বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় তা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র।
শনিবার রাত ১০টার দিকে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্প্রিলওয়ে বা জলকপাট খুলে দেওয়া হবে বলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এক জরুরি বার্তায় জানানো হয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে শুরু করায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই যাচ্ছে। এতে গত ৫ দিনে হ্রদের অন্তত ৯ ফুট পানি বেড়েছে বলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূত্রে জানা গেছে।
বার্তায় জানানো হয়, কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা শনিবার দুপুর ৩টায় ১০৭ দশমিক ৬৬ এমএসএল (মিন সি লেভেল)। তা বিপৎসীমার কাছাকাছি হওয়ায় লেকের উজান ও ভাটি এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণে এদিন রাত ১০টা থেকে স্প্রিলওয়ের ১৬টি গেইট ৬ ইঞ্চি করে উঠিয়ে দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হবে।
শনিবার দুপুর ৩টায় পাঠানো কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহেরের সই করা ওই বার্তায় আরও বলা হয়, বর্তমানে হ্রদের পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পানির লেভেল অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে স্প্রিলওয়ের গেইট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
অবগতি ও পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান, বন্দরের চিফ হাইড্রোগ্রাফার, নৌ-বাহিনীর পতেঙ্গা বিএসএস শহীদ ঈষা খাঁ ঘাঁটি, কাপ্তাইয়ের বিএনএস শহীদ মোয়াজ্জেম ঘাঁটি ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইউএনওকে।
বর্তমানে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে ৩২ হাজার কিউসেক পানি প্রতি সেকেন্ডে কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে।
কাপ্তাই হ্রদে বাঁধ দেওয়া অংশে ১২ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের ১৬টি জলকপাট বা স্লুইসগেইট রয়েছে। এগুলো দিয়ে একসঙ্গে প্রতি সেকেন্ডে ৫ লাখ ২৫ হাজার কিউসেক পানি নির্গমন করতে পারে। হ্রদে ১০৯ এমএসএলের অধিক পানি পূর্ণ হলে জলকপাট দিয়ে পানি নির্গমণ করা হয়।