ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরে তার নতুন প্রশাসন রূপ নিতে শুরু করেছে। হোয়াইট হাউসের কর্মীবাহিনী এবং সরকারের মূল দপ্তর বা মন্ত্রণালয়গুলোতে তিনি ইতোমধ্যে প্রায় এক ডজন নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন।
এই নিয়োগগুলো থেকে ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন কেমন হতে পারে তার একটা ইঙ্গিত মিলছে। যদিও এখনও অনেক নিয়োগ বাকি।
এ ছাড়া ট্রাম্প গণমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়াতে যেসব মন্তব্য করেছেন, তা থেকেও অভিবাসন ও পররাষ্ট্রনীতিসহ জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার অগ্রাধিকারগুলো কী হবে সে সম্পর্কেও একটি ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শুরুটা ছিল বিশৃঙ্খল। তাই ট্রাম্প এবার আরও স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত পরিকল্পনাসহ তার পরবর্তী প্রশাসনের ভিত্তি স্থাপন করছেন।
এবার তিনি তার নীতিগত লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং যত্ন সহকারে কর্মী বাছাই করার দিকে মনোনিবেশ করেছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কর্মীবাহিনীর ভার এবং মাঝপথে নীতিগত দিকনির্দেশনায় পরিবর্তন অস্থিরতার দিকে নিয়ে গিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এবার তিনি একটি পরিষ্কার ভিশন নির্ধারণ এবং আরও কাঠামোবদ্ধভাবে দল গঠন করছেন বলে মনে হচ্ছে।
তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য একটি বাধাহীন এবং স্থিতিশীল প্রশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রাম্প অগ্রিম এই ভিত্তি স্থাপন করছেন, যাতে তিনি দায়িত্বগ্রহণের পর তার নীতিগুলো আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন।
অভিবাসন দপ্তরে কঠোর টিম
ট্রাম্পের সদ্য প্রকাশিত কিছু নিয়োগ থেকে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী লাখ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসীকে নির্বাসনে পাঠানোর ব্যাপারে তিনি নির্বাচনের আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা অতিরঞ্জিত নয়।
২০১৫ সাল থেকে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা এবং বক্তৃতার লেখক স্টিফেন মিলার হোয়াইট হাউসের নীতি বিষয়ক ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হচ্ছেন। তিনি সম্ভবত গণ নির্বাসনের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করবেন এবং অনথিভুক্ত ও আইনি অভিবাসন উভয়ই ফিরিয়ে দেবেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মিলার প্রশাসনের কঠোরতম কিছু অভিবাসন নীতি তৈরিতেও জড়িত ছিলেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টমাস হোম্যান যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আটক অনথিভুক্ত অভিবাসী পরিবারের সদস্যদেরকে পরস্পর থেকে আলাদা করার নীতিকে সমর্থন করেছিলেন। এবার তিনি ট্রাম্পের ‘অভিবাসন জার’ হিসাবে আরও বিস্তৃত কর্তৃত্ব নিয়ে ফিরে আসছেন।
জুলাই মাসে এক রক্ষণশীল সম্মেলনে হোমান বলেন, “এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে বড় নির্বাসন বাহিনী আমি চালাব।”
সমালোচকরা সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের গণ নির্বাসন পরিকল্পনায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় হতে পারে। তবে গত সপ্তাহে এনবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, খরচ কোনও সমস্যা নয়।
ট্রাম্প বলেন, “মাদক মাফিয়ারা তাদের নিজেদের এবং আমাদের দেশেও মানুষকে হত্যা ও খুন করেছে, উভয় দেশকে ধ্বংস করেছে। তাই তাদেরকে নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। এটি একটি অমূল্য কাজ।”
চীনবিরোধীরা বড় পদে
অনেক রক্ষণশীল বিশ্বাস করেন, চীন অর্থনৈতিক এবং সামরিক উভয় দিক থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। যদিও ট্রাম্প আরও সতর্কতা অবলম্বন করেছেন এবং চীনের বিরুদ্ধে তার বেশিরভাগ সমালোচনাকে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। তথাপি, তিনি তার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক টিমে চীনের কড়া সমালোচকদের নিয়োগ দিয়েছেন।
একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্নেল ও ফ্লোরিডা কংগ্রেসম্যান মাইক ওয়াল্টজকে ট্রাম্প তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে বেছে নিয়েছেন। এটি হোয়াইট হাউসের একটি গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতির পদ।
