‘চ্যাম্পিয়ন অনেকে তবে নাদাল একজনই’- রাফায়েল নাদালের প্রশংসায় একবার বলেছিলেন টেনিস কিংবদন্তি রড লেভার। সেই নাদাল গতমাসে জানিয়েছিলেন ডেভিস কাপ খেলে তুলে রাখবেন র্যাকেট।
অবসরের ক্ষণটা এসেই গেল শেষ পর্যন্ত। ক্লে কোর্ট-এর রাজার আলো ঝলমলে ক্যারিয়ারটা শেষ হলো মঙ্গলবার মালাগায় নেদারল্যান্ডসের বটিন ফন ডি জ্যান্ডসকাল্পের কাছে ৬-৪, ৬-৪ গেমে হেরে।
এককে সতীর্থ আলকারাজ জিতলেও ডাবলসে হেরে যাওয়ায় বিদায় নেয় স্পেন, সে সঙ্গে ঘরের মাঠের দর্শকদের সামনে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় নাদালেরও।
নাদালের ক্যারিয়ার
১০৮০টি এককে জয়
৯১২ সপ্তাহ র্যাঙ্কিয়ে সেরা দশে থাকা
২০৯ সপ্তাহ র্যাঙ্কিয়ে এক নম্বরে থাকা
৯২টি একক শিরোপা
৬৩টি একক শিরোপা শুধু ক্লেতে
৩০টি গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনাল খেলা
২২টি গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা জয়
নাদালকে অভিবাদন জানাতে গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এসেছিলেন তার বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে, পরিবার আর বন্ধুরা। তাদের সামনেই চোখ মুছতে মুছতে ২২ গ্র্যান্ড স্লামজয়ী এই কিংবদন্তি বলছিলেন, ‘‘আমি নিজের স্বপ্নগুলো পূরণ করেছি। কখনও কল্পনাও করিনি অর্জন করেছি এমন অনেক কিছু। শিরোপা আর সংখ্যাগুলো আছেই তবে আমি পছন্দ করব মায়োর্কার ছোট্ট গ্রামের ভালো একজন মানুষ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকতে।’’
বিদায়ী বার্তায় নাদাল আরও বলেন, ‘‘অবশ্যই এটা আবেগের দিন ছিল, আমি স্নায়ুর চাপে ভুগছিলাম ম্যাচের আগে। আমার পাশে এতদিন যারা ছিলেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। টেনিসের একজন ভালো দূত হিসেবে থাকতে চাই, সারাজীবন আসলে এটাই করার চেষ্টা করেছি।’’
তার বন্ধু ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রজার ফেদেরার খোলা চিঠিতে আগেই জানিয়েছিলেন অভিবাবান, ‘‘রাফা, তুমি কি জানো খেলাটিকে আরও বেশি উপভোগ করেছি শুধু তোমার জন্য। মায়োর্কা থেকে অবিশ্বাস্য এক খেলোয়াড় এসেছে, প্রজন্মান্তরের প্রতিভা, একদিন হয়তো গ্র্যান্ড স্লাম জিতবে—এগুলো শুধু মুখের কথা ছিল না।’’
রজার ফেদেরারের মতো শিল্পী নন। নিখুঁত নন নোভাক জোকোভিচের মতোও। তবু ‘পাওয়ার টেনিস’-এ সর্বকালের সেরাদের অন্যতম রাফায়েল নাদাল।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস গবেষক জন ইয়ানডেল উচ্চ ক্ষমতার ক্যামেরা আর বিশেষ সফটওয়্যারে গবেষণা করেছিলেন, এক জন খেলোয়াড়ের ফোরহ্যান্ড প্রতিপক্ষের কাছে পৌঁছনো পর্যন্ত টেনিস বল কত বার ঘোরে।
He came.
— Tennis TV (@TennisTV) November 19, 2024
He saw.
He conquered.
Every single championship winning moment in the legendary career of @RafaelNadal 🏆 ✨ pic.twitter.com/LU5r0azOTf
পিট সাম্প্রাস আর আন্দ্রে আগাসির বেলায় সেটা ছিল মিনিটে ১৮০০ থেকে ১৯০০ বার। রজার ফেদেরারের বেলায় মিনিটে ২৭০০ বার। আর নাদালের বেলায় সবচেয়ে বেশি ৪৯০০ বার! গড়ে সেটা ৩২০০ বার।
এজন্যই ক্লে কোর্টে কেউ পেরে উঠত না নাদালের সঙ্গে। ফ্রেঞ্চ ওপেনে সর্বোচ্চ ১৪বার ট্রফি উঁচিয়ে তোলা এই কিংবদন্তিকে মিস করবে পুরো ক্রীড়াঙ্গনই। যিনি বারবার চোটে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন যোদ্ধার মতো।