ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে মিশরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহি এলদিন আহমেদ ফাহমী সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে গেলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা (গাজায় গণহত্যা) প্রত্যাশিত নয়। আমাদের সবাইকে গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।”
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব কেএম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
যুদ্ধের জন্য অস্ত্র উৎপাদনের অর্থ মানবজাতির, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, বলেন, উপ প্রেস সচিব।
সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা বলেন, “অস্ত্র উৎপাদন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যয় করা অর্থ মানবজাতির কল্যাণে স্থানান্তর হবে অধিকতর কার্যকর।”
যেখানেই গেছেন সেখানেই গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ছিলেন বলেও মিশরের রাষ্ট্রদূতকে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও মিশরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রত্যাশা অনুযায়ী বিকশিত হয়নি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও মিশরের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮০.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (রপ্তানি ৩০.১ মিলিয়ন এবং আমদানি ১৫০.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি, বস্ত্র, ওষুধ, পর্যটন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা উভয় দেশের জন্য লাভজনক হতে পারে।
মিশরের রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, “আপনার মতো নেতা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেও প্রয়োজন।”
ফাহমী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, মিশরের গ্র্যান্ড ইমাম বাংলাদেশ সফর করতে চেয়েছেন। মিশরের সংবিধান অনুযায়ী তার পদমর্যাদা প্রধানমন্ত্রীর পদের সমান।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ তাকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছে।
মিসরের রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে তার দেশের আগ্রহের কথাও ব্যক্ত করেন। অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রশংসনীয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মিশরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার সাদাতের মধ্যকার বন্ধুত্বের কথাও স্মরণ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন। বাসস।