লিগ টু হচ্ছে ইংল্যান্ডের চতুর্থ স্তরের টুর্নামেন্ট। সেই লিগের দল এক্সেটার সিটিতে ট্রায়াল দিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন ওলি ওয়াটকিনস। পরে সুযোগ পান সেখানে। এক্সেটার আবার এই ফরোয়ার্ডকে ধারে পাঠিয়ে দেয় আরও নিচু স্তরের কনফারেন্স সাউথের (ষষ্ঠ স্তর) ক্লাব ওয়েস্টন সুপার মারেতে।
চতুর্থ আর ষষ্ঠ স্তরের ক্লাবের কোনও ফুটবলারের প্রিমিয়ার লিগ খেলার স্বপ্নই আকাশ কুসুম কল্পনা। সেখানে জাতীয় দলের হয়ে ইউরো সেমিফাইনালের মতো মঞ্চে গোল করে নায়ক হওয়াটা কল্পনাতীত। সেই অকল্পনীয় কাজটাই করেছেন ২৮ বছরের ওয়াটকিনস। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ মিনিটে গোল করে ইংল্যান্ডকে পাইয়ে দিয়েছেন ফাইনালের টিকিট।
এমন কিছু কী স্বপ্নেও ভেবেছিলেন? ম্যাচ শেষে সত্যিটা স্বীকার করে নিলেন ইংল্যান্ডের এই নতুন নায়ক, ‘‘সত্যিই আমি এমন কিছুর কল্পনা করিনি। মিথ্যে বলার কারণ নেই। ইংল্যান্ডের হয়ে গোল করাটা অসাধারণ কিছু সেখানে এত বড় একটা টুর্নামেন্টে গোল করার কথা সত্যিই ভাবিনি আমি।’’
গত বিশ্বকাপ বা ইউরোয় ডাক পাননি ওয়াটকিনস। এবারের ইউরোয় তার খেলার সুযোগ হয়েছিল কেবল ২০ মিনিট। তবে তিনি নাকি বুঝতে পেরেছিলেন সেমিফাইনালের দিনটা তার হতে চলেছে। ম্যাচ শেষে জানালেন, ‘‘এটা অবিশ্বাস্য। সপ্তাহের পর সপ্তাহ এই মুহুর্তটার জন্য অপেক্ষা করেছি। এই সুযোগটা কাজে লাগালাম দুই হাত ভরে। কঠোর পরিশ্রম করেছি এজন্য। আমার সন্তানদের নামে শপথ খেয়ে বলছি , কোল পালমরকে বলেছিলাম (বেঞ্চে বসে) আজ আমরা দুজনই খেলব আর ইংল্যান্ডকে জেতাব। সত্যিই পালমারের পাসে গোল করে জেতালাম আমি, এজন্য খুশিটা আরও বেশি।’’
অধিনায়ক হ্যারি কেইন আর ফিল ফোডেনকে ৮০ মিনিটে তুলে নিয়ে কোচ গ্যারেথ সাউথগেট নামিয়েছিলেন ওলি ওয়াটকিনসন ও কোল পালমারকে। সেই পালমারের কাছ থেকে বল পেয়ে ম্যাচর শেষ মিনিটে ওয়াটকিনসের গোলেই টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে ইংল্যান্ড।
২০১৪-১৫ মৌসুমে ষষ্ঠ স্তরের ক্লাব ওয়েস্টন সুপার মারেতে ১০ গোল করেছিলেন ওয়াটকিনস। এরপর যোগ দেন চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব ব্রেন্টফোর্ডে। সেখানে ১৪৩ ম্যাচে ৪৯ গোল করে পরিণত হন চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দামি ফুটবলারে। ২০২০ সালে ২৮ মিলিয়ন পাউন্ডে তাকে কিনেছিল অ্যাস্টন ভিলা। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে ১৯ গোল করে ভিলাকে চ্যাম্পিয়নস লিগে পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম নায়ক এই ওয়াটকিনস।
এবার ইউরোয় অসাধারণ গোল করে ইংল্যান্ডকে নিয়ে গেলেন ফাইনালে। সত্যিই তার উত্থানটা রূপকথাতেও হার মানানো।