অপেক্ষার পালা শেষে সোমবার ঢাকা ও আশেপাশের কয়েকটি জেলায় দেখা গিয়েছে সূর্যের মুখ। ফলে এসব অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। কমে আসতে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সোমবার সকাল থেকে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল, ভোলা, সীতাকুণ্ড, হাতিয়া ও সিলেটসহ কিছু অঞ্চলে সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। এরপর এসব এলাকার কুয়াশা কেটে দুপুরের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ে।
সোমবার রাতের তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। প্রাপ্ত তথ্যে আরও দেখা যায়, সোমবার ঢাকার তাপমাত্রা ১৪ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে।
ঢাকার বাইরে এখনও তীব্র শীত
তবে ঢাকার বাইরে এখনও শীতের প্রকোপ তীব্র। সোমবার প্রান্তিক পর্যায়ে বিশেষ করে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশালে শীতের তীব্রতা বেশি ছিল। এদিন বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোলাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাছাড়া গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, দিনাজপুরে তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে। এসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়ার হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়, গত ১১ জানুয়ারি থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। ১১ জানুয়ারি রাত ৯টা থেকে পরের দিন বিকাল পর্যন্ত দেশ ছিল কুয়াশায় মোড়া। বিশেষ করে নদী অববাহিকায় কুয়াশা ছিল খুবই ঘন। এসময় অনেক বেশি শীত অনুভূত হয়।
জানুয়ারির ১ তারিখ থেকেই দেশের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। এরপর থেকে রাতের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।
বৃষ্টির সম্ভাবনা ১৭ জানুয়ারি থেকে
চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ওই কয়েকদিন শীত একটু কম অনুভূত হতে পারে।
সোমবার এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, কোনও ক্ষেত্রে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কুয়াশা কেটে যাওয়ায় ওই সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে খুলনা, বরিশালসহ কয়েক জেলার বাতাসে জলীয় বাষ্পের জোগান বাড়বে। জলীয় বাষ্প তাপমাত্রা কিছুটা আটকে রাখার কারণে ১৬, ১৭ এবং ১৮ জানুয়ারি দিন ও রাতের তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখি থাকবে।
বৃষ্টির পর আবার শৈত্যপ্রবাহ
জানুয়ারির বাকি দিনগুলোতে শীতের তীব্রতা খুব একটা কমবে না বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। ২০ জানুয়ারির পর আকাশ কিছুটা মেঘমুক্ত হতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়। ফলে আবার কোথাও কোথাও রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। শুরু হতে পারে মৃদু শৈত্যপ্রবাহও। সেসময় তাপমাত্রা নামতে পারে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।
জানুয়ারির পাশাপাশি ফেব্রুয়ারিতেও শীতের তীব্রতা থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।
আবহাওয়াবিদরা যা বলছেন
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ঢাকা একটি হিট এরিয়া হিসেবে কাজ করে। রাতে ডিজেলচালিত ট্রাক চলাচল করে। আশেপাশের অনেক এলাকায় ইটের ভাটা থাকায় বায়ুদূষণ তাপমাত্রা ধরে রাখে। এ কারণে এই এলাকার তাপমাত্রা একটু বেশি অনুভূত হয়।”
জানুয়ারি একটি শীতলতম মাস। এই মাসে বেশি সময় ধরে কুয়াশা পড়লে দিনের তাপমাত্রা কমে যাবে। রাতের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে বলেও জানান তিনি।
এল নিনো এখনও সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে এবার শীতের সময়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা (১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে একটু বেশি থাকবে।