ওয়াল্টজ বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে একটি ‘স্নায়ু যুদ্ধে’ রয়েছে। ২০২২ সালের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিক যুক্তরাষ্ট্রকে বয়কট করার আহ্বান জানানো কংগ্রেসের প্রথম সদস্যদেরও একজন তিনি।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত হিসাবে ট্রাম্পের বাছাই করা কংগ্রেসওম্যান এলিস স্টেফানিক অক্টোবরে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ‘নির্লজ্জ ও দূষিত হস্তক্ষেপ’ করার অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, চীন সমর্থিত হ্যাকাররা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোন থেকে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছিল।
ট্রাম্প এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদের জন্য তার পছন্দের নাম ঘোষণা করেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ফ্লোরিডার সেনেটর মার্কো রুবিওকে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিতে পারেন। তিনিও কড়া চীন সমালোচক।
২০২০ সালে রুবিও হংকং-এ গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর ক্র্যাকডাউনের জন্য দেশটির সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে চীন সরকারও তার ওপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেয়।
বাণিজ্য বিরোধ এবং কোভিড মহামারির মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। বাইডেন প্রশাসনও চীনের ওপর আরোপ করা ট্রাম্পের অনেক শুল্ক বহাল রেখেছিল এবং কিছু নতুন শুল্কও আরোপ করেছিল। তবে বাইডেন কূটনীতির মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত করেছিলেন। নতুন ট্রাম্প প্রশাসন ফের চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করতে পারে।
ইলন মাস্কের নতুন ভূমিকা
ট্রাম্পের রাজনৈতিক নিয়োগের বিশাল তালিকার পাশাপাশি আরেকটি ছোট তালিকা আছে, যে তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা অত্যন্ত প্রভাবশালী।
নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ট্রাম্পের ‘মার-এ-লাগো’ ট্রানজিশন হেডকোয়ার্টারে অবস্থান করছেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, তিনি নতুন মন্ত্রিসভার মনোনীতদের বিষয়ে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি গত সপ্তাহে ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি কথোপকথনেও যোগ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি ইলন মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বাড়ানোর দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন।
এজন্য মাস্কের নেতৃত্বে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ বা সরকারি দক্ষতা দপ্তর নামে একটি নতুন বিভাগ খোলা হবে ট্রাম্প প্রশাসনে। এটি এমন একটি দপ্তর হবে যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে কাজ করবে।
দপ্তরটির পরিচালনায় মাস্কের সহযোগী হিসাবে থাকবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতের একজন উদ্যোক্তা, অধিকারকর্মী ও বিনিয়োগকারী।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। তবে প্রাথমিক বাছাইয়ে হেরে ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ান বিবেক। এতে তিনি ট্রাম্পের পছন্দের তালিকায় চলে আসেন।
ট্রাম্প বলেন, মাস্কের নেতৃত্বে সৃষ্ট নতুন বিভাগটি হোয়াইট হাউস এবং অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের সঙ্গে কাজ করবে। এর কাজ হবে সরকারি খরচ কমানোর জন্য ‘বড় আকারের কাঠামোগত সংস্কার চালানো এবং উদ্যোক্তা অ্যাপ্রোচ তৈরি করা’, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
অক্টোবরে ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ট্রাম্পের এক সমাবেশে মাস্ক বলেছিলেন, ফেডারেল বাজেট কমপক্ষে ২ ট্রিলিয়ন ডলার কমানো সম্ভব।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্কের উদ্দেশ্য মূলত তার নিজের কোম্পানিগুলোর ওপর সরকারি নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ কমানো।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে প্রগতিশীল ভোক্তা অধিকার এনজিও ‘পাবলিক সিটিজেন’। সংস্থাটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের বেশ কয়েকটি নীতিকেও চ্যালেঞ্জ করেছিল।
পাবলিক সিটিজেন-এর কো-প্রেসিডেন্ট লিসা গিলবার্ট এক বিবৃতিতে বলেন, “ইলন মাস্ক সরকারি দক্ষতা এবং নিয়মনীতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিতভাবে যেসব সরকারি নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন করে চলেছে, সেগুলোর ওপরই মাস্ক এবার আরও খড়গহস্ত হবেন। এটি একটি চূড়ান্ত করপোরেট দুর্নীতি।”
নির্বাচনের আগে ইলন মাস্ক ট্রাম্পকে যে সহায়তা দিয়েছিলন এটা তারই পুরস্কার। ট্রাম্পের নির্বাচনী তহবিলে কোটি কোটি ডলার দান করার পাশাপাশি তার পক্ষে সরাসরি নির্বাচনীয় প্রচারণায়ও নেমেছিলেন ইলন মাস্ক।
মাস্ক নিয়মিতভাবে তার সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে তার রাজনৈতিক মতামত প্রদান করছেন। তিনি ফ্লোরিডার সেনেটর রিক স্কটের পরবর্তী সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা হওয়ার প্রতিও সমর্থন দিয়েছেন।
ট্রাম্পের এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে এবং আসন্ন কংগ্রেস নির্বাচনেও রিপাবলিকানদের অর্থসহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাস্ক।
এদিকে আরেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে ট্রাম্প কোথায় নিয়োগ করেন তা এখনো দেখার বাকি, যিনি ট্রাম্পের মতোই ভ্যাকসিনবিরোধী এবং বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করেন।
পেশায় পরিবেশবাদী আইনজীবী রবার্ট এবার প্রথমে ডেমোক্র্যাট পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করেছিলেন। তবে তার পরিবারও তাকে সমর্থন না করে বরং বাইডেনকে সমর্থন দেয়।
পরে রবার্ট স্বতন্ত্রভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন, কিন্তু একাধিক বিতর্কের মধ্যে আকর্ষণ অর্জন করতে ব্যর্থ হয়ে দৌড় থেকে বাদ পড়েন এবং পরে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন জানান।
২০২৪ সালের নির্বাচন চক্রের শেষ দুই মাসে তিনি ‘মেইক আমেরিকা হেলদি এগেইন’ নামে ট্রাম্প প্রচারাভিযানের একটি উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন।
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে রবার্ট কেনেডি স্বাস্থ্যখাতে নীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এবং ফুড অ্যান্ড ড্রাগ সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এর মতো জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত বড় কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি কেনেডিকে স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং ওষুধের বিষয়ে ‘গো ওয়াইল্ড’ তথা তার নিজের ইচ্ছামতো নীতি গ্রহণের ক্ষমতা দেবেন।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী বিজয় ভাষণেও বলেছিলেন, “তিনি (রবার্ট এফ কেনেডি) কিছু জিনিস করতে চান, এবং আমরা তাকে এটি করতে দেব।”
পার্লামেন্টের ওপর প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া
রিপাবলিকানরা এবার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিনি আইনসভার সঙ্গে কাজ করার চেয়ে বরং তার প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বেশি প্রয়োগ করতে চান।
গত সপ্তাহে তিনি সোশাল মিডিয়ায় ইঙ্গিত দেন, সেনেটের অনুমোদন ছাড়াই তিনি কিছু পদে নিয়োগ দেবেন এবং সেনেটরদেরকেও তা মেনে নিতে হবে। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন পদে সরাসরি প্রেসিডেন্টের আদেশবলেও নিয়োগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এটাকে ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের প্রকাশ হিসাবেই দেখা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক নিয়োগে ‘পরামর্শ এবং সম্মতি’ দেওয়ার ক্ষেত্রে চেম্বারের সাংবিধানিক ভূমিকাকে কমিয়ে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে।
অনুগতদের পুরস্কৃত করা
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প প্রায় ৪ হাজার রাজনৈতিক নিয়োগ দিতে পারবেন। আমলাতন্ত্রের অনেক সিনিয়র পদেও তিনি তার পছন্দের লোকদের বসাতে পারবেন।
২০১৬ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ায় ট্রাম্পকে তার প্রতি অনুগত নয় এমন অনেককেও প্রশাসনে রাখতে হয়েছে। কিন্তু এবার আর ট্রাম্পকে তা করতে হবে না। এবার ট্রাম্প তার প্রতি সম্পূর্ণ অনুগতদেরই নিয়োগ দিতে পারবেন।
মঙ্গলবার ট্রাম্প দক্ষিণ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ফক্স নিউজের হোস্ট ও রক্ষণশীল লেখক পিট হেগসেথকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করেছেন। দুজনেই শুরু থেকেই ট্রাম্পের কট্টর সমর্থক।
রুবিও ও স্টেফানিকের মতো কয়েকজন ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার সমালোচনা করলেও পরে তারা কয়েক বছর ধরে দেখিয়েছেন যে তাদের কঠোর কথাগুলো অতীতের ব্যাপার।
রুবিও ২০১৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন এবং এখনও তার মধ্যে হোয়াইট হাউসের উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে।
প্রাথমকিভাবে ট্রাম্প যাদের নিয়োগ দিয়েছেন তাদের যোগ্যতার মাপকাঠি ছিল মূলত তার প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য। তবে পুরো প্রশাসনের নিয়োগ শেষেই বোঝা যাবে প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার দ্বিতীয় মেয়াদ প্রথম মেয়াদের তুলনায় কতটা আলাদা হতে যাচ্ছে।