Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

গাজা-লেবাননে হামলা চলবে, জাতিসংঘে নেতানিয়াহু 

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
[publishpress_authors_box]

বিজয় পুরোপুরি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে আক্রমণ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেছেন, হামাস অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করলে এবং সব জিম্মিকে মুক্তি দিলে যুদ্ধ এখনই বন্ধ হতে পারে। তারা তা না করলে পূর্ণ বিজয়ের আগ পর্যন্ত লড়ে যাবে ইসরায়েল। এর কোনও বিকল্প নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এভাবেই হুঁশিয়ারি দেন।                       

আল জাজিরা জানিয়েছে, নেতানিয়াহু যখন অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার উদ্দেশে মঞ্চের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন, সেসময় বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি গ্যালারি থেকে বের হয়ে যান। তার সমর্থকদের অবশ্য এসময় উল্লাসধ্বনি দিতে দেখা যায়।          

ভাষণের শুরুতে নেতানিয়াহু বলেন, “আমি এবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে চাইনি। কারণ আমার দেশ তার অস্তিত্বের জন্য এ মুহূর্তে যুদ্ধ করছে।

“কিন্তু যখন দেখলাম অনেক বক্তা আমার দেশকে নিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন, অপবাদ দিচ্ছেন, তখন আমি কিছু কথা বলার সিদ্ধান্ত নিলাম।”   

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজায় সর্বাত্মক আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ৪২ হাজার মানুষ হত্যা করেছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় আহত হয়েছে প্রায় এক লাখের কাছাকাছি মানুষ। এ তথ্য ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

তারা বলছে, নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। এর মধ্যে প্রায় ১৩শ’ শিশুর বয়স দুই বছরের নিচে।

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস হামলা চালালে তার প্রতিক্রিয়ায় সেদিনই হামাসশাসিত গাজায় আক্রমণের নির্দেশ দেয় নেতানিয়াহু সরকার। হামাসের হামলায় সেদিন ১ হাজার ১৩৯ জন প্রাণ হারিয়েছিল।

লেবাননের বৈরুতে শুক্রবার রাত থেকে চলছে ইসরায়েলের হামলা।

গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর এবারই প্রথম বিশ্বমঞ্চে হাজির হলেন নেতানিয়াহু।

গাজায় আক্রমণ অব্যাহত রাখার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়ে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি বলেন, “যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনে হামাসের কোনও ভূমিকা থাকা উচিত নয়। হামাসের হাতেই যদি গাজার ক্ষমতা থাকে, তাহলে তারা পুনরায় সংঘটিত হবে এবং ইসরায়েলের ওপর বারবার আক্রমণ করবে। তাই হামাসকে যেতে হবে।

“যুদ্ধ এখনই বন্ধ হতে পারে। তবে তার জন্য হামাসকে আত্মসমর্পণ করতে হবে, অস্ত্রসহ। আর গাজায় আটকে রাখা জিম্মিদের তাদের ছেড়ে দিতে হবে। নয়তো গাজায় হামলা চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা বিজয়ী হই। এর বাইরে আর কোনও পথ খোলা নেই।”  

এদিকে, গাজা যুদ্ধে হামাসের পক্ষ নেওয়া লেবাননের আধাসামরিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে দেশটিতে হামলার মাত্রা আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল।

গত সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত ইহুদি রাষ্ট্রটির হামলায় প্রায় ৮০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে লেবাননের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

লেবাননজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগার থেকে শুরু করে সামরিক ঘাঁটি ও তাদের নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে বলা হলেও ইসরায়েলের উপর্যুপরি বোমা হামলায় মৃত্যুবরণ করছে নারী-শিশুসহ বেসামরিক লেবানিজ।

এর মধ্যে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে শুক্রবার রাত থেকে ব্যাপক মাত্রায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।

বৈরুতের যেসব এলাকায় হামলা করা হচ্ছে, ধারণা করা হচ্ছে, সেসব এলাকায় ভূগর্ভস্থ সদর দপ্তরে নাসরুল্লাহসহ হিজবুল্লাহর শীর্ষ কর্মকর্তারা অবস্থান করছিলেন।

বৈরুতে শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় নাসরুল্লাহ বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, এ খবর জানতে ব্যস্ত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেনি হিজবুল্লাহ।

ইসরায়েল দাবি করেছে, বৈরুতে হামলায় হিজবুল্লাহর অন্তত দুজন কমান্ডার নিহত হয়েছে।                 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত