Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন? কী কী জানতে হবে

SS-tax-return-101124
[publishpress_authors_box]

রাষ্ট্রের পরিচালন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ প্রায় সব ব্যয়ই নির্বাহ করা হয় জনগণের করের টাকায় গড়ে ওঠা রাজস্ব ভাণ্ডার থেকে।

জনগণের কাছ থেকে মোটাদাগে দুইভাবে কর আদায় করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতায় কর ব্যবস্থায় এবং করবহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় করা হয়।

রাজস্ব আদায়ের প্রধান প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এনবিআর। প্রতিবছর বাজেটে দেশীয় সম্পদ থেকে যে অর্থ জোগান দেওয়া হয়, তার প্রায় ৯০ শতাংশই দেয় এনবিআর।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে দেশীয় সম্পদ থেকে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা জোগান দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা আছে। এর ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ৮৮ শতাংশই জোগান দেওয়ার লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে এনবিআরকে।

এই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে এনবিআর আয়কর খাত থেকেই সবচেয়ে বেশি- ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।

রিটার্ন কী

একজন করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমে আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে রিটার্ন। আয়কর আইন অনুযায়ী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার রিটার্ন সব আয়ের বিবরণী, বাংলাদেশে এবং দেশের বাইরে অবস্থিত সব ধরনের পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণী এবং ক্ষেত্রমাফিক জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট সব ধরনের ব্যয়ের বিবরণী সংবলিত হবে। রিটার্ন জমা দিতে হয় এনবিআরের নির্ধারিত ফরমে।

টার্গেট ৫০ লাখ রিটার্ন

এনবিআরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে বর্তমানে ১ কোটি ৭ লাখের বেশি লোকের টিআইএন রয়েছে। এবছর ৫০ লাখ আয়কর রিটার্ন নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এরমধ্যে ১৫ লাখ ই-রিটার্ন বা অনলাইনে এবং বাকি ৩৫ লাখ অফলাইনে বা আগের মতো কাগজের ফরমে রিটার্ন নেওয়ার আশা রয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৪৩ লাখ টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেন। এর মধ্যে সাড়ে ৫ লাখ রিটার্ন জমা হয় অনলাইনে।


কত আয় করলে রিটার্ন দিতে হয়

কোনও স্বাভাবিক ব্যক্তির বা করদাতার আয় যদি বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হয়।

মহিলা ও ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে ৪ লাখ টাকার বেশি হয়।

তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার আয় যদি বছরে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হয়।

আর গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে ৫ লাখ টাকার বেশি হয় তাহলে রিটার্ন দিতে হবে।

রিটার্ন দেবেন কারা

কারা রিটার্ন দাখিল করবেন তা দুই ভাগে চিহ্নিত করেছে এনবিআর। যাদের করযোগ্য আয় রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং যাদের আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

যাদের আবশ্যই রিটার্ন দাখিল করতে হবে :

দেশে বসবাসকারী ৫০ ধরনের সক্ষম ব্যক্তি এবং সরকারের নানা রকম সেবা পেতে অবশ্যই রিটার্ন দিতে হবে। তারা হচ্ছেন-

করদাতার মোট আয় করমুক্তসীমা অতিক্রম করলে।

আয়বর্ষের পূর্ববর্তী তিন বছরের যেকোনো বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকে বা তার আয় করযোগ্য হয়ে থাকে।

ফার্মের অংশীদার হলে।

কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার কর্মচারী হলে।

গণকর্মচারী সরকারি (চাকরিজীবী) হলে।

কোনও ব্যবসায় বা পেশায় যেকোনো নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদে বেতনভোগী কর্মী হলে।

কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য আয় থাকলে।

করারোপযোগ্য আয় না থাকা সাপেক্ষে, ২০ (বিশ) লাখের বেশি টাকার ঋণ নিতে হলে।

আমদানি নিবন্ধন সনদ বা রপ্তানি নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তিতে ও বহাল রাখতে।

সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নের জন্য।

সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে।

সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার হতে এবং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে।

সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ (দশ) লাখ টাকার বেশি জমি, বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রয় বা লিজ বা হস্তান্তর বা বায়নানামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে।

ক্রেডিট কার্ড প্রাপ্তিতে ও বহাল রাখতে।

চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি অথবা সার্ভেয়ার হিসাবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসাবে কোনও স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তিতে ও বহাল রাখতে।

