সর্বশেষ সাফে ৫ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ২৩ গোল দিয়েছিল বাংলাদেশ। বিপরীতে খেয়েছিল মাত্র ১টি গোল। এবং সেটাও ফাইনালে। বাংলাদেশকে সাফে চ্যাম্পিয়ন করতে বড় অবদান ছিল ডিফেন্ডারদের। যাদের অন্যতম আঁখি খাতুন রক্ষণে আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
সেই আঁখি ফুটবল ছেড়ে চীনে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু রক্ষণে আঁখির জায়গাটা সামলাবেন কে?
বাংলাদেশের রক্ষণভাগে কারা
অভিজ্ঞ মাসুরা পারভীন তো আছেনই। সঙ্গে উদীয়মান আফঈদা খন্দকার, শিউলি আজিম ও শামসুন্নাহার সিনিয়রও রয়েছেন। প্রথমবার সাফের দলে ডাক পাওয়া কোহাতি কিসকুও দলে সুযোগ পেলে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন।
কোচ পিটার বাটলার কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্স মাঠে শুধু ডিফেন্ডারদের নিয়েই আলাদা একটা সেশন করিয়েছেন শুক্রবার। যেখানে নাম ধরে ধরে ডেকেছেন মাসুরা, শামসুন্নাহাদের। কিভাবে পাকিস্তান, ভারতের ফরোয়ার্ডদের সামলাতে হবে সেই কৌশল শিখিয়েছেন।
২০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। যারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ৫-২ গোলে হেরে এবারের টুর্নামেন্ট শুরু করেছে। কিন্তু হারলেও পাকিস্তানের আক্রমণভাগের শক্তির আঁচ কিছুটা পাওয়া গেছে এই ম্যাচে। বিশেষ করে সুহা হিরানি, কাইলা মারি সিদ্দিকি ভারতের বিপক্ষে গোল পেয়েছেন।
দায়িত্বটা বেশি শামসুন্নাহারের
এদেরকে আগলানোর দায়িত্বটা এবার হয়তো সিনিয়র হিসেবে শামসুন্নাহারকে নিতে হবে বেশি করে।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি আগের দিন মাঠে বসে দেখেছেন এই ডিফেন্ডার। পাকিস্তানের বিপক্ষে কেমন পরিকল্পনা থাকবে? প্রশ্নটা করতেই আনফা কমপ্লেক্স মাঠে অনুশীলন শেষে সকাল সন্ধ্যাকে শামসুন্নাহার বলেন, “ওরা কিন্তু খুবই ভালো খেলেছে। আমরা পাকিস্তানকে আগে যতটা দুর্বল ভেবেছিলাম, ওদের খেলা দেখে কিন্তু মনে হয়নি ওরা দুর্বল। তারা শক্তিশালী দল। পাকিস্তান অনেক উন্নতি করেছে। ওরা কীভাবে খেলেছে, আমরা দেখেছি, আমরাও সেভাবে ওদের বিপক্ষে খেলব, যেন আমরা তাদের বিপক্ষে জিততে পারি।”
সর্বশেষ সাফে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার অবশ্য বাড়তি সতর্ক তাদের নিয়ে, “ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান গোলের অনেক সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু মিস করেছে। আমাদের ক্ষেত্রেও যদি এমনটা হয়… আমরা চেষ্টা করব গোল না খেতে। ডিফেন্ডার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, সেটা আমরা অবশ্যই পালন করব।”
দলের সব ডিফেন্ডর এক সঙ্গে এসব নিয়ে আলাপ আলোচনাও করেন, “কীভাবে রক্ষণ সামলাবো কোচ আমাদের সে পরিকল্পনা দেখাচ্ছেন। কীভাবে ডিফেন্ডিং করলে গোল খাবো না, সেই অনুযায়ী চেষ্টা করব। আমরা নিজেরা ভাবছি, নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলব, কোনও ভুল করব না।”
গত আসরে আঁখি যেন দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এবার আঁখিকে দারুণভাবে মিস করবেন শামসুন্নাহার, “আসলে গত সাফ আর এবারের সাফের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আগের সাফে যেমন দলে আঁখি (খাতুন) ছিলেন, স্বপ্না (সিরাত জাহান) ছিলেন, ছোটন (গোলাম রব্বানী) স্যার ছিলেন, তাদের খুব মিস করছি। সত্যি বলতে আমাদের আগের পরিকল্পনাই অন্যরকম ছিল।”
যদিও আখিঁর অনুপস্থিতিকে বাড়তি চাপ হিসেবে দেখছেন তিনি, “অবশ্যই একটা চাপ থাকে। আসলে ভালো খেলতে হবে, দেশের জন্য খেলছি, ভালো কিছু করতে হবে।”