বিসিবির নির্বাচন নিয়ে চলছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। প্রাথমিক ভোটার তালিকা নিয়েই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরকে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ৬ জেলা থেকে কোনও কাউন্সিলরের নাম প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি তামিম ইকবালের ভোটার হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছে বিসিবিতে।
বলা হয়েছে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেননি, তাই কাউন্সিলর হতে পারবেন না! অথচ হালিম শাহর স্বাক্ষরে অভিযোগ জমা পড়লেও খোদ সাবেক এই ক্রিকেটার অস্বীকার করেছেন সেটা।
তামিম অবশ্য মনে করেন তার প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। তিনি দুটি ক্লাবের কমিটিতে আছেন এবং একটি ক্লাব নিজে চালান। পাশাপাশি ঘোষণা দিয়েই অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। এ নিয়ে আজ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তামিম বললেন, ‘‘আপনারা প্লিজ গঠনতন্ত্রটা বের করে দেখেন সাবেক ক্রিকেটার লেখা আছে কিন্তু সাবেক ক্রিকেটারের কোনো ব্যাখ্যা আছে কিনা? যে আমার অফিশিয়ালি রিটায়ারমেন্ট ঘোষণা করতে হবে। বিসিবি যে ১৫ জনের তালিকা দিয়েছে (কাউন্সিলর) মোহাম্মদ আশরাফুল তো সম্প্রতি ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলে এসেছে। আমিনুল ইসলাম বুলবুল ভাই আমাদের প্রেসিডেন্ট উনিও অফিশিয়ালি কোনো জায়গায় অবসরের ঘোষণা করেননি। আপনি যদি এভাবে আমাকে ধরতে চান। আপনারাও ধরা পড়বেন। আমার কাউন্সিলরশিপ বাতিল হলে সেটা হবে লজ্জার।’’
ক্যারিয়ার জুড়ে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলা তামিম নির্বাচনের চাপ নিয়ে বললেন,‘‘আমি তো ফিয়ারলেসভাবে তো চেষ্টা করছি। চাপ আমার উপর অনেক আছে। কালকে আমার কাউন্সিলরশিপও বাতিল হয়ে যেতে পারে। কোর্টে রিট হতে পারে, মামলাও হয়ে যেতে পারে। কেন হবে আপনারা খুব ভালো করে বুঝেন।’’
সেই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওল্ড ডিওএইচএসের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই তামিমের। অথচ ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ সুজন নিশ্চিত করেছেন যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
অভিযোগ নিয়ে তামিম বলেন, ‘‘আমি সংগঠক না এটা কেউ বলতে পারবে না। দুইটা দলের কমিটিতে আছি, আরো একটা দল নিজে চালাই। চট্টগ্রামের শতদল ক্লাব আমি চালাই। গুলশান ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার পর ১ কোটি টাকা খরচ করেছি। লিটন খেলেছে এই ক্লাবে। আমার নিজেরই লজ্জা লাগতেছে আজ এখানে এসে ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে। আমরা এতটা নিচে নেমে যাচ্ছি শুধু কিছু ইচ্ছে পূরণ করার জন্য আপনারা এই পর্যায়ে নিয়ে আসতেছেন। আমি আবারও বলি সঠিকভাবে নির্বাচন করি, হেরে যাই, কে সভাপতি হোক না হোক আমার কিচ্ছু যায় আসে না। কিন্তু এই নোংরামি কইরেন না শুধু ইগো বা জেতার জন্য।’’
এমনটা চলতে থাকে তামিম কী নির্বাচনে অংশ নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তো এখন এই জিনিসটা বলতে পারব না। ব্যক্তিগতভাবে আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন আমি নির্বাচন করবো কী করবো না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমাকে নির্বাচন করতে দিবে কী দিবে না। এই জিনিসটাও তো আপনাকে দেখতে হবে।’’
১৫টা ক্লাবের কাউন্সিলর না দেওয়া নিয়ে তামিম বললেন, ‘‘এত খারাপ সময় চলে এল? নিজের ইচ্ছা পূরণের জন্য ৩০০ ক্রিকেটারের জীবন নিয়ে খেলা শুরু করলেন। তাদের দায়িত্ব কে নিবে, বিসিবি না ইসি। এই ১৫টা ক্লাব বিভিন্ন বিভাগে নিয়মিত ক্রিকেট খেলে, খেলোয়াড়দের পেমেন্ট করে। ওই টাকা দিয়েই কিন্তু তাদের একটা বছরের ৭০-৮০% আয় হয়। তাদের সঙ্গে তাদের পরিবারও জড়িত। এই ১৫টা ক্লাব নিয়ে যে ইস্যু ছিল, ইস্যুটা তো গত ছয়-সাত মাস ধরে চলমান ইস্যু। এখনই আপনাদের এই কাজটা কেন করতে হলো? দ্বিতীয়ত, আপনাদের যদি কোনো অবজেকশন থাকত, তাহলে আপনারা কাউন্সিলর ফর্মটা দিলেন কেন?’’
তারপরও তামিম আশাবাদী ৬ অক্টোবর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচন কেন হবে না? আমাদের এই মুহূর্তে যে সরকার আছে, এই সরকারের দায়িত্বের মধ্যে কি এটা নাই যে সংস্কার করা? সরকারের একটা অংশ যদি এভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তাহলে ভাইয়া এটা কি একটা ভালো উদাহরণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে?’’