ছাত্র-জনতার তীব্র গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন ফেডারেশনে সংস্কারের ডাক দিয়েছে খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকেরা। সেই ধারাবাহিকতায় গত কিছুদিন ধরে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের পদত্যাগের দাবি করে আসছে বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস গ্রুপ। বাফুফে ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছে গ্রুপটি।
সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার মতিঝিল বাফুফে ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাজী সালাউদ্দিন ও মাহফুজা আক্তার কিরণের পদত্যাগ চাইলেন জাতীয় দলের সাবেক নারী ফুটবলাররা। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের শুরুটা যার হাত ধরে হয়েছে সেই সংগঠক ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত খেলোয়াড় কামরুন নাহার ডানা এই আন্দোলনের মূল উদ্যোক্তা।
সাবেক এই ব্যাডমিন্টন তারকা বলেন, “ফুটবল ফেডারেশন যেন সালাউদ্দিন-কিরণের ফেডারেশন। তিনি নিজের স্বার্থ ছাড়া কোনও কাজ করেননি। বাফুফেতে রাজনৈতিকীকরণ হয়েছে। দুর্নীতি হয়েছে। বাফুফের নির্বাচনে যারা কাউন্সিলর হয়েছে, তারা আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যারা পালিয়ে বেড়ায়, তারা যেন ক্রীড়াঙ্গনে না আসে। আমরা ফুটবলের বৃহত্তর স্বার্থে পরিবর্তন চাই। আমরা আশা করব, বাফুফেকে ঢেলে সাজানো হবে।”
বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যের শিকার হয়ে জাতীয় দলে ধারাবাহিকভাবে খেলতে পারেননি ডালিয়া। একই সঙ্গে হ্যান্ডবল খেলা ডালিয়া শেষ পর্যন্ত ফুটবলটা ছেড়েই দিয়েছিলেন। সেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে ডালিয়া বলেন, “জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক থাকার পরও আমাকে নারী ফুটবলের কোথাও রাখা হয়নি। তারা সব কুক্ষিগত করে রেখেছে। আপনি (মাহফুজা আক্তার) চুরি ছাড়া আর কিছু করেননি। আপনি ভালোবাসেন আপনার চেয়ার।”
টাকা নেই এমন অজুহাতে গত বছর মার্চ মাসে বাফুফে অলিম্পিক বাছাইয়ে খেলতে পাঠায়নি সাবিনা খাতুনদের। এই দায়টা কিরণের ওপর চাপিয়ে ডালিয়া বলেন, “অলিম্পিক বাছাই খেলতে পাঠানো হয়নি আমাদের মেয়েদের। কত টাকা মেরে খেয়েছেন? এবার পদ থেকে সরে যান আপনি।”
সারা বছর বাফুফে ভবনের চার তলায় চলে নারী ফুটবলারদের আবাসিক ক্যাম্প। কিন্তু এই ক্যাম্পেও নির্যাতনের শিকারের অভিযোগ আছে নারী ফুটবলারদের ওপর। সেই বর্ণনা দিয়ে ডালিয়া বলেন, “বাফুফে ভবনের চারতলায় মেয়েদের রাখা হয়েছে, এটা যেন বন্দিশালা। মেয়েরা কী খাচ্ছে, জানতে দেওয়া দেওয়া হয় না। মেয়েদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। এই মেয়েরা একদিন এই ভবন থেকে বেরিয়ে হয়তো সত্যটা প্রকাশ করবে।”
বাফুফে ভবনে নারী ফুটবলারদের খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, “ বাফুফের ক্যাম্পে থাকা এরা ছোট ছোট মেয়ে। আওয়াজ তুলতে ভয় পায়। এক মেয়ে বলেছিল, বারবার কেন পাঙাশ মাছ খাওয়ানো হয়? এটা বলার কারণে ওকে শাস্তি দেওয়া হয়।”