Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : এখনও ৮ জনকে নিয়ে শঙ্কা

nasir uddin
[publishpress_authors_box]

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিমান বিধ্বস্তের পর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের মধ্যে আটজন এখনও সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে।

তাদেরকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসির উদ্দীন। বুধবার বিকাল পৌনে চারটায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীনদের এখন তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ক্রিটিকাল বা সংকটাপন্ন, সিভিয়ার বা গুরুতর এবং ইন্টারমিডিয়েট বা মাঝামাঝি অবস্থানরত।

নাসির উদ্দীন বলেন, “ভর্তি থাকা রোগীর মধ্যে আটজন ক্রিটিকাল, ১৩ জন সিভিয়ার আর বাকি ২৩ জন ইন্টারমিডিয়েট অবস্থায় রয়েছে।

যে আটজনকে ক্রিটিকাল’ মনে করা হচ্ছে। তাদের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

তিনটি ক্যাটাগরির রোগীদের প্রতি ঘণ্টায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এরই মধ্যে রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ এসেছেন।

নাসির উদ্দীন বলেন, “বর্তমানে বার্নে ৪৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। আমরা বার্ন বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য ডিসিপ্লিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বসেছিলাম। সেখানে আলোচনার পর আমরা ভর্তি রোগীদের নতুন করে ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি। চিকিৎসা প্রটোকল এবং ম্যানেজমেন্ট ঠিক করেছি।

“সেখানে প্রতিটি রোগীর আলাদা আলাদা তথ্য নিয়ে আলোচনা করেছি। কি রকম ওষুধ দেওয়া হবে, কারও অপারেশন হবে কিনা, ড্রেসিং চেঞ্জ এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পর এই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মোট ১১ জনের। মঙ্গলবার রাত ১২ টা ১৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন একজনের মৃত্যু হয়। বার্ন রোগীদের চিকিৎসাসেবা একটি ডায়নামিক প্রসেস (বহুমূখী প্রক্রিয়া) মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রতি ঘণ্টায় সেটা বদলে যায়। আমাদের আজকের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, প্রতি ১২ ঘণ্টা পর পর ক্যাটাগরি পর্যালোচনা করা হবে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় রোগীদের অবস্থা মূল্যায়ন করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

সাধারণত কত শতাংশ দগ্ধ, ক্ষতের গভীরতা ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ কেমন এসব কিছু নিয়েই পোড়া রোগী কতটা গুরুতর তা নির্ধারিত হয়। পোড়া রোগীর চিকিৎসা প্রটোকল সারা পৃথিবীতে প্রায় একই জানিয়ে অধ্যাপক নাসির উদ্দীন বলেন, সংকটাপন্ন (ক্রিটিকাল) রোগী বলতে তাদের বোঝানো হয়, যারা সবচেয়ে বেশি আহত ও ঝুঁকির মধ্যে আছে। এসব রোগীর অবস্থা ধারণা করা খুব কঠিন, তাদের ঝুঁকিও অনেক বেশি। এই ক্যাটাগরি করা হয় যেন রোগীদের বিশেষ সেবা দেওয়া যায়।

ক্রিটিকাল রোগীর অবস্থা ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তন হয়। মুহূর্তে মুহূর্তে তাদের অবস্থা বদলাতে পারে নানা কারণে। আবার সিভিআর (গুরুতর) পর্যায় থেকেও রোগী ক্রিটিকাল হয়ে যেতে পারে।

নাসির উদ্দীন বলেন, “এই ক্যাটাগরি আবার কেবল পোড়ার উপর নির্ভর করে না, বেশকিছু রোগী আছে যাদের ক্ষত গভীর, সঙ্গে অন্য ইনজুরিও রয়েছে। তাকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছে।

আর ইন্টারমিডিয়েট গ্রুপে থাকা রোগীরা আশা করছি দ্রুতই আরও ভালোর দিকে যাবেন। তবে তাদের মধ্যে যদি ইনফেকশন হয়, তখন তারা আবার সিভিয়ার ক্যাটাগরিতে চলে যাবে। অর্থাৎ এই তিনটি গ্রুপ প্রতিদিন বদলাতে পারে।”

হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণের কোনও সঙ্কট নেই বলে এক প্রশ্নের উত্তরে জানান তিনি। আপাতত পজিটিভ ও নেগেটিভ কোনও গ্রুপের রক্তেরও দরকার নেই।

শোনা যাচ্ছিল চিকিৎসাসংক্রান্ত একটি প্রতিনিধিদল ভারত থেকে দেশে আসছে। এ বিষয়ক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি, এটা মূলত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানেন। আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।”

তবে শিশুদের চিকিৎসায় সবার পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “শিশুদের ক্ষেত্রে কোনও ইগোস্টিক বিষয় নেই। যে কারও পরামর্শে যদি শিশুরা ভালো হয় আমরা সে পরামর্শ নিব।”

বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান সোমবার দুপুরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের প্রাথমিক শাখার ভবনে।

এই দুর্ঘটনায় পাইলটসহ অন্তত ৩১ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই শিশু। অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত