দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো সতর্কতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেস উইংয়ে বার্তা, সেটি ঘটেছিল সোমবার পরিকল্পনা কমিশনে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো জানাতে কমিশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
দেশের চলমান বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে জমা পড়া আবেদনপত্রের প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো শিক্ষক-তিনশ চারশ পাঁচশ শিক্ষক, সবাই কেন ভিসি হতে চায় আমি বুঝি না। আমি তো কখনও ভিসি হতে চাইনি।
“শত শত ভিসি হতে চান, প্রো-ভিসি হতে চান। ইনারা পড়াতে চান না কেন—বুঝতে পারছি না।”
এই সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য প্রকাশের পর তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে গণমাধ্যম, সবখানেই শুরু হয় আলোচনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাসে পড়ানোর চেয়ে এসব পদে যেতে আগ্রহী, উপদেষ্টার এমন বক্তব্য প্রকাশের পরই প্রেস উইং থেকে আসে গণমাধ্যমের জন্য বার্তা। যেখানে সতর্কতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তার ব্যস্ততা ও শারীরিক ক্লান্তির কথা বোঝাতে বলেছিলেন, তার কাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ভিসি, প্রোভিসি হওয়ার আবেদন আছে। যা তিনি এখনো যাচাই-বাছাই শেষ করতে পারেননি।
সবাই ক্লাসে পড়ানোর চেয়ে ভিসি ও প্রো-ভিসির মতো পদে যেতে আগ্রহী বলে যে বক্তব্য তিনি দিয়েছিলেন, তা ‘মজার ছলে’ দেওয়া বলেও উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, “তিনি (ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ) মজার ছলে বলেছিলেন, সবাই ক্লাসে পড়ানোর চাইতে এসব পদে যেতেই আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের প্রতি সত্যিকার অর্থে তার এ ধরনের মন্তব্য করার প্রশ্নই ওঠে না।
“তার হালকাভাবে বলা কথাকে পুরো শিক্ষক সমাজের প্রতি বিরূপ বক্তব্য হিসেবে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম সংবাদের শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করেছে, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আমরা সকল সংবাদমাধ্যমকে সতর্কতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানাই।”
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভিসি ও প্রো-ভিসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাধারণত দলীয় বিবেচনাতেই বিশ্ববিদ্যালগুলোর শীর্ষ পদে নিয়োগ হতো।
শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হচ্ছে। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অর্জিত অভিজ্ঞতা তিনি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছিলেন।