Beta
শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

চলছে তাপ প্রবাহ, প্রশমিত হবে বৃষ্টিতে

ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়ে এই দর্শকদের বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।
ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়ে এই দর্শকদের বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।
[publishpress_authors_box]

গ্রীষ্মের যাই যাই ক্ষণে তাপ প্রবাহ বসাচ্ছে জৈষ্ঠ্যের শেষ কামড়; তার মধ্যে বৃষ্টি দিচ্ছে বর্ষা আগমনের বার্তা। রোদ-বৃষ্টির এমন খেলাই প্রকৃতিতে চলবে আগামী ক’দিন, তেমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশের ঋতু চক্রে এখন গ্রীষ্ম বিদায়ের পালা চলছে, মঙ্গলবার জৈষ্ঠ্যের ২৬ তারিখ। যার মানে গ্রীষ্মকাল আর কয়েকদিন মাত্র।

এই সময়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৯টির ওপর দিয়ে বয়ে চলছে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে নীলফামারী তীব্র আর বাকি ৪৮ জেলায় মৃদু তাপ প্রবাহের কবলে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে জানান, বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা আর চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার মধ্যে নয়টিতে (ফেনী ও ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া বাদে) ‘হিট ওয়েব’ চলছে।

সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরে, ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময়ে সরনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাঙামাটিতে ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় এই সময়ে থার্মোমিটারে পারদ সর্বোচ্চ উঠেছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে।

কোরবানির ঈদের পরপরই এই তাপ প্রবাহে অস্বস্তিতে রয়েছে মানুষ। তাই ‘তাপমাত্রা বুঝে ভালো থাকুন, সুস্থ জীবন কাটুক দারুণ’ স্লোগানে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) কয়েকজন গবেষক একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন। ফেইসবুকে তা লিখে পোস্ট দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা তারিফুর রহমান খান।

সেই পোস্টে বলা হয়েছে, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অতি গরম দিনের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি ও বাড়াতে হবে।”

তারিফুর সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা অনেকেই জানি না যে কোন তাপমাত্রায় আমাদের কী করণীয়। অর্থাৎ কোন তাপমাত্রায় আমরা কী খাব, কী পরব এবং কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলব—এসব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অনেকেরই নেই।”

আইসিডিডিআরবি থার্মোমিটার দেখে বা মোবাইলে প্রতিদিনের তাপমাত্রা জানা শুধু অতিরিক্ত গরমের দিনে নয়—সারা বছর সুস্থ থাকার জন্য জরুরি বলে জানাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বিশেষ করে যদি তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস এর কাছাকাছি বা তার বেশি হয়, অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যার জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা জরুরি।

গ্রীষ্মের শেষে এই তাপ প্রবাহ হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে। তবে তা বেশি দিন থাকছে না।

“আজই বোধহয় শেষ হবে এটা,” বলেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল।

মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর এখন কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কাল (বুধবার) থেকে তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জেলায় কমতে শুরু করবে। কিছু কিছু জেলায় বৃষ্টিও হবে।”

মঙ্গলবার দুপুরের পর ঢাকায় এক পশলা বৃষ্টি ঝরেছে; তাতে জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ফুটবল ম্যাচের দর্শকদের কিছুটা বিপত্তিতে পড়তে হলেও তা আর কাউকে তেমন ভোগায়নি।

বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর কিছু কিছু জায়গায়ও বৃষ্টি হয়েছে। বুধবারও বৃষ্টিহীন থাকবে না কোনও বিভাগ, তাই বলছেন আবহাওয়া্বিদ শাহীনুল।

বৃষ্টি হলেও বজ্রপাতের তীব্রতা তেমন থাকবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে, তাতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত