Beta
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা : পাইলট ছাড়াও কি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ বন্ধ হতে পারে

Air India
[publishpress_authors_box]

ভারতে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১ দুর্ঘটনার জট এখনও খোলেনি। উল্টো প্রাথমিক তদন্তে তদন্তকারী কর্মকর্তারা এমন তথ্য জানতে পেরেছেন, যা গত ১২ জুনের ওই দুর্ঘটনা ঘিরে আরও রহস্যের জন্ম দিয়েছে।

দুর্ঘটনায় ফ্লাইটটির ২৬০ যাত্রী নিহত হয়। উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরই ১২ বছর পুরোনো বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারটির দুটি ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ হঠাৎ করে “কাট-অফ” অবস্থায় চলে যায়। অর্থাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

এতে ইঞ্জিনে জ্বালানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে শক্তি হারিয়ে ফেলে বিমানটি। এই “কাট-অফ” সুইচ সাধারণত কেবল অবতরণের পর ব্যবহার করা হয়।

ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করা ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ে শোনা গেছে, একজন পাইলট অপরজনকে জিজ্ঞেস করছেন, “তুমি কেন ফুয়েল বন্ধ করে দিলে?”।

জবাবে আরেকজন বলছেন, “আমি করিনি।” তবে রেকর্ডিংয়ে স্পষ্ট হয়নি কে এই প্রশ্ন করলেন, আর কে উত্তর দিলেন। দুর্ঘটনার সময় বিমানটি ছিল কোপাইলটের নিয়ন্ত্রণে। আর ক্যাপ্টেন পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

পরে সুইচগুলো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ইঞ্জিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনরায় চালু হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। দুর্ঘটনার সময় একটি ইঞ্জিন আবার ধীরে ধীরে শক্তি ফিরি পাচ্ছিল। আর অন্যটি তখনও পর্যাপ্ত শক্তি ফিরে পায়নি।

বিমানটি আকাশে ওঠার পর এক মিনিটও টেকেনি। এরপরই ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের ঘনবসতিপূর্ণ শহর আহমেদাবাদের একটি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনা সম্পর্কে যেসব তথ্য মিলছে, তাতে এটি ভারতের সবচেয়ে রহস্যময় বিমান দুর্ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

উড্ডয়নের সঙ্গেসঙ্গেই ঠিক কী ঘটেছিল তা বুঝতে তদন্তকারীরা এখন ধ্বংসাবশেষ ও ককপিট রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করছেন।

ফ্লাইটরাডার২৪ ওয়েবসাইট অনুযায়ী, উড্ডয়নের পর বিমানটি পরিষ্কার আবহাওয়ায় ৬২৫ ফুট উচ্চতায় ওঠে। কিন্তু মাত্র ৫০ সেকেন্ডের মাথায় লোকেশন ডেটা হারিয়ে যায়।

দুর্ঘটনার তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত সরকার। আর এতে বোয়িং, জেনারেল ইলেকট্রিক, এয়ার ইন্ডিয়া, ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়েছেন। প্রাথমিক প্রতিবেদন একাধিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো এমনভাবে তৈরি যে, তা হঠাৎ করে নাড়া খাওয়ার সুযোগ নেই। এগুলোকে নাড়াতে হলে প্রথমে টেনে তুলতে হয়, তারপর ঘোরাতে হয়। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ১৯৫০-এর দশক থেকেই চালু রয়েছে। 

অত্যন্ত নিখুঁত মানদণ্ডে নির্মিত এসব সুইচ সাধারণত খুবই নির্ভরযোগ্য। এছাড়া সুইচের চারপাশে বিশেষ গার্ড ব্র্যাকেট থাকে, যা একে ধাক্কা লাগা বা ভুল করে চাপা পড়া থেকে রক্ষা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কানাডাভিত্তিক বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী বিবিসিকে বলেন, “এক হাতে একসঙ্গে দুটি সুইচ টানা প্রায় অসম্ভব। ফলে একসঙ্গে ভুল করে দুটি সুইচ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।”

আর এই কারণেই এয়ার ইন্ডিয়ার এই ঘটনা আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে।

ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির সাবেক বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী ও অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ শন প্রুচনিকি বলেন, “পাইলটদের কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুল করে এই সুইচ বন্ধ করে থাকলে প্রশ্ন আসে— কেন এমন করলেন?”

তিনি বলেন, “এটি কি ইচ্ছাকৃত ছিল, না কি বিভ্রান্তির ফল? বিভ্রান্তির সম্ভাবনাও কম। কারণ পাইলটরা তখন কোনও অস্বাভাবিক কিছু রিপোর্ট করেননি।

“অনেক ককপিট ইমার্জেন্সিতে পাইলট ভুল বোতাম চাপেন বা ভুল অপশন বেছে নেন। কিন্তু এই ঘটনায় এমন কোনও পরিস্থিতির ইঙ্গিত নেই। এমনকি রেকর্ডিংয়েও এই সুইচ ভুল করে চালু করার কোনও কথোপকথন পাওয়া যায়নি। এই ধরনের ভুল সাধারণত স্পষ্ট কোনও সমস্যা ছাড়া ঘটে না।”

তদন্তে নতুন মোড়

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (এনটিএসবি) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিটার গোল্জ বলেছেন, “একজন পাইলট উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ফুয়েল সুইচ বন্ধ করেছেন, এই তথ্য খুবই উদ্বেগজনক।”

তিনি বলেন, “ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে এর চেয়ে অনেক বেশি তথ্য থাকার কথা। শুধু একটি সংলাপ “তুমি কেন সুইচ বন্ধ করলে” এই একটি মন্তব্য যথেষ্ট নয়।”

গোল্জের ভাষায়, নতুন তথ্যগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ককপিটে কেউ জ্বালানির ভালভ বন্ধ করেছিলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে করেছিলেন এবং কেন? সুইচ দুটি বন্ধ করার পর আবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চালু করা হয়।

তিনি বলেন, “ভয়েস রেকর্ডার থেকেই বোঝা যাবে, ফ্লাইট চালানো পাইলট কি ইঞ্জিন চালু করার চেষ্টা করছিলেন, না কি সেই সময় যিনি পর্যবেক্ষণ করছিলেন তিনি ইঞ্জিন চালু করার চেষ্টা করছিলেন?”

তদন্তকারীরা মনে করছেন, ককপিট ভয়েস রেকর্ডারই এই রহস্যের চাবিকাঠি। রেকর্ডারে পাইলটদের মাইক্রোফোন, রেডিও কথোপকথন এবং ককপিটের আশপাশের শব্দ সংরক্ষিত থাকে।

গোল্জ জানান, এখনও তদন্তকারীরা কণ্ঠস্বর শনাক্ত করতে পারেননি। সাধারণত ভয়েস রেকর্ডার বিশ্লেষণের সময় সেই পাইলটদের পরিচিত কেউ উপস্থিত থাকেন, যাতে কণ্ঠস্বর শনাক্ত করা সহজ হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি, কে সুইচ বন্ধ করেছিলেন এবং কে আবার চালু করেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো, ‘ক্লিয়ার ভয়েস আইডেন্টিফিকেশন’। অর্থাৎ স্পষ্টভাবে কার কথা তা শনাক্ত করা। পুরো ককপিটের লিখিত ট্রান্সক্রিপ্ট দরকার, যেখানে স্পিকারদের নাম উল্লেখ থাকবে। পাশপাশি থাকবে বিমানের গেইট থেকে টেক-অফ ও পরবর্তী ক্র্যাশ পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তের সমস্ত যোগাযোগ বিশ্লেষণ।

তারা এও বলছেন, এই ঘটনাটি এনটিএসবির দীর্ঘদিন ধরে সুপারিশ করা ককপিটে ভিডিও রেকর্ডার থাকার প্রয়োজনীয়তাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। একটি ‘ওভার-দ্য-শোল্ডার’ ভিডিও থাকলে বোঝা যেত, কার হাত ছিল ফুয়েল কাট-অফ সুইচের ওপর।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লাইট ১৭১-এ ওঠার আগে দুই পাইলট ও ক্রু সদস্যরা ব্রেথালাইজার টেস্টে উত্তীর্ণ হন এবং ফ্লাইট পরিচালনায় উপযুক্ত হিসেবে অনুমতি পান। মুম্বাইভিত্তিক এই দুই পাইলট দুর্ঘটনার আগের দিন আহমেদাবাদে এসে পৌঁছান এবং তারা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়েছিলেন বলেও জানা গেছে।

তবে তদন্তকারীরা প্রতিবেদনের একটি অংশকে “গুরুত্বপূর্ণ” হিসেবে চিহ্নিত করছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) একটি “স্পেশাল এয়ারওয়ার্দিনেস ইনফরমেশন বুলেটিন” (এসএআইবি) জারি করেছিল। এতে উল্লেখ করা হয়, কিছু বোয়িং ৭৩৭ বিমানে ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ এমনভাবে ইনস্টল করা হয়েছিল যাতে তাদের লকিং ফিচার নিষ্ক্রিয় ছিল।

বিষয়টি নজরে আসলেও একে ‘বিপজ্জনক অবস্থা’ বলে চিহ্নিত করা হয়নি। ফলে এফএএ এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও বাধ্যতামূলক নির্দেশনা (এডি) জারি করা হয়নি।

বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলেও এই একই ধরনের সুইচ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত হওয়া ভিটি-এএনবি বিমানটিও ছিল। যেহেতু এই সতর্কবার্তাটি পরামর্শমূলক ছিল, তাই এয়ার ইন্ডিয়া সেই সময় সুপারিশকৃত পরিদর্শন করেনি।

সাবেক দুর্ঘটনা তদন্তকারী শন প্রুচনিকি প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “এই রিপোর্টের অংশটির প্রকৃত মানে কী? একবার উল্টে গেলেই কি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যেতে পারে? লকিং ফিচার ডিসএনগেজ থাকলে আসলে কী ঘটে? সুইচ কি নিজেই ‘অফ’-এ চলে যেতে পারে এবং ইঞ্জিন বন্ধ করে দিতে পারে? সত্যিই এমনটা হলে এটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। আর না হলে, সেটাও স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।”

তবে পিটার গোল্জের মতে, বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সন্দেহ তৈরি হলেও এটি সম্ভবত মূল ইস্যু নয়। 

তিনি বলেন, “আমি এই বিষয়টি আগে শুনিনি। এটি সম্ভবত এফএএর এক নিম্ন-প্রোফাইল প্রকাশনা ছিল। দ্রুত কোনও সমস্যা নিয়ে সরব হন এমন পাইলটদের কাছ থেকেও কোনও অভিযোগ শোনা যায়নি। যেহেতু রিপোর্টে এটি এসেছে, তাই পর্যবেক্ষণ করা উচিত। তবে এটি হয়তো মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে দিতে পারে।”

ভারতের এয়ারক্র্যাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (এএআইবি) সাবেক তদন্তকারী ক্যাপ্টেন কিশোর চিন্তা প্রশ্ন তুলেছেন, “ফুয়েল কাট-অফ সুইচ কি পাইলটের হাত ছাড়াও বিমানের ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট দিয়ে চালু হতে পারে?”

তিনি বিবিসিকে বলেন, “ফুয়েল কাট-অফ সুইচ ইলেকট্রনিক্যালি ট্রিগার হয়ে থাকলে সেটি অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিফুয়েলিং ট্যাংক থেকে নেওয়া জ্বালানির নমুনা ‘সন্তোষজনক’ ছিল। এর আগে অনেকেই ধারণা করেছিলেন, জ্বালানিতে দূষণ বা মানের সমস্যা হতে পারে, যা ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার কারণ। তবে বোয়িং ৭৮৭ বা এর জিই জিইএনএক্স-১বি ইঞ্জিন নিয়ে কোনও সতর্কতা জারি হয়নি। আর এখনও পর্যন্ত যান্ত্রিক ত্রুটির প্রমাণ মেলেনি। তবে এই বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিমানের র‌্যাম এয়ার টারবাইন (আরএটি) চালু হয়ে গিয়েছিল। এটি বড় ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়। ল্যান্ডিং গিয়ারও “ডাউন পজিশন” এ ছিল, অর্থাৎ তা গুটিয়ে নেওয়া হয়নি।

আরএটি হচ্ছে একটি ছোট প্রপেলারের মতো যন্ত্র, যা বোয়িং ৭৮৭ বিমানের নিচ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসে। এটি তখনই সক্রিয় হয়, যখন দুটি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায় অথবা তিনটি হাইড্রোলিক সিস্টেমেই বিপজ্জনকভাবে চাপ কমে যায়। এই যন্ত্র তখন জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইট সিস্টেমগুলো অন্তত কিছু সময় সচল থাকে।

সাবেক দুর্ঘটনা তদন্তকারী শন প্রুচনিকি বলেন, “আরএটি চালু হয়ে যাওয়াই প্রমাণ করে, ইঞ্জিন দুটি একসঙ্গে ব্যর্থ হয়েছিল।”

বোয়িং ৭৮৭ এর একজন পাইলট বলেন, “আজকাল আমি যখনই ৭৮৭ চালাই, আমি ল্যান্ডিং গিয়ার গুটিয়ে নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখি। গিয়ার হ্যান্ডল টানার সময় আমরা সাধারণত প্রায় ২০০ ফুট উচ্চতায় থাকি। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ৪০০ ফুটের মধ্যে। এতে মোটামুটি ৮ সেকেন্ড লাগে। কারণ এই বিমানের হাইড্রোলিক সিস্টেম অত্যন্ত শক্তিশালী।”

তার মতে, যিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়া বিমান চালাচ্ছিলেন, তার ভাবার সময়ই ছিল না।

তিনি বলেন, “যখন দুটি ইঞ্জিন একসঙ্গে বন্ধ হয়ে বিমান নামতে শুরু করে, তখন প্রতিক্রিয়া আর কেবল বিস্ময় নয়—তখন মন পুরোপুরি অবশ হয়ে যায়। সেই মুহূর্তে ল্যান্ডিং গিয়ার ভাবার বিষয় নয়। তখন মাথায় একটাই প্রশ্ন ঘোরে, এই বিমানটিকে কোথায় নিরাপদে নামানো সম্ভব? আর এই ঘটনার ক্ষেত্রে, বিমানটি এতটাই নিচু ছিল যে পাইলটের হাতে সময় ছিল না।”

তদন্তকারীরা বলছেন, ককপিট ক্রুরা ইঞ্জিন পুনরায় চালুর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সময় ছিল খুবই কম।

প্রুচনিকি বলেন, “ইঞ্জিন দুটি প্রথমে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আবার চালু করা হয়। পাইলটরা বুঝেছিলেন, ইঞ্জিনের শক্তি কমে আসছে। তারা সম্ভবত প্রথমে বাম পাশের ইঞ্জিনটি চালু করার চেষ্টা করেন, তারপর ডান পাশেরটি।

“কিন্তু ডান পাশের ইঞ্জিনটি আবার চালু হলেও পর্যাপ্ত সময় পায়নি শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য। শেষপর্যন্ত দুটো ইঞ্জিনই ‘রান’ অবস্থায় ছিল। কিন্তু একটির শক্তি আগেই হারিয়ে গিয়েছিল, আর অন্যটি খুব দেরিতে চলতে শুরু করে। ফলে যা হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। সময়ই ছিল না।”

দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মীয়রা অনেকদিন ধরে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

শনিবার সকালে ভারতে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হলে খুব মন দিয়ে প্রতিবেদনটি পড়েন ইমতিয়াজ আলি। তিনি তার ভাই, ভাবি ও তাদের দুই সন্তানকে হারিয়েছেন দুর্ঘটনায়। প্রতিবেদন পড়া শেষে তিনি হতাশ হয়ে বলেন, “এটা যেন বিমানের যন্ত্রাংশের গাইড বইয়ের মতো।”

তিনি বলেন, “পাইলটদের শেষ কথাবার্তা ছাড়া এই রিপোর্টে এমন কিছু নেই যা দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ স্পষ্ট করে। এই ঘটনাটি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানতে চাই, আসলে কী ঘটেছিল। এখন আর কিছু বদলাবে না। আমরা শোকেই থাকব, যেমনটা সেদিন থেকে আছি।”

তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ পাবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত