সংবাদ সম্মেলনে ঢুকেই যেন যুদ্ধংদেহী মনোভাব কোচ হাভিয়ের কাবরেরার। এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিককে ইতি উতি করে খুঁজতে লাগলেন। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে হারের পর সমালোচনা করেছিলেন ওই সাংবাদিক। শনিবার মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারানোর তাকে পাল্টা দেওয়ার জন্যই খোঁজেন কোচ।
মালদ্বীপের বিপক্ষে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ? এই সাফল্যের রহস্য কি? এই প্রশ্নের জবাবে কোচের উত্তর, “আপনারা প্রথম ম্যাচে আমাদের চমৎকার ফুটবল দেখেননি? আমার মনে হয়, এই ম্যাচের চেয়ে প্রথম ম্যাচে আমরা আরও বেশি ভালো খেলেছিলাম। আজকের চেয়ে সেদিন বেশি সুযোগ তৈরি করেছিলাম। সেই একই মনোভাব, প্রাণশক্তি, মানসিকতা নিয়েই আমরা নেমেছিলাম, আপনারা শুধু এই দলকে সমালোচনা করতে চান, যা পুরোপুরি অন্যায়।”
মালদ্বীপকে হারানোর আত্মবিশ্বাস ছিল কোচের, “প্রথম ম্যাচে আমরা যে মনোভাব নিয়ে খেলতে নেমেছিলাম, আমি মনে করি, দ্বিতীয় ম্যাচেও আমাদের মনোভাবে খুব বেশি পার্থক্য ছিল না। একই পরিকল্পনা, আক্রমণ শাণানোর উপায় একই ছিল। শুরুতে আমরা একটু ভুগেছি, চাপের মুখে প্রাণশক্তির একটু কমতি ছিল। যেটা প্রথম ম্যাচেও ঘটেছিল। কিন্তু তারপরও আমরা একইভাবে আক্রমণ করেছি, দ্বিতীয়ার্ধে ছেলেরা তাদের জাত চিনিয়েছে। এখানে যারা আছে, তারা কেউ বিশ্বাস করেনি (দল জিতবে), প্রথম ম্যাচের পর তারা সমালোচনা করেছিল, কিন্তু আমরা সবাই বিশ্বাস করেছিলাম, আমরা জিতব।”
তিন বছর ধরে বাংলাদেশের দায়িত্বে হাভিয়ের কাবরেরা। আগামী ডিসেম্বরে চুক্তি শেষ হচ্ছে এই স্প্যানিশ কোচর। এটাই তার চুক্তির মেয়াদে শেষ ফিফা উইন্ডো। তাই জয়ে রাঙাতে পেরে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন কোচ, “অবশ্যই এটা স্বস্তির। প্রথম ম্যাচও আমরা জিততে পারতাম। অবশ্যই এটা স্বস্তির। দলের সবাই জিততে চেয়েছিল। জয়ের প্রয়োজন ছিল আমাদের। আমরা জানতাম, এই ছেলেদের নিয়ে আমরা জিততে পারব।”
তিন বছর ধরে বাংলাদেশ ফুটবল দলের দায়িত্বে স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। বাফুফের সঙ্গে তার বর্তমান চুক্তি শেষ হচ্ছে চলতি বছরেই। বাংলাদেশের পথচলা এবং সামনে তার ভবিষ্যত নিয়ে বলেন,‘ আমি বাংলাদেশে কাজ করতে পেরে সন্তুষ্ট। বাফুফের আচরণেও আমি খুশি। এখন নতুন কমিটি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত। ’
নভেম্বর উইন্ডোতে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে পট তিনে জায়গা করে নেয়া। হোম ম্যাচের একটিতে জয় ও আরেকটিতে হারে সেই সম্ভাবনা দেখছেন না বাংলাদেশের কোচ,‘“বাংলাদেশের পট তিনে থাকার আর সম্ভাবনা নেই।”
চলতি বছরে বাংলাদেশ আটটি ম্যাচ খেলেছে। আট ম্যাচে বাংলাদেশের ছয়টি হার ও দু’টি জয়। ২০২৪ সালে পর্যালোচনা করলেন কোচ এভাবে, “খুব খুশি নই। আমরা আরেকটি ম্যাচে জয়ের জায়গায় ছিলাম। বিশেষ করে ভূটানের দু’টিই জেতা উচিত ছিল। ”
এ দিন ম্যাচ দেখতে কিংস অ্যারেনায় এসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালও এসেছিলেন। বাফুফে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, একাধিক সহ-সভাপতিও ছিলেন।