Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

বাংলাদেশ পৃথিবীর আশার বাতিঘর হতে চায় : ড. ইউনূস

কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
[publishpress_authors_box]

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন যেভাবে নিজেকে পরিবর্তিত করছে, তা বিশ্ববাসীকেও পথ দেখাবে।

কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে। এটি এমন এক চুক্তি যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ঐতিহ্য, ন্যায়বিচার, মর্যাদা এবং সুযোগের ভিত্তিতে একটি ভবিষ্যৎ একত্রে গড়ে তুলবে।

“আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই এবং আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য। পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা অন্বেষণ করতে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়ক।”

এই সামাজিক চুক্তিতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়ন মৌলিক বিষয় হিসাবে বিবেচিত হবে জানিয়ে একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ ও টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা বলেন ড. ইউনূস।

কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তবে সেই পথে বাধার থাকার বিষয়টিও তুলে ধরে তিনি বলেন, “এমন নানা হুমকি রয়েছে, যা আমাদের উন্নয়নকে বিপথে ঠেলে দিতে পারে। আমরা এমন এক সময় পার করছি, যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীরতর হচ্ছে। নতুন নতুন নীতিমালা, প্রযুক্তি এবং শাসন পদ্ধতি আমাদের পৃথিবীকে দ্রুত রূপান্তরিত করছে, যা অতীতের অনেক অনুমানকে অচল করে দিচ্ছে।”

এই প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজন আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।”

বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন, আমরা সাহসী হই। একটি এমন পৃথিবী গড়ি, যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র না হয় যে সে স্বপ্ন দেখতে না পারে, এবং কোনও স্বপ্ন এত বড় না হয় যে তা অর্জন করা যায় না।

সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, তা গুরুত্বপূর্ণ মেনে নিয়েই প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “কিন্তু আমাদের উদ্ভাবন, সহমর্মিতা এবং সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের সক্ষমতাও ব্যাপক।”

কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কাতারের দোহায় মঙ্গলবার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বক্তব্যে তিনি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন।

ড. ইউনূস বলেন, কাতার যেভাবে আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে, তা দেখাচ্ছে কীভাবে একটি দেশ উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারত্বের মাধ্যমে জলবায়ু সঙ্কট, সামাজিক বৈষম্য ও কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ মোকাবেলা করতে পারে।

তিনি কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে সময়োপযোগী ও চমৎকার এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

দোহায় আজ শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত