সেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে জিমি নিশামকে উড়িয়ে এনেছিল ফরচুন বরিশাল। নিউজিল্যান্ডের এই অলরাউন্ডারের সামর্থ্য সম্পর্কে সন্দেহ থাকার কথা নয়। ব্যাট-বলে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন অনেক ম্যাচে। ফাইনালের জন্য এমন একজন খেলোয়াড়কে উড়িয়ে আনার যথার্থতা অবশ্যই আছে। কিন্তু ফরচুন বরিশাল তাকে নিয়েও এসেও ফাইনালে খেলায়নি!
এক ম্যাচের জন্য এসেও কেন নিশাম খেলেননি, এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ফাইনাল জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবালের কাছেও এসেছিল প্রশ্নটা। বরিশাল অধিনায়ক জানালেন আসল কারণ।
বিপিএলে আসার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এসএ টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন নিশাম। প্রিটোরিয়া ক্যাপিটালসের জার্সিতে সবশেষ ম্যাচে ২৪ বলে ৩২ রান করার পাশাপাশি নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। এমন কার্যকর অলরাউন্ডারকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যেই নিশামকে উড়িয়ে এনেছিল বরিশাল। কিন্তু ফাইনালের একাদশে ছিলেন না কিউই অলরাউন্ডার।
এ নিয়ে ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে বিপিএল ট্রফির সঙ্গে ছবি দিয়ে নিশাম যেন খোঁচা দিয়েই লিখলেন, ‘‘এক দিনের পরিশ্রমে খারাপ অর্জন নয়।’’ বরিশালের আরেক কিউই পেসার জেমস ফুলার ছিলেন সেই ছবিতে। ফুলারও খেলেননি ফাইনালে।
নিশামের প্ররিশ্রমটা কী ছিল? অনুশীলনে শ্রম দিয়েছেন, ৪০ ওভার ম্যাচ দেখেছেন আর বিসিবির হয়ে ডেভিড ম্যালানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, এই তো ।
নিশামকে না খেলানোর ব্যাখ্য অবশ্য দিয়েছে বরিশাল। অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছেন, “আমাদের যে বিদেশি স্কোয়াড, একজন আছে পেসার। কোনও ব্যাটার বা অলরাউন্ডারের ট্রেনিংয়ে কিংবা ওয়ার্মআপে যদি কোনও ব্যথা লাগত, তার রিপ্লেস করার জন্য কেউ ছিল না।”
অর্থাৎ, ফাইনালে ব্যাকআপ হিসেবে নিশাম এনেছিলেন। এক ম্যাচের জন্য তার পেছনে অর্থও খরচ করতে হয়েছে বরিশালকে। নিশাম খেলবেন না, অথচ বেঞ্চে বসে টাকা নেবেন- বিষটি ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমানকে জানিয়েছিলেন তামিম।
নিশামও হয়তো জেনেই এসেছেন ফাইনালে তার খেলা নিশ্চিত নয়। কিন্তু তার মতো একজন খেলোয়াড়ের বেঞ্চে থাকাটাও সহজ ব্যাপার নয়। সেকারণে তামিমের প্রশংসা কুড়াচ্ছেন এই অলরাউন্ডার। তবে এক ম্যাচের জন্য টিম কম্বিনেশন ভাঙতে চাননি বরিশাল অধিনায়ক।
তামিম বলেছেন, “নিশাম যেকোনও দলে খেলা ডিজার্ভ করে। বিশেষত বিপিএলে যেকোনও দলে খেলতে পারে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, যে খেলোয়াড়রা সাত-আটটা ম্যাচ ধরে খেলছে, উইকেট ও প্রতিপক্ষকে বুঝতে পারে। কারণ, তাদের (চিটাগংয়ের) সঙ্গে আমাদের খুব কম সময়ে তিনটা খেলা হয়েছে, সঙ্গে উইনিং কম্বিনেশন। আমি আমার মাথায় খুব পরিষ্কার ছিলাম যে এটা বদলাব না।”
কারণ যাই হোক, নিশাম খেলতে পারেননি এটাই বাস্তবতা। এজন্য হয়তো ইনস্টাগ্রামকে বেছে নিলেন ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের ট্র্যাজেডির নায়ক। সেবার বাউন্ডারি আইনে ফাইনাল হারের পর নিশাম শিশুদের জন্য টুইটারে মজা করে লিখেছিলেন, ‘‘পেশা হিসেবে খেলাকে বেছে নেওয়ার দরকার নেই। কেক, রুটি এসব বানাও বা অন্য কিছু করো। খাওদাও, ৬০ বছর বয়সে মোটা হয়ে মারা যাও।’’