মুসলিম নিকাহ ও তালাকের কাজী (নিবন্ধন), হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বা বিশেষ বিবাহের নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার হিসাবে লাইসেন্স ও নিয়োগপ্রাপ্তি বহাল রাখতে।

ট্রেডবডি বা পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে।

ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র প্রাপ্তি ও নবায়নে।

যেকোনো এলাকায় গ্যাসের বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তি এবং বহাল রাখতে।

লঞ্চ, স্টিমার, মাছ ধরার ট্রলার, কার্গো, কোস্টার ও ডাম্ব বার্জসহ যেকোনো প্রকারের ভাড়ায় চালিত নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট প্রাপ্তি ও বহাল রাখার ক্ষেত্রে।

পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইট উৎপাদনের অনুমতি প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে হলে।

সিটি করেপোরেশন, জেলা সদর বা পৌরসভায় অবস্থিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু বা পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে।

সিটি করপোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি বা বহাল রাখতে।

কোম্পানির এজেন্সি বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে।

আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে হলে।

আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খুলতে হলে।

পাঁচ লাখ টাকার বেশি পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলার ক্ষেত্রে।

১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদী আমানত খোলায় ও বহাল রাখতে হলে।

পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে।

পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে।

মোটরযান, ব্যবসায়িক স্থান, বাসস্থান অথবা অন্যান্য সম্পদ সরবরাহের মাধ্যমে যৌথভাবে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে।

ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক বা উৎপাদন কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানকারী পদমর্যাদায় কর্মরত ব্যক্তির বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।

মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।

পরামর্শক সেবা, ক্যাটারিং সার্ভিস, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, জনবল সরবরাহ, নিরাপত্তা সরবরাহ সেবা বাবদ নিবাসী কর্তৃক কোনও কোম্পানি হইতে কোনও অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।

এমপিও ভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে মাসিক ১৬ হাজার টাকার বেশি অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।

বিমা কোম্পানির এজেন্সি সার্টিফিকেট নিবন্ধন বা নবায়নের ক্ষেত্রে।

দুই চাকা বা তিন চাকার মোটরযান ব্যতীত অনান্য মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে।

এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধিত এনজিও বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার অনুকূলে বিদেশি অনুদানের অর্থ ছাড় করতে হলে।

বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভোক্তাদের কাছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে।

কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এবং সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইন ১৮৬০ এর আওতায় নিবন্ধিত কোনও ক্লাবের সদস্যপদ লাভের আবেদনের ক্ষেত্রে।

পণ্য সরবরাহ, চুক্তি সম্পাদন বা সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে নিবাসী কর্তৃক টেন্ডার ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার সময়।

কোনও কোম্পানি বা ফার্ম কর্তৃক কোনও প্রকার পণ্য বা সেবা সরবরাহ গ্রহণের সময়।

পণ্য আমদানি বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে গেলে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা, সরকার কর্তৃক গঠিত অনুরূপ কর্তৃপক্ষ অথবা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমোদনের নিমিত্ত ভবন নির্মাণের নকশা দাখিল করতে হলে।

স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসাবে নিবন্ধন, লাইসেন্স বা তালিকাভুক্তি করতে এবং বহাল রাখতে হলে।

ট্রাস্ট, তহবিল, ফাউন্ডেশন, এনজিও, মাইক্রোক্রেডিট অরগানাইজেশন, সোসাইটি এবং সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাব খুলতে এবং চালু রাখার ক্ষেত্রে।

কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়ি ভাড়া বা লিজ গ্রহণকালে বাড়ির মালিকের রিটার্ন দাখিল আবশ্যক।

কোও নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক পণ্য বা সেবা সরবরাহ নেওয়ার সময় সরবরাহকারীর বা সেবা প্রদানকারীর।

হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মোটেল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগন্সটিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে হলে।

সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল বা সমজাতীয় কোনও সেবা নিতে হলে।

এনবিআর
ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

রিটার্ন ফরম কোথায় পাওয়া যায়

সব আয়কর অফিসে রিটার্ন ফরম পাওয়া যায়। একজন করদাতা সারাবছর বিনামূল্যে আয়কর অফিস থেকে রিটার্ন ফরম সংগ্রহ করতে পারেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েব সাইট (nbr.gov.bd) থেকে রিটার্ন ফরম ডাউনলোড করা যাবে। রিটার্নের ফটোকপিও গ্রহণযোগ্য।

কোন সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন

বাংলাদেশের অর্থবছর শুরু হয় ১ জুলাই। পরের বছরের ৩০ জুন সেই অর্থবছর শেষ হয়। আয়কর আইন অনুযায়ী অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর কর দিবসের মধ্যে একজন করদাতা স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন।

করদিবস পরবর্তীকালে রিটার্ন দাখিল

একজন করদাতা যদি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে তিনি এনবিআরের সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগে এক বা দুই মাস সময়ের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন মঞ্জুর সাপেক্ষে তিনি ওই সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যেও যদি রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হন তাহলে আর্থিক জরিমানা ও দণ্ডের বিধান রয়েছে।

করদিবস পরবর্তীকালেও স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতারা স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করবেন। অন্য কোনও পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিলের সুযোগ নেই।

রিটার্ন দাখিলের পদ্ধতি

স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতারা করদিবসের মধ্যে বা করদিবস পরবর্তীকালে যখনই রিটার্ন দাখিল করুন না কেন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে দাখিল করতে হবে। আগের মতো সাধারণ পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিলের সুযোগ নেই।

করদিবস কী

করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের শেষদিনকে দেশে করদিবস হিসেবে পালন করা হয়। করদিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করলে কোনও জরিমানা বা অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হয় না। আয়কর আইন অনুযায়ী, স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের জন্য প্রতি বছরের ৩০ নভেম্বর করদিবস। ২০২৪-২৫ করবর্ষের জন্য ৩০ নভেম্বর হচ্ছে করদিবস। অর্থাৎ রিটার্ন দাখিলের সর্বশেষ দিন।

অর্থবছর ও করবর্ষের হিসাবের মধ্যে পার্থক্য আছে। করবর্ষ হচ্ছে চলতি অর্থবছর। তবে করবর্ষের মধ্যে আয়করের যে হিসাব করে কর দিতে হয়, তা হচ্ছে আগের অর্থবছরের। যেমন চলতি বছর করবর্ষ হচ্ছে ২০২৪-২৫। এই সময়ে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব করে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কর দিতে হবে। অর্থাৎ চলতি করবর্ষে গত অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে। ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাকে আয়কর রিটার্ন দিতে হবে কর দিবসের মধ্যে।  

নতুন করদাতার যেকোনো দিন রিটার্ন দাখিলের সুযোগ

কোনও স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা যিনি আগে কখনও রিটার্ন জমা দেননি তার জন্য ২০২৪-২৫ করবর্ষের করদিবস ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে যেকোনো দিন রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।

আবার বিদেশে অবস্থানরত কোনও স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে, তার বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের দিন হতে ৯০ দিনের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।

একইভাবে কেউ যদি উচ্চ শিক্ষার জন্য ছুটিতে অথবা চাকরির জন্য প্রেষণে বা লিয়েনে নিযুক্ত হয়ে বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করেন বা অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে বৈধ ভিসা ও পারমিটধারী হয়ে বাংলাদেশের বাহিরে অবস্থান করেন, তাহলে তিনিও কর দিবসের পরে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

রিটার্ন কোথায় দাখিল করতে হয়

টিআইএন সনদে উল্লেখিত অধিক্ষেত্র বা সার্কেল অনুযায়ী রিটার্ন দিতে হবে। রিটার্ন দেওয়ার সময় করদাতা বিদেশে অবস্থান করলে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও রিটার্ন দেওয়া যায়। তাছাড়া, https://etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অনলাইনেও রিটার্ন দাখিল করার সুযোগ রয়েছে।

রিটার্ন দাখিল না করলে কী হয়

যেসব ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, রিটার্ন দাখিল না করলে সেসব সেবা হতে বঞ্চিত হতে হবে। যেমন- গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ সেবা পাবেন না বা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে, বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে অসুবিধা হবে ইত্যাদি।

এছাড়া আয়কর আইনের ধারা ২৬৬ অনুযায়ী উপকর কমিশনার কর্তৃক আরোপিত জরিমানা পরিশোধ করতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত