জুলাই অভ্যুত্থানের বছর পূর্তির দিনে কক্সবাজার সফরে যাওয়া পাঁচ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
বুধবার এনসিপির ফেইসবুক পাতায় তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস তুলে দেওয়া হয়। যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালাহ উদ্দিন সিফাতের স্বাক্ষরে প্রত্যেককে আলাদা নোটিস পাঠানো হয়েছে।
যাদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন- এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ।
প্রত্যেককে পাঠানো নোটিসে একই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। নোটিসে বলা হয়, “গত ৫ই আগস্ট জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দিবসে আপনি ও দলের আরও চারজন কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছেন। এই সফর সংক্রান্ত কোনও তথ্য কিংবা ব্যাখ্যা (দলের) রাজনৈতিক পর্ষদ এর নিকট পূর্বে অবগত করা হয়নি।
“এমতাবস্থায় আপনার এই সিদ্ধান্তের কারণ ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নিকট স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে মঙ্গলবার ঢাকায় জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদাতাদের গড়া দল এনসিপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব মঙ্গলবার বিকালের সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার সকালেই এনসিপির পাঁচ নেতার কক্সবাজার সফরের খবর ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে গুঞ্জন ছড়ায় যে তারা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে গেছেন।
সেই গুঞ্জনে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা কক্সবাজারে বিক্ষোভও করে।
তবে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ অন্যরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তারা নিছক অবকাশ যাপনে কক্সবাজার গেছেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “পদযাত্রাতে টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম। জাস্ট এমনে একটু সাগর পাড়ে ঘুরতে আসছিলাম।”
পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করার খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ভুয়া খবর। আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারও সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।”
পিটার হাস ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। তার নানা কাজে অসন্তুষ্ট ছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে এমন খবর এসেছিল যে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার নিয়ে ওয়াশিংটনের যে নীতি, তাতে বিরোধিতা ছিল পিটার হাসের।
ওই জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত অক্টোবরে পিটার হাস বহুজাতিক কোম্পানি অ্যাকসিলারেট এনার্জির উপদেষ্টা হিসেবে ঢাকা ঘুরে গিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।



