Beta
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রাজনৈতিক অস্থিরতা ঘনীভূত : সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেপাল

nepal 1
[publishpress_authors_box]

কাঠমান্ডু থেকে আসা মৃত্যু, ধ্বংস আর অগ্নিকাণ্ডের ছবিগুলো নেপালের সংকটকে আরও স্পষ্ট করেছে। দেশজুড়ে আটচল্লিশ ঘণ্টার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতনের পর দেশটির নিয়ন্ত্রণ এখন নেপাল সেনাবাহিনীর হাতে।

কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানিয়েছে, নতুন সরকার দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত সেনারাই শান্তি রক্ষার দায়িত্বে থাকবে। রাজধানী কাঠমাণ্ডুসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভাঙচুর, লুটপাট কিংবা ব্যক্তির ওপর আক্রমণ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নেপালের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল। তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত বছর দায়িত্ব নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী এ জেনারেল মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “আমরা আন্দোলনরত গোষ্ঠীকে আহ্বান জানাই, তারা যেন কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনার টেবিলে আসে। আমাদের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে, ঐতিহাসিক ও জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে হবে, সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ রক্ষা করতে হবে এবং সাধারণ মানুষ ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি সহিংসতায় প্রাণ হারানো ও সম্পদহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন, “নেপালের ইতিহাসের সূচনা থেকে নেপাল সেনা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা, জাতীয় ঐক্য ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সবসময় অটল থেকেছে।”

সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কিছু গোষ্ঠী বর্তমান অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষ ও সরকারি সম্পদের মারাত্মক ক্ষতি করছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর সোশাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন দুই দিনের মধ্যেই দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনে পরিণত হয়। সরকারের কঠোর দমননীতিতে সহিংসতা বেড়ে যায়।

পুলিশি অভিযানে অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। আন্দোলনকারীরা দাবি করছেন, মৃতের সংখ্যা ২১ থেকে ২২ জন হতে পারে। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে আরও বড় বিক্ষোভে রূপ নেয়।

নিজেদের ‘জেন জেড’ নামে পরিচয় দেওয়া তরুণ আন্দোলনকারীরা রাজনীতিবিদদের বিলাসী জীবনযাত্রা ও সাধারণ নেপালি মানুষের কঠিন বাস্তবতার ফারাককে সামনে আনেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের একটি অংশ সরকারি ভবন ও নেতাদের লক্ষ্য করে হামলায় জড়ায়।

প্রথমদিকে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানালেও অবশেষে কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন। কারণ আন্দোলনকারীরা তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল বুধবার কিছু আন্দোলনকারীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে, তিনি বলেছেন, “আমি সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। দেশকে আরও ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবেন না। আলোচনার টেবিলে আসুন। গণতন্ত্রে জনগণের দাবি সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব।”

এদিকে এরই মধ্যে সেনা সদস্যরা কাঠমান্ডু বিমানবন্দর ও সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবন সিংহদরবারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সীমান্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কারফিউ জারি থাকলেও অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ির মতো জরুরি সেবার যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনী স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, “যেকোনো বিক্ষোভ, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং ব্যক্তি ও সম্পত্তির ওপর আক্রমণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এতে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।”

সাধারণ মানুষসহ সাংবাদিকদের কেবল সরকারি তথ্য শেয়ার করতে এবং গুজবে কান না দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “কিছু আইনবহির্ভূত ব্যক্তি আন্দোলনের নামে ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পদে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সহিংস আক্রমণ এবং এমনকি ধর্ষণের চেষ্টা পর্যন্ত চালাচ্ছে।”

যেভাবে শুরু


নেপালে সহিংস বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল একটি বিতর্কিত সোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ বিলকে কেন্দ্র করে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছিল, ফেইসবুক, ইউটিউব, এক্সের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোকে নেপালে লিয়াজোঁ অফিস খুলতে হবে। সরকারের দাবি ছিল, এটি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এটি আসলে ভিন্নমত দমন ও সেন্সরশিপের হাতিয়ার।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করেছে, এই প্রস্তাব বাকস্বাধীনতার জন্য হুমকি তৈরি করবে। টিকটক ও ভাইবার নিবন্ধন প্রক্রিয়া মানলেও গুগল (ইউটিউব), মেটা (ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ) ও এক্স কোনও মন্তব্য করেনি।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০২৩ সালে নেপাল সরকার টিকটক নিষিদ্ধ করেছিল “সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের” অভিযোগে। পরে কোম্পানিটি স্থানীয় আইন মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। সর্বশেষ সোশাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞাও এখন তুলে নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর বুধানিলকন্ঠায় নেপালি কংগ্রেসের সভাপতি শের বাহাদুর দেউবার বাড়ি ও ললিতপুরে সিপিএন-ইউএমএল কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। জানালা ভাঙচুর, পাথর নিক্ষেপ এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।

