Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

ফরেইন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকী যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

foreign_affairs_magazine_20212_1658022458_06796c78_progressive
[publishpress_authors_box]

বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নতুন ধারণা, বিশ্লেষণ ও বিতর্কের প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক ফোরাম হিসেবে স্বীকৃত ফরেইন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকী। যুক্তরাষ্ট্রের শতবর্ষী এই সাময়িকীতেই প্রকাশিত হয়েছিল স্যামুয়েল হান্টিংটনের ‘দ্য ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশন’ কিংবা জর্জ কেনানের ‘এক্স আর্টিকেল’ এর মতো নিবন্ধগুলো।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক এই সাময়িকীটি প্রকাশ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাংক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস (সিএফআর)।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র, আর তখন থেকে ওয়াশিংটনের কূটনীতির গতিপথ দেখিয়ে দেওয়া ফরেইন অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিন বৈশ্বিক রাজনীতির বোঝাপড়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সেই কারণে দেশটির সাবেক উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্ট্রোব ট্যালবট বলেছিলেন, “সরকারের পররাষ্ট্র নীতি কিংবা জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন, এমন যাদের আমি চিনি, তারা সবাই মনোযোগ দিয়ে ফরেন অ্যাফেয়ার্স পড়েন।”

যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১১ জন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিখেছেন ফরেইন অ্যাফেয়ার্সে। তাদের মধ্যে রয়েছেন হিলারি ক্লিনটন, কলিন পাওয়েল, ডোনাল্ড রামসফেল্ড, অ্যাশটন কার্টার।

রবার্ট কেওহান, ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা, ডেভিড পেট্রাউস, জন জে মেয়ারশেইমার, স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টাল, ক্রিস্টোফার আর হিল ও জোসেফ নয়ের মতো কূটনীতি ও সমর বিশেষজ্ঞরাও ভরিয়েছেন ফরেন অ্যাফেয়ার্সে পাতা।

সাময়িকীটির মুদ্রিত সংস্করণে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। এখন অবশ্য এর ওয়েবসাইট সংস্করণও রয়েছে। বর্তমানে প্রতি দুই মাসে একবার মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ওয়েবসাইটে প্রতিদিনই নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। 

কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনসের প্রথম দিককার সদস্য ছিলেন কূটনীতিক, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও আইনজীবীরা। প্রতিষ্ঠাকালীন সনদে এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হিসেবে ‘রাষ্ট্রপরিচালনা, অর্থনীতি, শিল্প, শিক্ষা ও বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কিত এমন সব আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা সভা আয়োজনের কথা বলা হয়। তবে পরের বছরই সাধারণ মানুষদের কাছে পৌঁছনোর জন্য একটি সাময়িকী প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় সিএফআর। 

তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি যারা বিশ্লেষণ করেন, তাদের কাছে ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাময়িকীর চেয়ে বড় কিছু। এতে প্রকাশিত নিবন্ধগুলো পরবর্তী মাস ও বছরজুড়ে রাজনৈতিক সংলাপকে প্রভাবিত করে। গবেষক-শিক্ষাবিদ ও নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে বিতর্কের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম এটি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্নায়ুযুদ্ধকালীন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির গতিপথ ঠিক করে দিত ফরেইন অ্যাফেয়ার্স। স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে এবং বিশেষ করে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর সাময়িকীটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যায় পাঠকদের কাছে।

এর লক্ষ্য হলো চিন্তা ও মতের অবাধ বিনিময়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বোঝাপড়া বাড়ানো। ফরেইন অ্যাফেয়ার্সে প্রধানত সমকালীন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তবে রাজনীতির পাশাপাশি বিশ্ব ইতিহাস ও অর্থনীতি নিয়েও লেখা প্রকাশিত হয় এতে।

ফরেইন অ্যাফেয়ার্স দাবি করে, বিশেষ কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি তাদের পক্ষপাত নেই। কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের মতোই সাময়িকীতে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে দেওয়া হয়। এতে প্রকাশিত নিবন্ধগুলো বিশেষ কোনও আদর্শিক বিশ্বাসের প্রতিনিধিত্ব করে না। 

সাময়িকীটির কর্তৃপক্ষ বলে, লেখকদের কাছে যা চাওয়া হয় তা হলো, তারা যে বিষয়ে লিখবেন সে বিষয়ে তাদেরকে যোগ্য হতে হবে এবং বিষয়টি সম্পর্কিত সব তথ্য ভালোভাবে জানা থাকতে হবে। গুরুত্ব সহকারে লেখকদের ধারণ করা মতামত সততার সঙ্গে ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রকাশ করতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত