Beta
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

বেনজির-মৃণাল কান্তির সম্পদ জব্দের নির্দেশ

আদালত
প্রতীকী ছবি
[publishpress_authors_box]

মানিলন্ডারিং ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত মামলার অনুসন্ধান চলমান থাকায় ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদের প্লট ও ফ্ল্যাট জব্দ এবং ৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, একটি মটরযান, ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।

এসব সম্পদের মধ্যে ঢাকার ইস্কাটন, ধানমন্ডি ও ধামরাইয়ের ৪টি ফ্ল্যাট ও পূর্বাচলের ১০ কাঠার ১টি প্লটসহ মোট ১৯৩ শতাংশ জমি রয়েছে।

এছাড়া তার স্ত্রী সাহিনা বেগমের ১টি কোম্পানির শেয়ার, ১টি ডিপোজিট ও ২টি ব্যাংক হিসাবের ১ কোটি ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৩ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বেনজিরের জব্দ সম্পদের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ২৮০ টাকা। শেয়ার, মটরযান ও ৯ ব্যাংক হিসাবে আছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার ২৮৬ টাকা। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলাদা দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেয়।

দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার এই আবেদন দুটি করেন। 

বেনজিরের আবেদনে বলা হয়, ঢাকা ২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ (৭৩) দায়িত্বে থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ৯৬১ টাকা মূল্যর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখল করেছেন। তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামীয় ১১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪২ কোটি ৪৬ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৯ টাকা জমা এবং ৪১ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ২৬৬ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৮৪ কোটি ৪২ লাখ ৮ হাজার ২৫৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। 

এরপর মানিলন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে উক্ত অর্থ বা সম্পত্তি স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে  মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকালে জানা যায়, আসামি বেনজীর আহমদ এসব সম্পদ অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। এজন্য তার নিজ নামীয় ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। 

সাহিনার আবেদনে বলা হয়,  সাহিনা আহমদ (৬২) ও বেনজীর আহমদ (৭৩) অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে অসাধু উপায়ে এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯৭ কোটি ৪৭ লাখ ৩৮৫ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন এবং দন্ডবিধির ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে  মামলা দায়ের করা হয়। 

মামলার তদন্তকালে জানা যায়, তারা এসব সম্পদ অন্যত্র বিক্রয়, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। সে জন্য আসামির নিজ নামীয় ব্যাংক হিসাবসহ অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

স্ত্রীসহ সাবেক এমপি মৃণাল কান্তি দাসের সম্পদ জব্দ,  দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী  নিলীমা দাসের নামে থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, অ্যাপার্টমেন্টসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেয়।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

জব্দ করা সম্পদের মধ্যে মৃণাল কান্তি দাসের নামে রয়েছে, রাজধানীর ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ টাকা মূল্যমানের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, পূর্বাচলে ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি প্লট এবং ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি মটরগাড়ি। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে তার নামে থাকা ৮টি হিসাবের মোট ৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, মৃণাল কান্তি দাসের স্ত্রী নীলিমা দাসের নামে, ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি, তার ওপর ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং ৩০টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১০ লাখ ৬১ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসামি মৃণাল কান্তি দাস সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বে থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন। মামলার তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা এসব সম্পদ অন্যত্র বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টায় ছিলেন।

তাদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছে একই আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারি পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, মৃণাল কান্তি দাস এবং নিলীমা দাস গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এজন্য তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে দুদক।

গত ১৮ মার্চ মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নীলিমা দাসের বিরুদ্ধে আলাদা দুইটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান মিরাজ একটি মামলা করেন।

এক মামলায় তারা দুইজনই আসামি। আরেকটি মামলায় মৃণাল কান্তি দাস একা আসামি। 

মৃণাল কান্তি দাসের মামলায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৭ হাজার ২৩০ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তার আটটি ব্যাংক হিসাবে এক কোটি ২২ লাখ টাকা জমা এবং ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা তোলাসহ মোট ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। দুদকের অভিযোগ, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের অবৈধ উৎস গোপন করতে সাবেক এমপি মৃণাল কান্তি এসব সম্পদ ‘রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর’ করেছেন।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে অন্য মামলাটি করে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, নীলিমা দাস তার স্বামীর সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ৪৫ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন। ২০১৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তার ৩০টি ব্যাংক হিসাবে ৮ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা এবং ৮ কোটি ছয় লাখ টাকা তোলাসহ মোট ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত