উইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু ৮ ডিসেম্বর থেকে। চলতি টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষ হবে ৪ ডিসেম্বর। স্বাভাবিক ভাবে ১ তারিখের আগেই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করার কথা বিসিবির। কিন্তু ব্যাটারই তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! তাই দল সাজাতেই গলদঘর্ম নির্বাচকরা।
মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্তর পর তাওহিদ হৃদয়ও ইনজুরিতে পড়েছেন। মুশফিকের ইনজুরি আঙ্গুলে আর শান্ত-হৃদয়ের কুঁচকিতে। বাংলাদেশ টপঅর্ডারের তিন নিশ্চিত ব্যাটারকে নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে এখন ব্যাটিং লাইন সাজানো কঠিন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের।
শুরুতে উইন্ডিজ সফরের সাদা বলে খেলার কথা ছিল মুশফিকের। পরে জানা যায় পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। শান্ত আফগানিস্তান সিরিজে যে ইনজুরিতে পড়েছিলেন তা থেকে এখনও সেরে উঠতে পারেননি। সাদা বলে বাংলাদেশ অধিনায়কও অনিশ্চিত। এবার অনিশ্চয়তার তালিকায় হৃদয়।
উইন্ডিজ সফরের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের দল গোছাতে এই তিন ব্যাটারের বদলী না পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেন নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক। সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন, “হ্যা, সেটা খুঁজে বের করা মুশকিল আসলে। যদি ওই জায়গাটাতে সঠিক বদলী চিন্তা করেন তাহলে আমাদের কাছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো তৈরি ক্রিকেটার (ব্যাটার) নেই আসলে। এটা সত্যি, মেনে নিচ্ছি।”
তাহলে উপায়? রাজ্জাক বলেছেন, “এখন একটা দলে কম্বিনেশন তৈরি করতে গেলে দুই তিন রকমে করা যায়। সেভাবে আমাদের এখন চিন্তা করতে হবে আরকি, অন্য কোন ভাবে পরিবর্তন করে।”
আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিডলঅর্ডারে ব্যাট করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তাকেই হয়তো ইনিংস গোছানোর গুরু দায়িত্ব নিতে হবে। আবার পাঁচ নম্বরে খেলা হৃদয় ফিট না হলে মাহমুদউল্লাহকে ব্যাটিং অর্ডারে এগিয়ে আনা হবে। অপর বিপল্প একজন ওপেনারকে তিন বা চার নম্বরে খেলানো। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সৌম্য সরকারকে খেলানো হয়ছিল মিডলঅর্ডারে।
জাতীয় দলের পাইপলাইনে যথেষ্ট ব্যাটার না থাকায় এ বিকল্প ভাবতে হচ্ছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে। রাজ্জাক বলেছেন, “এটা হয়। দলের সুবিধার্থে যখন প্রয়োজন হয় খেলা লাগে (ওপেনারকে মিডলঅর্ডারে)। কিছু করার নেই। অনেক সময় চেঞ্জ করে খেলা হয়। আমাদের কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার মতো অনেক ক্রিকেটার নেই। সেই লিমিটেশনস কিন্তু আছে।”
বিকল্প যে একেবারেই নেই এমন নয়। জাতীয় দলে নিকটঅতীতে খেলেছেন এমন ক্রিকেটাররা প্রস্তুত আছেন। আফিফ হোসেন বাংলাদেশ “এ” দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে মিডলঅর্ডারে খেলেছেন। অবশ্য সফল হননি।
শামীম হোসেন পাটওয়ারী দলে ফিরলে মাহমুদউল্লাহর জায়গায় খেলতে পারেন। আবার একই অবস্থানে জাকের আলি ও রিশাদ খেলতে পারেন। সেক্ষেত্রে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেতে পারেন।
তবে আফিফ বা শামীমকে দলে নেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি আবদুর রাজ্জাক। তবে ভাগ্যের কাছে যে বাংলাদেশ দল অসহায় তা স্পষ্ট রাজ্জাকের কন্ঠে, “আফগানিস্তান সিরিজে তিনজন ক্রিকেটার একই সঙ্গে ইনজুরিতে পড়ল। আমাদের যে লিমিটেশন সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার মতো এতজনের ব্যাকআপ রাখা কি সম্ভব! এমন হলে তো একটু কঠিনই।”
হাতে গোনা কয়জন ছাড়া জাতীয় দলের টপঅর্ডারে খেলার মতো ব্যাটার আসলেই তৈরি নেই। যুব বিশ্বকাপ খেলা রিজওয়ান, আরিফুল বা জাতীয় লিগে ভালো করা অমিত হাসানরা এখনও আন্তর্জাতিকের জন্য প্রস্তুত নন। আফিফ-শামীমদের জায়গা করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। উইন্ডিজ সিরিজের দল দিতে গড়তে ভালো বেগ পেতে হচ্ছে নির্বাচকদের।