Beta
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

মিরপুরে সর্বোচ্চ রানের জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

৪৫ ইনিংস পর দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে এল শতরানের জুটি। ছবি : ক্রিকইনফো
৪৫ ইনিংস পর দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে এল শতরানের জুটি। ছবি : ক্রিকইনফো
[publishpress_authors_box]

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ (রানের দিক থেকে) জয়টি ১৮৩ রানের। দুই বছর আগে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার উইন্ডিজের বিপক্ষে সেই রেকর্ড ভাঙতে বসেছিল। অল্পের জন্য শেষ অবধি তা হয়নি। অবশ্য মিরপুরে সর্বোচ্চ রানের জয়টা ঠিকই হয়েছে। উইন্ডিজকে মাত্র ১১৭ রানে অলআউট করে ১৭৯ রানের জয় মিরপুরের উইকেটে সর্বোচ্চ। সেই সর্বোচ্চ রানের জয়ের তৃপ্তি নিয়ে ঘরের মাঠে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সিরিজ নিজেদের করেছে বাংলাদেশ।

এ জয়ে বাংলাদেশের র‌্যাংকিংয়ে খুব একটা লাভ হয়নি। ২০২৭ বিশ্বকাপ সরাসরি খেলতে র‌্যাংকিংয়ে সেরা আটে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হেরে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে। উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে মাত্র ২ রেটিং পয়েন্ট বেড়েছে বাংলাদেশের। ৭৪ থেকে ৭৬ হয়েছে তাই দশম অবস্থান থেকে এগোতে পারেনি লাল-সবুজরা। অন্যদিকে ১ রেটিং পয়েন্ট কমেছে নবম অবস্থানে থাকা উইন্ডিজের। তাই সেরা আটে থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করা অনেকটা দূরের পথ বাংলাদেশের জন্য।

বাংলাদেশের এ সিরিজ জয় ২০২৪ সালের পর প্রথম। এক সময় ওয়ানডেতে সিরিজ জয় অভ্যাসের মতোই ছিল বাংলাদেশের জন্য। ২০২৩ এর পর ছন্দপতনে সেই আধিপত্য হারিয়েছে। ২০২৪ এ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই সিরিজ জয়ের পর এই প্রথম এমন আনন্দ পেল বাংলাদেশ। ওই সিরিজের পর আফগানিস্তানের কাছে দুবার, উইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার কাছে একটি করে সিরিজ হার জুটেছে। আছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হারের গ্লানি।

অধিনায়ক মিরাজের জন্য একটু স্বস্তির এই জয়। এই সিরিজের আগে মিরাজ ১০ ম্যাচে মাত্র একটি জয় পেয়েছিলেন। এখন হলো ১৩ ম্যাচে তিনটি।

র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ বোলারদের সামনে দ্বিতীয় ওয়ানডের মতো লড়াই দিতে পারেনি উইন্ডিজ। কালো মাটির উইকেটের স্পিন সুবিধা নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ সব স্পিনারদেরই টেনেছেন। উইকেট পেয়েছেন সবাই। তিনটি করে নাসুম ও রিশাদ আর দুটি করে তানভীর ও মিরাজ। মোস্তাফিজকে বোলিং না করেই কাটাতে হয়েছে।

স্পিন ঘূর্নিতে ১৫ বলে ২৭ রান করা আকিল হুসেন ছাড়া বাংলাদেশ বোলারদের লড়াই ফিরিয়ে দিতে পারেননি বাকিরা। ক্যারিবিয় ব্যাটারদের সবার রান ২০ এর নিচে। এর আগে সৌম্য সরকারের ৯১ আর সাইফ হাসানের ৮০  রানে ৮ উইকেটে ২৯৬ করে বাংলাদেশ।

সাত বছর পর মিরপুরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান

২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুরে ৩২০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। এরপর সাত বছর পার হলেও মিরপুরে এত বড় দলীয় রান জমা হয়নি বাংলাদেশের বোর্ডে। সেই অপেক্ষা শেষ হলো উইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসানের দৃঢ় ওপেনিং জুটিতে ৮ উইকেটে ২৯৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

মিরপুরে উইকেটের কারণে এমনিতেই রান কম হয়। কালো মাটির পিচ ফিরে আসায় ভয় ছিল আরও কম রান হওয়ার। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সেই ভয় প্রমাণ হয়ে দাঁড়ায়। সময়ের সঙ্গে উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে থাকেন ব্যাটাররা। তারই ধারাবাহিকতায় শেষ ম্যাচে ভালো রান পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা। উদ্বোধনী জুটি থেকে ৪৫ ইনিংস পর ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি জুটি এসেছে।

সৌম্য ৮৬ বলে করেছেন ৪ ছক্কা ও ৭ চারে ৯১ রান। এছাড়া সাইফ হাসান ৭২ বলে ৬টি করে চার ও ছক্কায় করেছেন ৮০ রান। পরের দিকে নাজমুল হোসেন শান্তও ৫৫ বলে ৩ চারে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। ব্যাটিং অর্ডারে একধাপ নিচে নেমে ব্যাটে রান পেয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। নিচের দিকে সোহানের ৮ বলে ১৬ ও মিরাজের ১৭ বলে ১৭ রানে বাংলাদেশ বড় পুঁজি পায়।

সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ সৌম্যর

১৭৬ রানের জুটি গড়েছেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের উদ্বোধনী উইকেটে এটা দ্বিতীয় সেরা জুটি। সর্বোচ্চ ২৯২ রানের, ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিলেন লিটন দাস ও তামিম ইকবাল।

৯৪৫ দিন ও ৪৫ ইনিংস পর বাংলাদেশ শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেয়েছে আজ।ওয়ানডেতে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ সর্বশেষ শতরানের দেখা পেয়েছিল ২০২৩ সালের মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সিলেটে সেদিন ১০২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে তোলেন লিটন দাস ও তামিম ইকবাল।

তবে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও ফেরেন সৌম্য। ৮৬ বলে ৭ বাউন্ডারি ৪ ছক্কায় ৯১ রানে আকিল হোসেনের বলে ফেরেন তিনি।

অপর ওপেনার সাইফ হাসান আউট হন ৭২ বলে ৬ বাউন্ডারি ৬ ছক্কায় ৮০ রানে। ৩৪ ওভারে ২ উইকেটে বাংলাদেশের রান ২০৭।

সিরিজ জয়ের মিশনে ভালো শুরু বাংলাদেশের

মিরপুরের কালো মাটির উইকেটে আবারও শুরুতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের আগে রান তাড়া করতে থাকা দলটি এবার রান ‘ডিফেন্ড’ করায় মনোযোগী। উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১ ওভার শেষে ৭৯ রান করেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে অনেকদিন পর উদ্বোধনী জুটিতে সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জেগেছে।

সেই সম্ভাবনা জাগিয়েছেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। টানা দুই ম্যাচে ব্যাটে রান পেয়েছেন সৌম্য। আগের ম্যাচে ৪৫ রানে আউট হওয়া এই ব্যাটার এই ম্যাচে আরও একটু সাবলীল। খুব ধীর খেলতে হচ্ছে না বরং ব্যাট চালিয়েই করেছেন ৪১ বলে ৪৭ রান। ৫টি চার ও ২টি ছক্কা আছে তার ব্যাটে। ওদিকে ফর্মে থাকা সাইফ হাসান করেছেন ২৫ বলে ৩১ রান, তিনটি চার ও ২টি ছক্কা তার ব্যাটে।

টান টান উত্তেজনার ছিল সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি। যাতে ওয়ানডেতে প্রথমবার টাই ম্যাচ দেখেছে বাংলাদেশ। পরে সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ। তাও বাংলাদেশের প্রথম। আর সেই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনার ভুলে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ : সাইফ হাসান, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), নাসুম আহমেদ, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।

উইন্ডিজ : ব্র্যান্ডন কিং, আলিক আথানেজ, কেসি কার্টি, শেই হোপ (অধিনায়ক), আকিম অগুস্তে, শারফেন রাদারফোর্ড, জাসটিন গ্রিভস, রস্টন চেজ, আকিল হুসেন, খারি পিয়েরে, গাদকেশ মোতি।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত