Beta
মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪

ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নিতে কেন দেরি করছে ইরান

গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলের দিকে শতশত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল ইরান। ছবি: এএফপি।
গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলের দিকে শতশত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল ইরান। ছবি: এএফপি।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

জুলাইয়ের শেষদিকে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ড নাটকীয়ভাবে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। এর ফলে গত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দেশ দুটি।

২০২৪ সালে ইরান বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়— কেরমানে জেনারেল কাসেম সোলায়মানির কবরে একটি বড় সন্ত্রাসী হামলা; দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন কূটনীতিক ও ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) দুজন জেনারেলের মৃত্যু; হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার গুপ্তহত্যা।

এই সমস্ত কিছুই ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দেশের জনগণ এবং বিশ্বের সামনে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য আরও কঠোর এবং আরও কট্টরপন্থী পদক্ষেপ নিতে চাপ দিচ্ছে।

ইসমাইল হানিয়া ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন। সেদিন উদ্বোধনী বক্তৃতায় পেজেশকিয়ান বলেন, ইরান পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।

পেজেশকিয়ান আরও যোগ করেন, তিনি বিশ্বের সঙ্গে ইরানের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে চান এবং নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তার জন্য চেষ্টা করবেন। পেজেশকিয়ান ইরানের সংস্কারবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। তারা মধ্যপন্থী পররাষ্ট্র নীতি এবং একটি বাস্তববাদী রাজনৈতিক পন্থার পক্ষে।

কিন্তু ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে পেজেশকিয়ানের বক্তব্য অপ্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে হামাসের বিরোধীরা তথা ইসরায়েল চরম পদক্ষেপ নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ ছাড়া ইরানের ক্ষেত্রেও তারা কোনও শেষ সীমা মানে না।

ইরানের প্রতিক্রিয়া কী হবে বা তারা আদৌ কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবে কিনা তা নিয়ে গত এক মাস ধরে ভাবছে বিশ্ব। পশ্চিমা প্রতিবেদনগুলো উত্তেজনার একটি নির্দিষ্ট অনুভূতি তৈরি করেছে, কারণ ইসরায়েলের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া ইরানের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করছে। যার অর্থ হল একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের হুমকি এখনও প্রাসঙ্গিক।

একদিকে, ইরান তার অস্বাভাবিক নীরবতা দিয়ে ইসরায়েলকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবলম্বন করতে এবং তার আকাশসীমা বন্ধ করতে বাধ্য করেছে। তেহরান বিশ্বাস করে যে, প্রতিক্রিয়ার ভয়ে রাখাও শাস্তির অংশ, কারণ এর ফলে ইসরায়েলেও উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে।

অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলছে, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তারা তেহরানকে ইসরায়েলে হামলার চিন্তা বাদ দেওয়াতে পেরেছে। এমনকি বাইডেন প্রশাসন ঘোষণা করেছে, ইরান যদি ইসরায়েলে হামলা চালায় তবে তারা গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি হবে।

প্রকৃতপক্ষে, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বাড়লে ওয়াশিংটন কোনোভাবেই লাভবান হবে না। এতে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন সরকার বিপাকে পড়বে। তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ডেমোক্রেটরা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রধান মিত্রের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করার সুযোগ দিতে চায় না। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান যে কারও সঙ্গে সংলাপে রাজি আছেন। এমনকি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গেও আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন তারা।

এদিকে, কখন এবং কীভাবে ইসরায়েলে হামলা চালানো হবে তা নিয়ে কিছুই বলছেন না ইরানি কর্মকর্তারা। তারা শুধু এটা বলেন যে, ইরান ‘শিগগিরই বা পরে’ প্রতিক্রিয়া জানাবে। ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান গত এক মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গেও টেলিফোনে আলোচনা করেছেন।

এই কথোপকথনের সময় পেজেশকিয়ান জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়গুলোর ওপর বেশি মনোযোগ দেন। তিনি বলেন যে, ইরানের কাছে প্রতিক্রিয়া জানানো এবং হামাস নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার সমস্ত কারণ রয়েছে। ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের চেয়েও ইরান বেশি ক্ষুব্ধ তার ভূখণ্ডের ভেতরে ইসরায়েলের এমন দুঃসাহসী ও অহঙ্কারী পদক্ষেপে।

অন্যদিকে, ইসরায়েল যা ঘটেছে তার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার করেনি, যাতে ইরান তাদের ওপর হামলা করলে এর জন্য নিজেদের দায় অস্বীকার করতে পারে। তেহরান এখনও ইসরায়েলে হামলা না চালানোর আরেকটি কারণ হল হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের মধ্যে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় আলোচনা। এর মধ্যে যদি ইরান হামলা চালায় তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে এবং স্পষ্টতই তা তেহরানের পক্ষে যাবে না।

সময় যত গড়াচ্ছে, ইরানের হুমকি বাস্তবে রূপ নেওয়া নিয়ে সন্দেহ ততই বাড়ছে। প্রবাদ আছে, “শত্রুর হামলার পর মুষ্টি উঁচিয়ে বেশিক্ষণ দোলাতে হয় না।” তার মানে যা করার সঙ্গে সঙ্গেই করে ফেলতে হয়। আর নয়তো তা আর করা হয়ে ওঠে না। তেহরান প্রতিক্রিয়া জানাতে যত দেরি করছে ততই তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে ইরানের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব কঠিন কে পরিস্থিতিতে পড়েছে। বিশেষ করে দেশের অভ্যন্তরে তারা এর জন্য অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে রয়েছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ইরানি সমাজ রক্তপাত এবং যুদ্ধ চায়। কিন্তু ইরানিরা বেশ দেশপ্রেমিক এবং তারা বিশ্বাস করে যে, তাদের মুখে এভাবে ইসরায়েলের চপেটাঘাত বন্ধ করার সময় এসেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের সঙ্গেও ইরানের সম্পর্ক বেশ জটিল, বিশেষ করে যেসব প্রক্সি গ্রুপ এই অঞ্চলে তেহরানের স্বার্থ রক্ষা করে। কয়েকদিন আগে সংবাদ মাধ্যম আল-জারিদার কুয়েতি সংস্করণ জানিয়েছে, ইসরায়েলের কারণে মিত্রদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বিশেষ করে তেহরান হিজবুল্লাহর ক্ষোভ উস্কে দিয়েছে এই বলে যে, ইসমাইল হানিয়া ও হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের হত্যার জন্য ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়ে ধৈর্য ধরতে হবে।

তেহরানে ইরানপন্থী মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে আইআরজিসি ইসরায়েলের ব্যাপারে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছিল, অন্তত যখন গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু এই বিষয়ে সকলে একমত হতে পারেননি। মতানৈক্য তর্ক-বিতর্কে পরিণত হয় এবং কিছু প্রতিনিধি বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে বৈঠক ত্যাগ করেন। বৈঠকে হিজবুল্লাহ, হামাস, ইসলামিক জিহাদ, ইয়েমেনের হুতিরা এবং কিছু ছোট ইরাকি গ্রুপের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

হিজবুল্লাহর বিশ্বাস, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে শান্তি অর্জনের একমাত্র উপায় হল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করা। তাদের আরও বিশ্বাস, এখনই চারদিক থেকে সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালানোর সবচেয়ে ভালো সময়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোসহ যারা ইসরায়েলকে রক্ষা করতে চায় তাদেরও মোকাবেলার সময়।

ইরানের মিত্র বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের অবকাঠামো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সামরিক ও অর্থনৈতিক স্থাপনা, সেইসঙ্গে ইসরায়েলের বেসামরিক ও আবাসিক এলাকাও ধ্বংসের লক্ষ্যে বড় আকারের এবং দীর্ঘমেয়াদি সামরিক অভিযানের পক্ষে কথা বলে। তাদের মতে, এই হামলা ইসরায়েলিদের দীর্ঘকাল আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে বাধ্য করবে এবং তারাও গাজার বাসিন্দাদের মতো একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। তখন তারা বুঝতে পারবে ফিলিস্তিনিদের কষ্ট।

তদুপরি, হিজবুল্লাহর প্রতিনিধিরা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি উপেক্ষা করা যায় না এবং তারা স্বাধীনভাবে ইরানের সঙ্গে তাদের কর্মকাণ্ডের সমন্বয় ছাড়াই ইসরায়েলে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। হিজবুল্লাহ আরও বলেছে যে, বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইসরায়েলি হামলার পর হাইফা ও তেল আবিব আক্রমণ করা উচিৎ। এ ছাড়া হিজবুল্লাহ তার সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের লক্ষ্যগুলো প্রসারিত করার এবং অন্যান্য ইসরায়েলি শহরগুলোতে আক্রমণ করার কথা বিবেচনা করছে। ইয়েমেনের হুতিরা হিজবুল্লাহর এই অবস্থানকে সমর্থন করেছে।

