Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

ডেনমার্কে কেন এত সুখ

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের একটি ক্যাফে প্রাঙ্গণে বসে গ্রাহকরা রোদ উপভোগ করছেন। ২০২৩ সালের জুনের ছবি।
ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের একটি ক্যাফে প্রাঙ্গণে বসে গ্রাহকরা রোদ উপভোগ করছেন। ২০২৩ সালের জুনের ছবি।
[publishpress_authors_box]

টানা ছয় বার বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ সুখী দেশ নির্বাচিত হয়েছে ডেনমার্ক। গত মাসে জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট-২০২৪ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে শীর্ষে ছিল ফিনল্যান্ড। তার ঠিক পরেই এসেছে ডেনমার্কের নাম।

ফিনল্যান্ড টানা সাত বছর ধরে শীর্ষস্থান আর ডেনমার্ক টানা ছয় বছর ধরে দ্বিতীয় স্থান ধরে রেখেছে। অবশ্য তার আগে ডেনমার্কও তিনবার (২০১২, ২০১৩ ও ২০১৬ সালে) শীর্ষস্থানে ছিল।

এ বছর দেশ দুটির স্কোরের ব্যবধানও সামান্য ছিল। ডেনমার্কের সামগ্রিক স্কোর ৭.৫৮৬, আর ফিনল্যান্ডের ৭.৮০৪।

ডেনমার্কের হ্যাপিনেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বিশ্লেষক ক্যাটারিনা ল্যাচমুন্ড বলেন, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে পার্থক্য এতটাই সামান্য যে, আপনি আসলে সেগুলো ধরতে পারবেন না। ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে একটা বড় মিল রয়েছে তাদের সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থায়।

দুই দেশই মানুষকে ব্যর্থতার জন্য দায়ী না করে তাদের ঝুঁকি নিতে ও নতুনভাবে চেষ্টা করতে উৎসাহিত করে।

ডেনমার্কে কেউ চাকরি হারালে বেকার ভাতা পায়। বেকার অবস্থায় অসুস্থ হলে চিকিৎসার খরচ বা যত্নের মান নিয়েও চিন্তা করতে হয় না। নবজাতক শিশুর দেখাশোনা করার জন্য পুরো এক বছরের ছুটি দেওয়া হয়। নবজাতক শিশুর লালন-পালনের খরচও ৭৫ শতাংশ রাষ্ট্রই দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা বিনামূল্যেই দেওয়া হয়। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হাত খরচের জন্যও মাসিক রাষ্ট্রীয় অনুদান দেওয়া হয়। সামাজিক আবাসন, গর্ভপাতের অধিকার ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলো অনেক শক্তিশালী। ফলে আইন করে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণেরও প্রয়োজন হয় না।

দেশটির সরকার পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত। সরকারের প্রতি নাগরিকদের আস্থা সেখানে সমাজে বিশ্বাসের পরিবেশ গড়ে তুলেছে।

বাচ্চাদের স্কুলগুলোতে কোনও তালা থাকে না এবং তাদের যত্নেরও কোনও ঘাটতি হয় না। স্কুলের খেলার মাঠ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এবং নয় বছরের কম বয়সী শিশুরাও স্কুলে একাই আসা-যাওয়া করতে পারে।

ডেনিশদের কাছে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির পারিবারিক জীবন খুব সংহত এবং বয়স্ক নাগরিকরাও পরিবার নিয়ে সন্তুষ্টির কথা বলেন। পরিবারের সদস্যরা পরস্পরকে যথেষ্ট সময় দেন। পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশীরাও প্রায়ই একসঙ্গে খাবার খায় ও গান গায়।

ডেনিশ সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ব্যক্তির আত্মত্যাগ। তারা ‘জান্তে ল’ নামের একটি অলিখিত সামাজিক রীতি মেনে চলেন। তা ব্যক্তিকে নিজেদের সম্পর্কে খুব বেশি উচ্চ ধারণা পোষণে নিরুৎসাহিত করে। পুরো স্ক্যান্ডিনেভিয়াজুড়েই এই রীতি মেনে চলা হয়।

সমষ্টির স্বার্থে ব্যক্তির অবমূল্যায়ন, বিনয় ও সামাজিকতাকে উদযাপন করা হয়। জাতীয় আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। আরেকটি ব্যাপার হলো, তারা জীবনের যে কোনও খারাপ পরিস্থিতিতেও ভেঙে পড়ে না। জীবনের নানা চড়াই-উৎরাইকে খুব সহজেই মেনে নেয়।

তথ্যসূত্র : সিএনএন

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত