Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫

সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন হাঙ্গেরির লাসলো ক্রাসনাহোরকাই

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই
[publishpress_authors_box]

এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন হাঙ্গেরির লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই।

বিবিসি জানিয়েছে, র‌য়্যাল সুইডিশ একাডেমি বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেলজয়ী হিসেবে লাসলো ক্রাসনাহোরকাইর নাম ঘোষণা করে জানিয়েছে, তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে “তার মনোমুগ্ধকর ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সাহিত্যকর্মের জন্য, যা প্রলয়ঙ্করী আতঙ্কের মাঝেও শিল্পের শক্তির বিষয়টি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।”

পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার পাবেন ক্রাসনাহোরকাই। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা হান কাং তার উপন্যাস ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ এর জন্য প্রথম কোরিয়ান হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই পাঁচটি উপন্যাস লিখেছেন। অসংখ্য সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালের ম্যান বুকার আন্তর্জাতিক পুরস্কার। সাতানটাঙ্গো উপন্যাসের জন্য ২০১৩ সালে কথাসাহিত্যে সেরা অনুদিত বইয়ের পুরস্কার পান তিনি। পোস্টমডার্ন এই উপন্যাস লেখা হয় পৃথিবীর সমাপ্তি নিয়ে।

হাঙ্গেরির দ্বিতীয় লেখক হিসেবে লাসলো ক্রাসনাহোরকাই সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতলেন। এর আগে ২০০২ সালে এই পুরস্কার পান হাঙ্গেরির প্রয়াত ইমরে কেরতেস।

নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, লাসলো ক্রাসনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রোমানিয়া সীমান্তের কাছে ছোট শহর গিউলায় জন্মগ্রহণ করেন। এমন এক দূরবর্তী গ্রামীণ এলাকা নিয়েই লেখা তার প্রথম উপন্যাস সাতানটাঙ্গো (প্রকাশিত ১৯৮৫ সালে, ইংরেজি সংস্করণ ২০১২), যা হাঙ্গেরির সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং তার লেখক জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই

প্রতি বছরের মতো, এ বছরও চিকিৎসা বিজ্ঞানের পুরস্কার দিয়েই নোবেল পুরস্কার সপ্তাহের সূচনা হয়েছে। মোট ছয়টি নোবেল পুরস্কার দেওয়া হবে, প্রতিটি আলাদা ক্ষেত্রের অসাধারণ অবদানের জন্য।

গত সোমবার ঘোষণা করা হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের নোবেল। ‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ সংক্রান্ত যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন মেরি ই. ব্রানকো, ফ্রেড রামসডেল ও ড. শিমন সাকাগুচি। এই তিন গবেষক ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার, অর্থাৎ প্রায় ১ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবেন।

২০২৪ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছিলেন ভিক্টর অ্যামব্রস ও গ্যারি রুভকুন। তারা ‘মাইক্রোআরএনএ’ নামের এক ক্ষুদ্র আরএনএ অণুর শ্রেণি আবিষ্কার করেছিলেন, যা জীবের বৃদ্ধি, কার্যপ্রণালী এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে তার ত্রুটির পেছনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

পদার্থবিজ্ঞানে অবদানের জন্য এবার জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. ডেভোরে ও জন এম. মার্টিনিস মিলিতভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। মঙ্গলবার সুইডেনে এই তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি।

বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন গবেষক এমন এক বিস্ময়কর কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন যা দেখিয়েছে, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের দুটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য, যা সাধারণত পরমাণু বা উপপরমাণু জগতের শাসনব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত, তা মানুষের খালি চোখে দেখা যায় এমন বড় এক ব্যবস্থাতেও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। তারা ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার) পুরস্কার ভাগাভাগি করবেন।

২০২৪ সালে জন জে. হপফিল্ড ও জিওফ্রি ই. হিন্টন যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তারা এমন কিছু আবিষ্কারের জন্য সম্মানিত হন, যা কম্পিউটারকে মানুষের মস্তিষ্কের মতো শেখার ক্ষমতা দিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই বিকাশের মৌলিক ভিত্তি তৈরি করেছে।

বুধবার ঘোষণা করা হয় রসায়নে নোবেল বিজয়ী তিন বিজ্ঞানীর নাম। সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর ইয়াঘি এই সম্মান পেয়েছেন মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস (এমওএফএস) আবিষ্কারের জন্য। এটি ছোট ছোট আণবিক কাঠামো, কিন্তু এর ভেতরে বিশাল ফাঁকা জায়গা থাকে, যেখানে অন্যান্য পরমাণু ও অণু চলাচল, প্রতিক্রিয়া বা অবস্থান করতে পারে।

গত বছর ডেমিস হাসাবিস, জন জাম্পার ও ডেভিড বেকার এই পুরস্কার পান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রোটিনের গঠন পূর্বাভাস এবং নতুন প্রোটিন উদ্ভাবনের পথ দেখানোর জন্য।

নোবেল শান্তি পুরস্কার শুক্রবার অসলোতে নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট ঘোষণা করবে। গত বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পায় জাপানের তৃণমূল সংগঠন ‘নিহন হিদানকিও’, যারা পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের জন্য কাজ করে।

সর্বশেষ আগামী ১৩ অক্টোবর সোমবার ‘অর্থনীতিতে নোবেল স্মারক পুরস্কার’ ঘোষণা করবে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। গত বছর দারন আসেমোগলু, সাইমন জনসন ও জেমস রবিনসন এই পুরস্কার পেয়েছিলেন, প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউশন কীভাবে একটি দেশের সম্পদ, সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক কাঠামো নির্ধারণ করে সেই বিষয়ে গবেষণার জন্য।

আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নোবেল পুরস্কার।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত