ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইসমাইল হানিয়াকে ইরানে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কীভাবে তিনি নিহত হলেন, সেবিষয়ে বিস্তারিত কিছু এখনও জানা যায়নি।
ইরানের বিপ্লবী গার্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার স্থানীয় সময় রাত ২ টার দিকে তেহরানে ইসমাইল হানিয়ার বাসভবনে আকস্মিক হামলা হয়। এতে হানিয়া ও তার এক দেহরক্ষী নিহত হন।
তবে বিবৃতিতে হামলার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে, এমনটা বলা হয়েছে।
সৌদি মিডিয়া আল হাদাছা জানিয়েছে, হানিয়ার বাসভবনে হামলায় ‘নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র’ ব্যবহার করা হয়েছে। আর ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ‘আকাশ থেকে ছোড়া’ ক্ষেপণাস্ত্রে নিহত হয়েছেন হানিয়া।
ফার্স নিউজ ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হানিয়া তেহরানের উত্তরে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত আবাসিক এলাকায় ছিলেন। সেখানে আকাশ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তিনি নিহত হন।
লেবাননের আল মায়াদিন মিডিয়া জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ইরানের বাইরে থেকে ছোড়া হয়েছে।
হামাস হানিয়ার হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়, ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইরানে গিয়েছিলেন হানিয়া। মঙ্গলবার তেহরানে এ অনুষ্ঠান হয়।
তবে হামাসের এমন দাবি নিয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
হানিয়া নিহত হওয়ার পর বুধবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছে।
১৯৬২ সালে গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করা ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর চেয়ারম্যান ছিলেন। গাজা থেকে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূ-খণ্ডে হামাস যে নজিরবিহীন হামলা চালায়, তার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা অনেক আগে থেকেই ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু।
গত অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর হামাসপ্রধানের ভাই ও ভাতিজা ইসরায়েলের হামলায় মারা যান। পরের মাসে নভেম্বরে তার এক নাতিকে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরায়েলি হামলায় আরেক ছেলেকে হারিয়েছিলেন হানিয়া।
সর্বশেষ গত এপ্রিলে ঈদুল ফিতরের দিনে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইসমাইল হানিয়ার তিন ছেলে ও চার নাতি-নাতনি নিহত হয়।
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজায় আরবি সাহিত্যে পড়াশোনা করার সময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুক্ত হন হানিয়া। ১৯৯৭ সালে সংগঠনটির একটি শাখার প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।