বা সেরা হবেন বলে মনে করেন ৪১ শতাংশ। তবে কমলার তুলনায় কম, ১১ শতাংশ মনে করেন তিনি গড়পরতা প্রেসিডেন্ট হবেন।
তবে ওয়াশিংটনকে ভালোদিকে বদলাবেন, না কি খারাপ দিকে, সে প্রশ্নেও নেতিবাচকতার পাল্লাই ভারী। ৪৮ শতাংশ ভোটার মনে করে ট্রাম্প ওয়াশিংটনের ক্ষতি করবেন, বিপরীতে ৪১ শতাংশ মনে করেন তিনি ভালোর জন্যই বদল আনবেন।
৪১ শতাংশের ধারণা কমলা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবেন, আর ২৯ শতাংশের ধারণা তিনি ভালো কিছুর জন্যই বদল আনবেন। অন্যদিকে ১০ শতাংশের ধারণা ট্রাম্প তেমন কোনও পরিবর্তন আনবেন না, কমলা হ্যারিসের ক্ষেত্রে এমন ধারণা ৩০ শতাংশের।
যদিও বিরোধী দলের সঙ্গে কাজ করার প্রসঙ্গে জরিপে এগিয়ে আছেন কমলা হ্যারিস। ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর ধারণা যদি কমলা হ্যারিস জেতেন তাহলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে কাজ করবেন। অন্যদিকে মাত্র ৯ শতাংশের ধারণা, এমন ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হবেন ট্রাম্প।