অর্থমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলকে আন্দোলনকারীরা তাড়া করে মারধর করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেউবাও হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।

সহিংসতার জেরে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে সেখানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নেপালি রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের ছবি ও ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। সেগুলো #নেপোকিডস হ্যাশট্যাগে ভাইরাল হয়েছে। দেশের প্রতি চারজন নাগরিকের একজন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করলেও রাজনৈতিক অভিজাতদের সন্তানদের বিদেশ ভ্রমণ, দামি পোশাক, ব্যয়বহুল ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র নিয়ে আড়ম্বরপূর্ণ জীবনের ছবি জনরোষ উসকে দিয়েছে।

ছবিগুলো আসল না সাজানো, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সেগুলো ইতোমধ্যেই দুর্নীতি আর বৈষম্যের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। অনেক তরুণের কাছে এটি রাজনৈতিক পরিবারগুলোর ‘অস্পর্শনীয় সুবিধার’ প্রতিচ্ছবি।

সোশাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি ছড়ানো ছবির মধ্যে ছিল, এক মন্ত্রীর ছেলের একটি ছবি, যেখানে লুই ভুইটন ও কার্টিয়েরের বাক্স দিয়ে সাজানো ক্রিসমাস ট্রির সামনে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

অন্য এক ভিডিওতে একজন সাবেক বিচারপতির ছেলে দামি রেস্তোরাঁয় খাচ্ছেন ও একটি মার্সিডিজ গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বলে দাবি করা হয়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংগঠন সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেইটের নির্বাহী পরিচালক রাকিব নাঈক বলেন, “এলিটদের বিলাসিতা আর সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কষ্টের এই বৈপরীত্য তরুণ প্রজন্মকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে এবং আন্দোলনের কেন্দ্রীয় বর্ণনায় পরিণত হয়েছে।”


‘নেপো কিডস’ বিতর্ক পশ্চিমা বিশ্বের ‘নেপো বেবিস’ ধারণার সঙ্গে মিল আছে। সেখানে এটি ব্যবহৃত হয় সেলিব্রিটি বা প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানদের অযাচিত সুবিধা বোঝাতে। নেপালে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতি ও বৈষম্যের দীর্ঘ অভিযোগ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল নেপালকে এশিয়ার অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বারবার কেলেঙ্কারি ফাঁস হলেও খুব কম ক্ষেত্রেই অপরাধীরা সাজা পেয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে, পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে অন্তত ৭১ মিলিয়ন ডলার আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছিল সংসদীয় তদন্ত। আবার আরেক ঘটনায়, নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা ভুটান থেকে বিতাড়িত নেপালি শরণার্থীদের জন্য নির্ধারিত কোটায় যুক্তরাষ্ট্রে কাজ খোঁজা তরুণদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছে।

এসব প্রেক্ষাপটে তরুণদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। বিশেষ করে যখন কয়েকজন রাজনৈতিক অভিজাতের সন্তানদের বিশাল সম্পত্তি কেনার খবর প্রকাশ পেয়েছে। অনেকেই এসব সম্পত্তির উৎস তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।

সরকারের স্বল্পমেয়াদি সোশাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা তাই আন্দোলনকারীদের আরও ক্ষুব্ধ করেছে। তাদের মতে, এটি দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সমালোচনা নিয়ন্ত্রণের কৌশল ছাড়া কিছু নয়।

কাঠমান্ডুর সামাজিক–রাজনৈতিক কর্মী রঞ্জু দর্শনা ক্ষুব্ধ ও উৎকণ্ঠিত। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, ‘নেপো কিডস’দের বিরুদ্ধে মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভ আছে। তারা তাদের জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপন রিলস আর পোস্টে দেখায়—দামী গাড়ি, প্রাসাদোপম বাড়ি, ব্র্যান্ডেড গয়না।

“অথচ সাধারণ নেপালি তরুণেরা দিনে ১৭ ঘণ্টা কাজ করে কোনোমতে জীবিকা চালায়, ভালো চাকরির সন্ধান করে। এই ক্ষোভই বিস্ফোরিত হয়েছে নেপালের রাস্তায়। জেনারেশন জেড দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির জবাব চাইছিল। অথচ তাদের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে শিশুদের বুকের ভেতর গুলি চালানো হলো। কতটা নির্মম হলে স্কুলড্রেস পরা বাচ্চাদের গুলি করে হত্যা করা যায়? ২০টি শিশু মারা গেছে। মানুষ কীভাবে এটি মেনে নেবে?”