আইআরজিসি-র একটি সূত্র জানিয়েছে, ইরানি পক্ষ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই ধরনের পরিস্থিতি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এবং এতে শুধুমাত্র ইসরায়েলের লাভ হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ইরানিরা ‘একটি চোখের বদলে শুধু একটি চোখ’ নীতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। অর্থাৎ, যদি প্রতিরোধের অক্ষের নেতাদের একজনকে হত্যা করা হয়, তার বিনিময়ে শুধু একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে।

এর জবাবে তেহরানের ওই বৈঠকে থাকা হামাসের প্রতিনিধিরা জবাব দিয়েছিলেন, “ইরান যদি হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার বিনিময়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হত্যার পরিণতি মেনে নিতে প্রস্তুত থাকে, তাহলে হামাস এই নীতিকে সমর্থন করবে। কিন্তু যদি ইরানের লক্ষ্য হয় আরও নিচু স্তরের কোনও ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে হত্যা, তাহলে তারা এতে একমত হবেন না।”

তেহরানের ওই বৈঠকে উত্তপ্ত বিরোধের পরে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ইরানের মিত্ররা হয়তো তেহরানের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়াই ইসরায়েলে আক্রমণ চালাতে পারে। অনেকটা হামাস যেভাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু এবার হয়তো তার চেয়েও ভয়ঙ্করভাবে হামলা হতে পারে।

পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে তেহরানকে রাজি করানোর জন্য তুরস্কের কাছেও ধরনা দিয়েছে। এমনকি তুরস্ক ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য আঞ্চলিক মিত্রদের দরজায়ও কড়া নেড়েছে। তুরস্ক বারবার বলেছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত থামাতে তাদের যতটুকু ক্ষমতা আছে তার সবকিছুই করছে। আর নয়তো মধ্যপ্রাচ্যের এমন বিপর্যয় ঘটবে যা সকলকেই বিপাকে ফেলবে এবং অপ্রত্যাশিত ফলাফলের দিকে নিয়ে যাবে। অন্য কথায়, এই সময় কেউ শুধু পাশে বসে বসে নিষ্ক্রিয়ভাবে চেয়ে থাকতে পারবে না।

ইরানি কর্তৃপক্ষ একটি কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়েছে। একদিকে, অপ্রত্যাশিত পরিণতিসহ ইরানের একটি বড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। অন্যদিকে, ইরানকে নিজের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে এবং ইসরায়েলকে কোনও ছাড় দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া তেহরানকে এই অঞ্চলে তার প্রক্সি বাহিনীগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে, যা ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের কারণে বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ইরানের প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক লড়াই চলছে সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণকারী রক্ষণশীল শক্তি এবং ধর্মীয় নেতা ও সংস্কারকদের মধ্যে যারা সরকারে তাদের প্রভাব জোরদার করছে তাদের মধ্যে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের নেওয়ার হুমকি দিলেও তিনি আশা করেন যে, পরিস্থিতি উত্তপ্ত যুদ্ধের দিকে গড়াবে না। এমন নয় যে, পেজেশকিয়ান বা ইরানের অন্যরা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে ভয় পায়। অবশ্য, ইরানের সবাই সচেতন যে, শত্রুরা অনেক শক্তিশালী এবং যুদ্ধ ইরানিদের জন্য কঠিন হবে।

তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে: এই যুদ্ধ থেকে ইরান কী পাবে? সর্বোপরি, এটা স্পষ্ট যে ইসরায়েল ইরানকে যুদ্ধে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা যদি ঘটে তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার চারপাশের সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার এবং তার অবস্থানকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য অর্জন করবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকেও যুদ্ধে জড়াবেন, যা বাইডেন প্রশাসনের জন্য গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করবে।

তবে ইরান আসলে যুদ্ধ করতে চায় না। ইরানকে আগে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে, জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নতি করতে হবে, পুনরায় অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া এসসিও এবং ব্রিকসের মতো জোটগুলোতে যোগদানের মাধ্যমে এই অঞ্চলে তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসারিত করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে ইরানকে তাকে একঘরে করার পশ্চিমা প্রচেষ্টাকে দুর্বল করতে হবে। এই সবকিছুই ইসরায়েলের জন্য বড় সমস্যা।

তথ্যসূত্র: আরটি

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত