বিদেশে অবস্থানরত বেশিরভাগ ভারতীয়দের কাছে আকাঙ্ক্ষিত চাকরি দুইটি। হয় কোনও একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়া নতুবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাপূর্ণ কোন পদে থাকা। সেটা হতে পারে শিক্ষকতা কিংবা গবেষণা। কিন্তু এমন প্রচলিত ধারা ভেঙ্গে ইউটিউবার জারা দার যুক্ত হলেন অনলি ফ্যান্স-এর মতো অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট ভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর এ জন্য পিএইচডি গবেষণা ছেড়ে দিতে হয় এই আইটি এক্সপার্টকে।
সম্প্রতি জারা, লিঙ্কডইনে এক ভিডিও শেয়ার করেন। যেখানে তিনি একাডেমিক ক্যারিয়ার ত্যাগ করে অনলি ফ্যান্স-এ যোগ দেওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
ভিডিওতে জারা স্বীকার করেছেন, একাডেমিক অঙ্গনের মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত তার জন্য অসম্ভব কঠিন ছিল।
তিনি বলেন, “সিদ্ধান্তটা নেওয়ার জন্য অনেক কেঁদেছি। ভীষণ চাপের মধ্য দিয়ে গেছি তখন।”
বেছে নেওয়া এই নতুন পেশা তার জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে ভাবি, অনলি ফ্যান্স- এ যোগ দেওয়াটা জুয়া খেলা হয়ে গেল কিনা।”
জারার মতে, একটা গতানুগতিক এবং নিশ্চিন্ত জীবন আকর্ষণীয় হতেই পারে। তবে এতে অনেক ছাড় দিতে হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “বহু প্রতিভাবান অন্য কারও স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যান। তাদের গোটা জীবন একটা কোম্পানির জন্য কাজ করতে করতে খরচ হয়ে যায়। এমন অনেক কাজ করতে হয় তাদের যেগুলো তারা সবসময় উপভোগও করেন না।”
জারা অবশ্য বুঝতে পারছেন নতুন এই পেশা তাকে স্থিতিশীলতা নাও দিতে পারে। তবে তিনি মনে করেন, এই পেশা তাকে দিতে পারে খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটো বিষয়। একটি হলো- নিজের কাজের ওপর সম্পূর্ণ অধিকার আর আরেকটি হলো স্বাধীনতা।
তার মতে, “এখন আমি আর একাডেমিক কোন সত্ত্বা বা কর্পোরেট অফিসের ঘেরাটোপে সীমাবদ্ধ নই।”
জারা জানান, তিনি হেয়ালের বশে মূল পেশার পাশাপাশি স্রেফ মজা হিসেবে অনলি ফ্যান্স- এ যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষে দেখা যায়, তার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি লাভজনক হয়ে ওঠে তার অনলি ফ্যান্স অ্যাকাউন্ট। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আয় করেন এক মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
তিনি বলেন, “এখন আমার একটি পোর্টফোলিও রয়েছে। শিগগিরই একটি বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছি।”
আইটি নিয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের জায়গা সিলিকন ভ্যালি। কিন্তু জারা সিলিকন ভ্যালির ভিন্ন এক দিক তুলে ধরলেন। তিনি বলেন, “চকচক করলেই সোনা হয় না।” সিলিকন ভ্যালিতে কাজের সুযোগ আছে এটা সত্য, কিন্তু অসম্ভব মেধাবী অনেকেই সেসব আইটি জায়ান্টদের ছায়ায় একজন চাকুরে হয়েই জীবন কাটায়।
জারা তার ভিডিওটি শেষ করেন আশাবাদী মন্তব্য দিয়ে। তিনি বলেন, “আমি যে জীবন বেছে নিয়েছি, তা একটি চলমান মাস্টারপিসের। আমার প্রতিটি সিদ্ধান্তে, মুখোমুখি হওয়া প্রতিটি চ্যালেঞ্জে, প্রতিটি সফলতায় থাকে আমারই প্রতিচ্ছবি। এখানে কোনও নিশ্চয়তা নেই, আর এটাই আমার কাজকে আনন্দময় করেছে।”