Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

নাফের ওপারে যুদ্ধবিমানের চক্কর, রাতভর বিস্ফোরণে টেকনাফে আতঙ্ক

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর ওপারেই মিয়ানমার। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর ওপারেই মিয়ানমার। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। কক্সবাজারে শনিবার রাতভর নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমার থেকে ভেসে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। এতে আতঙ্কে নির্ঘূম রাত কেটেছে টেকনাফবাসীর।

টেকনাফের হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, টেকনাফ সদরের ইউপির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ও সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নুর হোসেন জানিয়েছেন, নাফ নদীর ওপার থেকে টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে থেমে থেমে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

তারা জানান, শনিবার রাত ৮টা থেকে রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত মংডু শহরের উত্তর ও দক্ষিণে এবং আশেপাশের এলাকায় যুদ্ধ বিমান চক্কর দিতে দেখা গেছে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এসব বোমার বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফের হ্নীলা, পৌরসভা, টেকনাফ সদর ও সাবরাং ইউনিয়ন শাহপরীর দ্বীপের বসতবাড়ি কেঁপে উঠেছে। এসব এলাকার মানুষজনের নির্ঘুম রাত কেটেছে।

মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাত ঘিরে প্রায় ৯ মাস ধরেই সীমান্তবর্তী টেকনাফের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে জানিয়ে এই তিন চেয়ারম্যান বলেন, শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপের বিষয়টি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এমন টানা বিস্ফোরণের শব্দ এর আগে শোনা যায়নি। আর বিস্ফোরণের শব্দের ব্যাপকতা ছিল আগের তুলনায় অনেক বেশি।

হ্নীলার দমদমিয়া এলাকায় বাসিন্দা আমানুল্লাহ ও সাবরাং লেজিরপাড়ার আব্দুল হামিদ বলেন, দীর্ঘ নয় মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যুদ্ধ চললেও গতরাতের  মতো বোমা নিক্ষেপ এর ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপের কারণে টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারী মানুষকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে।

তারা বলেন, বোমার আঘাতে এপারের মানুষের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠেছে। সারারাত বোমা ও বিমানের বিকট শব্দে এপারে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সীমান্ত এলাকার মানুষ জানিয়েছে, টেকনাফ উপজেলার পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপসহ নাফ নদীর মোহনা সীমান্ত থেকে ভেসে আসে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ।

টেকনাফ নাইট্যংপাড়া বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে রাতভর একের পর এক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। মনে হচ্ছে মর্টারশেল বোমার আওয়াজ।

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. ইসমাইল রবিবার ভোরে জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ৫-১০ মিনিট পরপর মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে আমরা এখনও না ঘুমিয়ে বসে আছি। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আজকে সারারাত থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে। শনিবার রাত ৯টা থেকে বিকট শব্দ শুরু হয়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে বলে সীমান্তের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছে। সারারাত থেমে থেমে বিকট শব্দ শোনা গেছে। আমার বাড়ি থেকেও বিকট শব্দ শোনা গেছে।

এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে নতুন করে কোনও রোহিঙ্গা যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত