Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

যা বলছে, বলতে দিন : শেখ হাসিনা

চীন সফরের পাশাপাশি সাংবাদিকদের অন্যান্য প্রশ্নেরও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : পিআইডি
চীন সফরের পাশাপাশি সাংবাদিকদের অন্যান্য প্রশ্নেরও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : পিআইডি
[publishpress_authors_box]

কে কী বলল তাতে কান দেন না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যে যা বলছে, বলতে দিন।

চীন সফর নিয়ে রবিবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আমি ফিরে আসি। এর আগেও এসেছি এমন। অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু আমি গুরুত্ব দেইনি।

“৮১ সালে দেশে আসার পর থেকে গুজব ছড়াচ্ছে। যা বলছে, বলতে দিন, কিচ্ছু আসে যায় না। কে কী বলল তাতে আমি কান দেই না। আমি এতে অভ্যস্ত। যা বলছে, বলতে দিন।”

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এরপর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা, তার আগে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে গত সোমবার দেশটি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার দিনের চীন সফর শেষে গত বৃহস্পতিবার তার দেশে ফেরার কথা থাকলেও তিনি একদিন আগেই ফেরেন।

প্রধানমন্ত্রীর সফর সংক্ষিপ্ত হওয়ার পেছনে ‘চীন থেকে কিছু না পাওয়ার’ খবর ছড়ায়।

এ প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা এভাবেই বিশ্বাস করি। এশীয় দেশ হিসেবে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব রয়েছে। আমার এ সফরে ২১টি সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি করা হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সুদমুক্ত, বাণিজ্যিক অনুদান ও রেয়াতি ঋণ- এই চার ধরনের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। আর এই চারটি প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে চীন দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমার এই সফর বাংলাদেশের কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”

চীনের সঙ্গে চুক্তির পূর্ণ তালিকা সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পূর্ণ তালিকা দেওয়া আছে। ২১টি নামও আছে। আপনারা চাইলে পড়তে পারি। না অনেক সময় অনেকে বলেন। কিছুই হয়নি। কিছুই না পেয়ে খালি হাতে ফিরে আসছি। ওরা তে বলবেই। তারা আবার মনে কষ্ট পেতে পারে।”

এ পর্যায়ে সফর সংক্ষিপ্ত করার বিষয়ে এক সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি জানি না, যারা একথাগুলো বলে বেড়াচ্ছেন তারা কি জেনে-বুঝে বলছেন? নাকি আমাকে হেয় করার জন্য বলছেন, সেটাই প্রশ্ন?”

‘মানসিকভাবে অসুস্থ একটি গোষ্ঠী’ তার ভারত ও চীন সফর নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। তার আগে ভারত গেলাম, সেখানে বলা হয়েছিল ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে এসেছি। চীনে গেলাম, বলে কিছুই দেয়নি। এগুলো বলেই আসছে।

“ভারতের কাছে দেশবেচা, চুক্তি বাতিল করতে হবে। এটা এক ধরনের লোকের মানসিক অসুস্থতা বলে মনে করি। মানসিক অসুস্থতা ছাড়া বানোয়াট কথা কেউ বলতে পারে না। তাদের জন্য করুণাই হয় আমার। তাদের নিয়ে কিছু বলার নাই।”

ভারতবিরোধীরাই কেন ভারতের গণমাধ্যমের করা প্রতিবেদনের কথা বলছেন- সে প্রশ্নও এসময় রাখেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “ভারতের গণমাধ্যমের কথা শুনে, আমাদের এখানে যারা বলছেন, তারাই তো আবার ভারতবিরোধী কথা বলে। এখন তারা ভারতের পত্রিকা দেখে আবার কথা বলছে।”

চীন সফর সংক্ষিপ্ত করার কারণ প্রসঙ্গে মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের অসুস্থতা ও সফরের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমার সাথে আমার মেয়েরও যাওয়ার কথা ছিল ওখানকার স্বাস্থ্য বিভাগের আমন্ত্রণে। কিন্তু মেয়েটার জ্বর, আমি তো একটা মা। কিন্তু ছয় ঘণ্টার মধ্যেই এত বড় তোলপাড় হয়ে যাবে, এটা তো বুঝতে পারিনি।

“অনেক দেশেই তো অফিসিয়াল কাজ শেষ হয়ে যায়, আমার তো শপিংয়েও যাওয়ার নাই, দেখারও কিছু নাই।”

বহু দেশে এমন হয়েছে, সব অনুষ্ঠান শেষ হওয়ায় আগেভাগে দেশে চলে এসেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এত রংচং মেলায়ে এত কথা বলা, যারা এগুলো বলে, যারা ভারতবিরোধী কথা বলে, তো তারা ভারতের পত্রিকা দেখে এখন কথা বলছে কেন?

সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত