Beta
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

পাকিস্তানকে উড়িয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

Bangladesh
[publishpress_authors_box]

টি-টোয়েন্টিতে আঁধারে পথ হাতরে ফেরা বাংলাদেশ যেন উজ্জ্বল আলো খুঁজে পেয়েছে। কিছুদিন আগেও আরব আমিরাতের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের লজ্জা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ডুবিয়ে দিয়েছিল। এরপর পাকিস্তানের মাটিতে নাস্তানাবুদ হওয়ায় ক্রিকেটারদের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

সেসব দূর করে পারফরম্যান্সের দ্যুতি ছড়িয়ে সাফল্যে ফিরে এল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার মাটিতে টানা দুই ম্যাচ জিতে টি টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করে লিটন দাসের দল। এবার ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির সিরিজের প্রথম ম্যাচে পেয়েছে উড়ন্ত জয়।

রবিবার (২০ জুলাই) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টি ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের দেওয়া ১১১ রানের লক্ষ্য ২৭ বল হাতে রেখে ৩ উইকেট হারিয়ে টপকে গেছে স্বাগতিকরা। এই ফরম্যাটে পাকিস্তানেকে সর্বনিম্ন রানে আটকে দেয় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদ-মোস্তাফিজুর রহমানদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ১৯.৩ ওভারে ১১০ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা।

২০১৬ সালের পর প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে হারানোর সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ৯ বছর আগে মিরপুরেই পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে সবশেষ ম্যাচ জিতেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ওই সিরিজ বাংলাদেশ জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। এবারের জয়ে গত জুনে পাকিস্তানের মাটিতে ৩-০তে সিরিজ হারের লজ্জা ফিরিয়ে দেওয়ার পথ তৈরি করল লিটন দাসের দল।

ছোট টার্গেট, তবু মিরপুরের উইকেটে এমন লক্ষ্য অনেক সময় কঠিন হয়ে ওঠে। প্রথম ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমের ফিরে যাওয়া সেই ভয় জাগিয়ে দেয়। দুই ওভার পর অধিনায়ক লিটন দাসও ফিরলেন দ্রুত। দুই ধাক্কার পর পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয় দাঁড়িয়ে গেলেন শক্তভাবে।

৭৩ রানের জুটিতে ম্যাচ থেকে সরিয়ে দিলেন পাকিস্তানকে। হৃদয় ৩৭ বলে ২টি করে ছক্কা ও চারে করেছেন ৩৬ রান। ওদিকে ইমন ৩৯ বলে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে অপরাজিত ৫৬ রান করে ম্যাচ শেষ করেন। জাকের আলী অপরাজিত ছিলেন ১০ বলে ১৫ রানে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজের দুই ম্যাচ এবং এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরুতেই জয়- টানা তিন ম্যাচ টানা জিতল বাংলাদেশ। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে টানা তিন ম্যাচ জিতেছিল লিটন দাসরা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন রান

শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে বাংলাদেশের মিরপুর, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের বোলিং পারফরম্যান্স একই থাকল। বিপক্ষ ব্যাটারদের কাঁপিয়ে তাসকিন-মোস্তফিজদের সাফল্যে উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের বোলিং। সেই বোলিং পারফরম্যান্সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দাপট দেখালো দল। সফরকারীরা নির্ধারিত ওভারে মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়।

ইনিংসের শুরু হয় ক্যাচ মিসে। তাসকিন আহমেদ সহজ ক্যাচ ফেলে দেন। ওই ওভারে আসে ৯ রান। শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরার ক্লান্তি বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের জেঁকে ধরবে বলে মনে করতেই পারে অনেকে। অথচ, পরের ওভার থেকে শ্রীলঙ্কা দেখানো বোলিং পারফরম্যান্স ফিরিয়ে আনল বাংলাদেশ বোলাররা।

এতে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিন্ম দলীয় স্কোরে অলআউট হওয়ায় লজ্জায় পড়ল পাকিস্তান। তাসকিন আহমেদের বারুদে বোলিং আর মোস্তাফিজুর রহমানের মায়াবী কাটার পাকিস্তান ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলে দিল। মিরপুরে হাত খুলে খেলা এমনিতেই ব্যাটারদের জন্য এক স্বপ্ন।

সেই স্বপ্ন – দুঃস্বপ্ন করে তোলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ক্যারিয়ারের সিংহ ভাগ উইকেট মিরপুরেই পেয়েছেন মোস্তাফিজ। এই উইকেটে তার বোলিং সবচেয়ে কার্যকর। সেই প্রমাণ আবারও রাখলেন। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রানে দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। নিজেদের ভুলে একটি রিভিও নেননি। নয়তো তিন উইকেটে থামতেন মোস্তাফিজ।

ওদিকে তাসকিনের বিপক্ষে বড় শট খেলতে গিয়ে খেই হারিয়েছে পাকিস্তান ব্যাটাররা। ২২ রানে ৩ উইকেট তাই এই পেসারের পুরষ্কার। এছাড়া তানজিম হসান সাকিব নেন ২০ রানে ১ উইকেট।

পাকিস্তান ইনিংসে মাত্র তিনজন দুঅঙ্কের ঘরে রান তোলেন। সর্বোচ্চ ফখর জামান ৪৪ অবশ্য দুইবার জীবন পেয়েছেন তিনি। এছাড়া আব্বাস আফ্রিদি ২৪ বলে ২২ ও খুশদিল শাহ ২৩ বলে ১৭ রান করন।

দশম ম্যাচে এসে টস জিতলেন লিটন

অবশেষে টস জিতলেন অধিনায়ক লিটন দাস। টানা ৯ ম্যাচ পর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে সিদ্ধান্ত জানানোর সুযোগ পেয়েছেন তিনি। পূর্ণকালীন অধিনায়ক হয়ে প্রথম টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন লিটন।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জেতা ম্যাচের একাদশ থেকে মাত্র একটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামের জায়গায় একাদশে জায়াগ পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ।

শ্রীলঙ্কার মাটিতে এবার ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। লিটনের নেতৃত্বে যেকোনও ফরম্যাটে প্রথমবার সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। সেই সুখস্মৃতি সঙ্গী করে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেমেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ: পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, জাকের আলী, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।

পাকিস্তান একাদশ: ফখর জামান, সাইম আয়ুব, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটকিপার), হাসান নওয়াজ, সালমান আগা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নওয়াজ, খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফ, আব্বাস আফ্রিদি, সালমান মির্জা, আবরার আহমেদ।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত