দুর্নীতির অভিযোগ থাকা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক, স্ত্রী শামসুন্নাহার রহমান, ছেলে রাকিব বিন শহীদ ও মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে থাকা ২৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এসব হিসাবে এক কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার ৮৫৩ টাকা রয়েছে। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকা মহানগর জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেয়।
২৩টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে শহীদুল হকের নামে ৯ টি, স্ত্রীর নামে ৪টি, ছেলের নামে দুটি এবং মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে থাকা হিসাব ৮টি।
দুদকের পক্ষে সংস্থার উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এসব হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানের সময় জানা যায়, তিনি অপরাধের মাধ্যমে আয় করা অর্থ ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এজন্য তার নামে থাকা ২৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
এসব হিসাব অবরুদ্ধ করা না গেলে বিচারকালে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে শহীদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
গণপূর্ত বিভাগের সাবেক প্রকৌশলী জিয়াউর রহমানের ২৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
ফরিদপুর জেলার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী নাইচ পারভীন, দুই ভাই এবং ভগ্নিপতির নামে থাকা ২৪ ব্যাংকের হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত। এসব হিসাবে চার কোটি ৫৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১ টাকা রয়েছে।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকা মহানগর জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেয়।
২৪ ব্যাংক হিসাবের মধ্যে জিয়াউর রহমান নামে ১৯ টি, স্ত্রীর নামে ২টি, দুই ভাইয়ের নামে একটা করে ২টা এবং ভগ্নিপতির নামে একটি হিসাব।
দুদকের পক্ষে সংস্থার সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার এসব হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত আয়ের উৎস আড়াল করার উদ্দেশ্যে তার নিজ নামে ও তার নিকটাত্মীয়দের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে বড় অংকের নগদ ও অস্বাভাবিক লেনদেন, বিভিন্ন ব্যাংকে ৪ দশমিক ৮৬ কোটি টাকার এফডিআর থাকা, তার ব্যক্তিগত হিসাবে ঠিকাদার ও বাবসায়ীদের হিসাব থেকে বড় অংকের অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে আনা নেওয়া করে বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা গ্রহণ করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত ধারায় অপরাধ করার অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের সময় তথ্য ও রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, নথির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান এবং তার স্ত্রী নাইচ পারভীন, ছোট ভাই ফিরোজ মোল্লা, ভাই ওবায়দুর রহমান এবং ভগ্নিপতি আয়ুব আলী খানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একাউন্টে রক্ষিত অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে ব্যাংক হিসাবে থাকা অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে অনুসন্ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।



