ব্যালট পেপার ছিনতাই হওয়ায় চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার একটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম।
বুধবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
ইসি সচিব বলেন, “সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন ৯টি ব্যালট বইয়ে ৫৩২টি ব্যালট ছিনতাই হয়েছে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আইন মোতাবেক কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করেছেন।”
এ ছাড়া প্রতীক জটিলতা বগুড়া সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট বন্ধ আছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, ফেনী সদর উপজেলার পিটিআই ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের দায়ে একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এছাড়া উল্লেখযোগ্য বড় ধরনের ঘটনা হয়নি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জানান, উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বুধবার যে ৮৭ উপজেলায় ভোট চলছে, তাতে প্রথম চার ঘণ্টায় ২০ শতাংশের কম ভোট পড়েছে।
তৃতীয় ধাপের এই ভোটে ৭১ উপজেলায় ব্যালটে এবং বাকি ১৬ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হচ্ছে। সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
জাহাংগীর আলম বলেন, “৮৭ উপজেলায় ৭ হাজার ৪৫০টি ভোটকেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। মোবাইলে নেটওয়ার্কে সমস্যা থাকায় কত শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে তার প্রকৃত তথ্য আমরা নির্ধারণ করতে পারছি না। আমরা ম্যানুয়ালি তথ্য সংগ্রহ করছি। মোট ভোটকেন্দ্রের অর্ধেক কেন্দ্রের তথ্য এসেছে, সেটা শতকরা ২০ ভাগের নিচে।”
তিনি বলেন, “দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোথাও ১৬ শতাংশ, আবার কোথাও ২০ শতাংশের নিচে ভোট কাস্ট হয়েছে।
“উত্তরবঙ্গে ভোটার উপস্থিতি ভালো আছে, দক্ষিণবঙ্গে ভোটার উপস্থিতি কম। আশা করি ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।”
আ্যাপসের মাধ্যমে কেন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যে সিস্টেমে বার্তা আসত, সেই সিস্টেম নিয়ে বিটিআরসির আপত্তি আছে। তাই পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছি না।”
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় গড় ভোট পড়ে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজলায় ভোট পড়ার হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে দাড়াঁয় ৩৭ দশমিক ৫৭ শতাংশে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২২ উপজেলায় ভোট স্থগিত করে ইসি।
তৃতীয় ধাপের ভোটে তিন পদে (চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান) ১ হাজার ১৫২ জন প্রার্থী আছেন ভোটের লড়াইয়ে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনও বর্জন করছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন জমিয়ে তোলার লক্ষ্যে দলীয় প্রতীক কাউকে না দিয়ে ভোট উন্মুক্ত করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এর আগে দুই ধাপ মিলিয়ে ২৯৫ উপজেলায় ভোট সম্পন্ন করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় ধাপসহ সংখ্যাটি দাঁড়াচ্ছে ৩৮২-তে। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে।
সবশেষ ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ভোট পড়ে ৪১ শতাংশের বেশি। এর আগে ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়ে ৬১ শতাংশ। ২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়েছিল।