আন্দোলনের নেপথ্যে

এই আন্দোলনের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন সুদান গুরুং নামে এক ব্যক্তি। ৩৬ বছর বয়সী তিনি কোনও পেশাদার রাজনীতিক নন। তিনি যুবকেন্দ্রিক এনজিও হামি নেপালের সভাপতি। স্থানীয় উদ্যোক্তা থেকে ধীরে ধীরে এক অস্থির প্রজন্মের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন তিনি।

অন্নপূর্ণ এক্সপ্রেসের তথ্যমতে, গুরুং একসময় কাঠমান্ডুর জনপ্রিয় নাইটক্লাব ওএমজির মালিক ও ডিজে ছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালের ভূমিকম্প তার জীবন বদলে দেয়। প্রায় ৯ হাজার প্রাণহানির সেই দুর্যোগের পর তিনি সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে প্রায় ২০০ স্বেচ্ছাসেবককে ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্ত করেন। সেখান থেকেই শুরু তার নাগরিক আন্দোলনের পথচলা।

সাম্প্রতিক সোশাল মিডিয়া ব্ল্যাকআউটের সময় গুরুং হাজারো ছাত্রছাত্রীকে সমন্বিত করেন।

এই ভূমিকম্পে গুরুং নিজের সন্তানকে হারান। ব্যক্তিগত সেই বেদনা তাকে দুর্যোগ মোকাবিলা ও যুবসম্পৃক্ততা নিয়ে আজীবন কাজের অনুপ্রেরণা জোগায়। সময়ের সঙ্গে হামি নেপাল কেবল ত্রাণ কার্যক্রমের সংগঠন না থেকে সামাজিক সম্পৃক্ততা, দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া এবং পুনর্বাসন কার্যক্রমের বৃহত্তর প্ল্যাটফর্মে রূপ নেয়।

সাম্প্রতিক সোশাল মিডিয়া ব্ল্যাকআউটের সময় গুরুং হাজারো ছাত্রছাত্রীকে সমন্বিত করেন। তিনি তাদের স্কুলড্রেস পরে বই হাতে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিতে বলেন। এতে আন্দোলন এক প্রতীকী ও শক্তিশালী রূপ পায়। নিষেধাজ্ঞার আগে থেকেই তার সংগঠন অনলাইনে বিক্ষোভের পথ ও নিরাপত্তা নির্দেশনা প্রচার করেছিল।

মূলত কিশোর–তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভগুলোতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে নেপালি সমাজের জমে থাকা ক্ষোভ। দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতিতে অতিষ্ঠ মানুষ দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রকাশের পথ খুঁজছিল।

নেপালের স্বাধীন গণমাধ্যম বাহারখারির সম্পাদক প্রতীক প্রাধান বলেন, “সোশাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা ছিল কেবল অনুঘটক। বহুদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভ এর মাধ্যমে বিস্ফোরিত হয়েছে। মানুষ অত্যন্ত রাগান্বিত, আর নেপাল আজ ভয়াবহ অনিশ্চয়তায় রয়েছে।”

এই বিক্ষোভকে বলা হচ্ছে ‘জেন জেড আন্দোলন’। সাধারণভাবে ১৯৯৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্মকে এ নামে ডাকা হয়। মূলত সোশাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা এবং প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক বিলের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের সূত্রপাত। বিলটি এখনো সংসদে পূর্ণাঙ্গ আলোচনায় আসেনি। তবে সমালোচকদের মতে, এটি ভিন্নমত দমন ও সেন্সরশিপের হাতিয়ার।

তবে আন্দোলনকে শুধু সোশাল মিডিয়া ইস্যু দিয়ে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। এর পেছনে রয়েছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছর নেপালে যুব বেকারত্বের হার ছিল ২০ শতাংশ। অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করতে ব্যর্থতা, বড় বড় দুর্নীতি মামলায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক পরিবারগুলোর অঢেল প্রভাব তরুণদের ক্ষোভ আরও উসকে দিয়েছে।


তথ্যসূত্র : ফার্স্টপোস্ট, কাঠমাণ্ডু পোস্ট, এনডিটিভি

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত