গত ১৬ বছরে দেশে প্রতারণামূলক বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এই সময়ে এক টাকার জিনিস করতে গিয়ে ২০ টাকা খরচ করা হয়েছে।
বুধবার অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘কনডাক্টিভ অটোমাবাইল পলিসি ফর গ্রীন গ্রোথ এন্ড কম্পিটিটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৬ বছরে আমরা এমন সব ফ্যালাসি (প্রতারণামূলক) বিনিয়োগ করেছি, সেটা কর্ণফুলী টানেল হোক বা ঋণ নিয়ে মেট্রোরেল করতে গিয়ে এক টাকার জায়গায় ২০ টাকা খরচ করেছি। আমরাতো পরিবেশের আরও বড় ক্ষতি করে ফেলেছি।”
তিনি বলেন, “এসব উন্নয়ন করতে গিয়ে আমরা যে পরিমাণ অর্থনৈতিক দায় তৈরি করেছি। আমাদের জাতীয় ব্যয়ের বড় অংশ যাচ্ছে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক দায় পরিশোধ করতে। এটাতো টেকসই নয়।”
দীর্ঘ মেয়াদে এটা চলনশীল না জানিয়ে তিনি বলেন, “এখান থেকে আমাদের উত্তরণ করতে হবে।” এখান থেকে দেশের অর্থনীতিকে বের করে আনতে সমন্বিত অর্থনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। এমনকি রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমাদের এমনভাবে ব্যয় করতে হবে যেন দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। সারাদেশে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশে অন্তত দুইশটি নদী দিয়ে সস্তা ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে পণ্য পরিবহন করা যায়। দেশে পরিবেশবান্ধব সরবরাহ ও পরিবহন ব্যবস্থা তৈরির জন্য সমন্বিত নীতি আমাদের নিতে হবে।”
সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের লজিস্টিক (পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা) ব্যয় পৃথিবীর অন্যতম বেশি। এখন আমাদের লজিস্টিক ব্যয় অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি। এই অতিরিক্ত ব্যয় কমাতে পারলে যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা তৈরি হবে তাতে ২০ শতাংশ রপ্তানি বাড়বে।”
তিনি বলেন, “এই লজিস্টিকের অন্যতম উপাদান হচ্ছে উন্নত সড়ক এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা। পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির গাড়ি আমদানি করতে হবে। শুধুমাত্র নতুন গাড়ি পরিবেশবান্ধব বা টেকসই নয়। বরং উন্নত প্রযুক্তির বা দেশের তৈরি করা পুরনো গাড়িও অনেক বছর পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব এবং উন্নত সেবা দেয়।”