ভারতের রাজধানী দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন আতিশি সিং। মঙ্গলবার সকালে আম আদমি পার্টির (আপ) বিধায়কদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আতিশির নাম প্রস্তাব করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে স্যাক্সেনার সঙ্গে বৈঠকের পর পদত্যাগ করবেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপরই আতিশি তার নতুন দায়িত্ব বুঝে নেবেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
কেজরিওয়ালের নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আতিশির নাম প্রস্তাব করেন আপ নেতা দিলীপ পান্ডে। নাম প্রস্তাবের পর দলের বিধায়করা সবাই দাড়িয়ে আতিশির প্রতি সমর্থন জানান।
আতিশি বর্তমানে দিল্লি সরকারের শিক্ষা এবং পূর্ত বিভাগের দায়িত্বে আছেন। দিল্লির স্কুলগুলোতে শিক্ষার উন্নয়নে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।
মদ নীতি সংক্রান্ত মামলায় আপ নেতা মনীশ সিসোদিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর দিল্লির কলকাজি আসন থেকে নির্বাচন করে বিধায়ক হন আতিশি। কেজরিওয়াল ও সিসোদিয়া যখন কারাগারে ছিলেন, তখন দলের হয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি।
সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার দুই দিনের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দেন কেজরিওয়াল। এসময় তিনি আগামী নভেম্বরে মহারাষ্ট্রের সঙ্গে দিল্লিতেও আগাম নির্বাচনের দাবি জানান।
নভেম্বরে নির্বাচন না হলে আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আতিশিই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন।
আতিশি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮১ সালের ৮ই জুন। তার বাবা বিজয় সিং ও মা তৃপ্তা ওয়াহি দিল্লি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ছিলেন।
আতিশি নামে পরিচিত হলেও তার নামের শেষে রয়েছে মার্লেনা শব্দটি। এই নামটি মার্ক্স এবং লেনিন এই দুই নামের সমন্বয়ে গঠিত। নামেই তার আদর্শের ভিত্তি টের পাওয়া যায়। পরে অবশ্য তিনি তার নামের এই অংশটি বাদ দেন।
তার শিক্ষা জীবনের শুরু দিল্লির স্প্রিংডেলস স্কুল থেকে। ২০০১ সালে তিনি দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সেন্ট স্টিফেনস কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০০৩ সালে চিভেনিং বৃত্তি পেয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। এরপর ২০০৫ সালে তিনি রোডস স্কলার হিসেবে ম্যাগডালেন কলেজে যোগ দেন।
আতিশির রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ২০১৩ সালে আম আদমি পার্টিতে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। তখন ভারতজুড়ে চলা দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০১৫ সালে মধ্যপ্রদেশের খানডাওয়া জেলায় ‘জল সত্যাগ্রহ’ আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি সবার নজরে আসেন।
তবে ২০২০ সালে দিল্লিতে কলকাজি আসন থেকে নির্বাচন করে বিজেপি প্রার্থী ধর্মবীর সিংকে হারিয়ে দেন তিনি। এই জয় তাকে দিল্লি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে সহায়তা করে। ২০২২-২৩ সময়কালে তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন।