ভারি বৃষ্টিতে শুক্রবার ঢাকা শহরের পথঘাট তলিয়ে গেলেও শনিবার সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার, রোদও উঠেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলতি সপ্তাহের পুরোটা জুড়ে আকাশ এমনই থাকবে, বৃষ্টি হলেও তীব্রতা থাকবে কম। তবে এরপর থেকে আবার বাড়বে বৃষ্টি।
শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো আবুল কালাম মল্লিক সকাল সন্ধ্যাকে এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি অনেকটাই কমেছে, আগামী ১৮ জুলাই পর্যন্ত আবহাওয়া এমনই থাকবে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হবে। কিন্তু ১৮ জুলাইয়ের পর বৃষ্টি আবার বাড়বে।
এই আবহাওয়াবিদের মতে, বর্ষাকালে বৃষ্টি হবে এটাই স্বাভাবিক। বরং বৃষ্টি না হলেই সেটা অস্বাভাবিকতা।
ঢাকায় এই সপ্তাহজুড়ে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির আভাস দিলেও এই সময়ে সিলেটে প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হবে বলে জানালেন তিনি। আরও জানালেন, ময়মনসিংহ, রংপুর ও চট্টগ্রামেও বৃষ্টি হবে। তবে এসব জায়গায় বৃষ্টির তীব্রতা কম থাকবে, সিলেটে ভারি বৃষ্টি হবে।
এটাকে স্বাভাবিক অবস্থা হিসেবে উল্লেখ করে আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এই সময়ে গড়ে মাসে ২৬ দিন বৃষ্টি হওয়ার কথা। এটা যদি না হয়ে থাকে, সেটা অস্বাভাবিকতা।
তবে এবারে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে ঢাকায় একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড।
শুক্রবার সকাল থেকে টানা ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। কোথাও হাঁটু সমান, আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি জমে যায়। মূল সড়ক ও অলিগলিতে ব্যাপক জলাবদ্ধতার পাশাপাশি দোকানপাটসহ বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে যায়। এতে মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় আছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে, যার কারণে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওইদিনই সকাল ১১টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে দিয়েছিল পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতাও।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে সেটিকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটার বা এর বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।