দুই সপ্তাহও নেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের; এর মধ্যে প্রধান দুই প্রার্থীর চাপান-উতোর উঠেছে চরমে। শেষ বেলায় এসে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে বসলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসাবে পরিচিত পেনসিলভেনিয়ার ডেলাওয়ার কাউন্টিতে সম্প্রতি ট্রাম্প সম্পর্কে এই মন্তব্য করেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ।
কমলা হ্যারিস বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী অস্থিরমতির মানুষ, যার অস্থিরতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত বাড়ছে।
ডেলাওয়ার কাউন্টির টাউন হলের বুধবারের ওই সভায় কমলা হ্যারিসকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ মনে করেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তো তাই মনে করি।”
হ্যারিস আরও বলেন, ভোটারদের যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার, এমন একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে করা উচিৎ নয়, যিনি হিটলারের প্রশস্তি করেন।
ট্রাম্প এক মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার সময়ে হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফের দায়িত্বে থাকা জেনারেল জন ক্যালির এক বক্তব্য ধরেই ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট বলেছেন কমলা।
জন কেলি বলেছিলেন, হিটলারের সেনা কমান্ডাররা তার প্রতি যেমন অনুগত ছিলেন, ঠিক তেমন অনুগত জেনারেল তার কাছে নেই বলে আফসোস ছিল ট্রাম্পের।
ভিয়েতনাম ও ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনা কর্মকর্তা কেলি সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলে ফেলেন, নাৎসি স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলার ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন ট্রাম্প।
“ট্রাম্প মনে করেন, হিটলার ভালো কাজও করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পরিবর্তে অ্যাডলফ হিটলারের জেনারেলদের তিনি চান।”
হিটলারের জেনারেলদের তারিফও ট্রাম্প করতেন বলে কেলি জানান। আর একেই ট্রাম্পের ‘কর্তৃত্ববাদী মানসিকতার’ প্রমাণ হিসাবে দেখছেন কমলা হ্যারিস।
তিনি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ও অস্থির মানুষ। তিনি অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতাকাঠামো চান। যে কাঠামো তার আদেশ মান্য করবে। এমনকি আইন লঙ্ঘন করতে বললে তারা তাও করবে।”
“কেলির সাম্প্রতিক মন্তব্যে এটাই বোঝায়, ট্রাম্প এমন কোনও সেনাবাহিনী চান না, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল,” বলেন কমলা হ্যারিস।
৫ নভেম্বর নির্বাচনে সঠিক প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভোটারদের উদ্দেশে হ্যারিস বলেন, “আমরা জানি, ডোনাল্ড ট্রাম্প কী চান। তিনি অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা চান। নির্বাচনের আর ১৩ দিন বাকি। এই সময়ের মধ্যে জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা ট্রাম্পের মতো শাসককে চান কি না?
“মোদ্দা কথায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কল্যাণ ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”
তথ্য সূত্র : ফার্স্ট পোস্ট, সিএনএন