যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজের সোশাল মিডিয়া ট্রুথ সোশালে শনিবার এক পোস্টে জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান “সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে” সম্মত হয়েছে।
ট্রাম্প একথা জানানোর পর ভারত ও পাকিস্তান শনিবার বিকাল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথাও নিশ্চিত করেছে।
ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি দীর্ঘ রাতের আলোচনার পর, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ভারত ও পাকিস্তান সম্পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
উভয় দেশকে অভিনন্দন জানাই যুক্তিবোধ ও অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য। এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ!”
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান “তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং নিরপেক্ষ কোনও স্থানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার সূচনা করবে।”
সোশাল মিডিয়া এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রধানমন্ত্রী শরিফকে অভিনন্দন জানাই। তারা যে প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও রাষ্ট্রনায়কসুলভ আচরণ দেখিয়ে শান্তির পথ বেছে নিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।”
তিনি জানান, তিনি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স গত ৪৮ ঘণ্টা ভারত ও পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন। এই সময় তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান আসিম মুনির, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আসিম মালিক।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তান সবসময় এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার চেষ্টা করে এসেছে। তবে কখনও নিজের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতার সঙ্গে আপস করেনি!”
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই “স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সব ধরনের গুলি চালানো ও সামরিক অভিযান বন্ধ করবে।” এই সিদ্ধান্ত শনিবার ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে কার্যকর হয়।
ভারত নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ২৬ জন পর্যটক নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে অভিযান চালিয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ভেতরে ৯ জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
ওই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর হামলা শুরু করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। উভয়পক্ষের গোলাগুলির মধ্যেই গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার উভয়পক্ষ একে অপরকে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। শুক্রবারের হামলায় উভয়পক্ষই একে অপরের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে টার্গেট করে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, আল জাজিরা, টাইমস অব ইন্ডিয়া।