Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

দখল করবেন? আমরা ললিপপ খাব না, জবাব মমতার

mamata-banerjee
[publishpress_authors_box]

বাংলা বিহার উড়িষ্যা নিয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভির বক্তব্যের জবাব দিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার তিনি বিধানসভায় বলেন, “যারা বলছেন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা দখল করবেন, তারা ভালো থাকবেন। আপনার সেই ক্ষমতাও নেই। আর ভাববার কোনও কারণ নেই যে আমরা বসে ললিপপ খাব। আমরা যথেষ্ট সক্রিয় ও ধৈর্য্যের পরীক্ষা দেই। আমরা সবাই সবাইকে রক্ষা করব।”

নয়া দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এর মধ্যেই গত রবিবার বাংলাদেশের মানুষ দিল্লি ‘আগ্রাসন প্রতিরোধে প্রস্তুত’ আছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারত চট্টগ্রাম দাবি করলে বাংলা বিহার উড়িষ্যা ফেরত দিতে হবে। ফাঁপা আওয়াজ দিলে হবে না।

ঢাকার নয়াপল্টনে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা শুরুর আগে এসব কথা বলেন তিনি।

এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েই সোমবার মমতা বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দলীয় বিধায়কদের মন্তব্য করা থেকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি সতর্ক করে দিয়েছেন, উসকানিমূলক মন্তব্য যেন সীমান্ত এলাকার শান্তি নষ্ট না করে।

বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, “প্রতিবেশী দেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিষয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টান কেউ দাঙ্গা শুরু করে না। দাঙ্গা শুরু করে সমাজবিরোধী চক্র। আমাদের এমন কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়, যা বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে। আমি খুশি যে, এখানে হিন্দু ও মুসলিম সংখ্যালঘু উভয়েই বাংলাদেশে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এটি আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ।”

তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু নেতারা একটি মিছিল বের করতে চেয়েছিলেন। আমি তাদের তা করতে নিষেধ করেছি। অনেকে এ ধরনের সুযোগ কাজে লাগায়। তারা নতুন দাঙ্গা শুরু করতে পারে। আমরা দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই। হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও খ্রিস্টানের রক্ত এক।”

তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমের একটি অংশকে সংযত থাকতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “এটি উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান নয় যে, আমরা আপনাকে নিষিদ্ধ বা গ্রেপ্তার করব। তবে আমি অনুরোধ করছি। অনেক ভুয়া ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। উভয় সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

“যারা এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইছেন, তারা মনে রাখুন এটি আপনার রাজ্য এবং সেখানকার বন্ধুদেরও ক্ষতি করবে।”

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপি ও দলের শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন। তিনি বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন। এর মাধ্যমে তিনি বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের সমর্থন দৃঢ় করতে চাইছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে বিরোধী দলনেতা বা বিজেপির নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে এটি প্রধান বিরোধী দলের প্রচারকে দুর্বল করার একটি চেষ্টা। পাশাপাশি উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে শাসক দলের সংযত ও দায়িত্বশীল ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রয়াসও এটি।

এদিকে ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে আগামী বুধবার ‘লং মার্চের’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন– যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

সোমবার সকালে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিন সংগঠনের পক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত