Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

দুই প্রকল্পে ৮৫ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক

ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংক সদরদপ্তর।
ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংক সদরদপ্তর।
[publishpress_authors_box]

চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা জোরদারে গৃহীত দুই প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে ৮৫ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এই অর্থের পরিমাণ ১০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা।

এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে ৬৫ কোটি ডলার বা ৭ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক। আর কম আয়ের মানুষের জন্য ‘সামাজিক সুরক্ষা জোরদারকরণ’ কর্মসূচিতে দিচ্ছে বাকি ২০ কোটি ডলার বা ২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।

বুধবার এ বিষয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক সদরদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, ঋণ চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার ছিদ্দিকী এবং বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে ড. গেইল মার্টিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারও উপস্থিত ছিলেন।

বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়নে এই অর্থায়ন বিশ্ব ব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) এর কম সুদের ঋণের তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। অর্থাৎ ৫ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছরে মোট ২ শতাংশ সুদসহ এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন আবাসিক প্রতিনিধি গেইল মার্টিন বলেন, “টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে টিকে থাকতে হলে প্রতি বছর বাংলাদেশকে শ্রমবাজারে প্রবেশকারী প্রায় ২০ লাখ যুবকের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।

“সে হিসাবে এই অর্থায়ন প্যাকজেটি বাংলাদেশের জন্য একটি গেমচেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে। একইসঙ্গে এই আর্থিক সহায়তা বাণিজ্য ও রপ্তানি সক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে।”

অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব শাহরিয়ার ছিদ্দিকী বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং দেশের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যে একটি শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্ব রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো দেশের জলবায়ু স্থিতিশীলতা এবং একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।”

বে টার্মিনাল প্রকল্প

বাংলোদেশ সরকার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সক্ষমতা বাড়াতে ‘বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প নিয়েছে। গত রোববার প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ধরেই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার সেই অর্থায়নের চূড়ান্ত স্বাক্ষর হলো। প্রকল্পটিতে বিশ্ব ব্যাংক ৬৫ কোটি ডলারের বা ৭ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে।

সন্দ্বীপ চ্যানেলে এই বে টার্মিনাল নির্মিত হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের পশ্চিমে, ঢাকাগামী সড়কের কাছাকাছি এই টার্মিনালের অবস্থান। নতুন এই টার্মিনালে বাংলাদেশের ৩৬ শতাংশ কন্টেইনার উঠানো-নামানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পরিবহন খরচ ও সময় কমিয়ে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানো হবে। প্রকল্পটির আওতায় কর্ণফূলী নদীর নাব্য বাড়াতে ব্যাপকভাবে ডেজিং করা হবে, যাতে মাদার ভেসেল বা বড় আকারের পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি বন্দরে ভিড়তে পারে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাহাজের পণ্য খালাসের সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে, যাতে দৈনিক প্রায় ১০ লাখ ডলার সাশ্রয় হবে বলে মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক।

এসএসপিআইআরআইটি প্রকল্প

বিশ্ব ব্যাংক ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ‘স্ট্রেনদেনিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর ইমপ্রুভড রেজিলিয়েন্স, ইনক্লুশন, অ্যান্ড টার্গেটিং (এসএসপিআইআরআইটি) প্রকল্পে। প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশের ৪৫ লাখ কম আয়ের মানুষকে নগদ অর্থ প্রদান ও জীবিকা নির্বাহের পরিষেবা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বেকার যুবক, প্রতিবন্ধী, নারী এবং জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের শ্রমিকদের বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে। সুবিধাভোগীদের নির্ভুল তালিকা করা হবে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে বিতরণ ব্যবস্থাকে আধুনিক করা হবে, যাতে সবচেয়ে কম আয়ের মানুষরা সহায়তা পায় এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ধাক্কা কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা যায়।

বিশ্ব ব্যাংক জানায়, প্রকল্পটির মাধ্যমে নগদ সহায়তার পাশাপাশি বেকার যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে উদ্যোক্ত সৃষ্টির জন্য ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ লোকের চাকরির প্রস্তুতি এবং আয় উপার্জনের ক্ষমতা বাড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত