এফ-১৫ ফাইটার জেটের উষ্ণ অভ্যর্থনা, লাল গালিচা এবং পূর্ণ রাজকীয় প্রটোকলের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে একটি কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করলেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটি বন্ধুপ্রতীম দেশ দুটির মধ্যে কয়েক দশকের পুরোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।
ইসলামের দুটি পবিত্রতম স্থানের তত্ত্বাবধায়ক সৌদি আরব এবং মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রিয়াদের আল-ইয়ামামাহ প্রাসাদে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়।
এই চুক্তিটি এমন একটি সময়ে হয়েছে, যখন দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল আরও কয়েকটি দেশ পেরিয়ে গত সপ্তাহে কাতারের রাজধানী দোহায় হামলা চালিয়েছে। সৌদি সীমান্তের কাছে কাতারে হামলা মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতিতে মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এছাড়া এই চুক্তি স্বাক্ষরের এই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। গত মে মাসে উভয় দেশ চার দিন ধরে একে অন্যের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল, যা দক্ষিণ এশিয়াকে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীকে ব্যাপক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই দেশে নিরাপত্তা জোরদার এবং আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় যৌথ প্রতিশ্রুতি থেকে এই চুক্তি। পাশাপাশি যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করাও এর উদ্দেশ্য।
মন্ত্রণালয় বলেছে, “চুক্তি অনুযায়ী, কোনও একটি দেশের ওপর আগ্রাসনকে উভয় দেশের ওপরই আগ্রাসন হিসাবে গণ্য করা হবে।”
ওয়াশিংটনভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের একজন সিনিয়র ফেলো আসফান্দিয়ার মীর এই চুক্তিটিকে দুই দেশের জন্যই একটি ‘ঐতিহাসিক’ ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, “পাকিস্তান এর আগে স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি বজায় রেখেছিল, কিন্তু সেগুলো সত্তরের দশকের মধ্যে ভেঙে যায়। এমনকি চীনের সঙ্গে ব্যাপক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তানের কোনও আনুষ্ঠানিক পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি নেই।”
সিডনির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির দক্ষিণ এশিয়া নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক মুহাম্মদ ফয়সাল বলেন, এই চুক্তিটি পাকিস্তানের জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে, যাতে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারের মতো অন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপসাগরীয় অংশীদারের সঙ্গেও একই ধরনের দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা স্থাপন করতে পারে।
ফয়সাল বলেন, “প্রাথমিকভাবে এই চুক্তিটি চলমান বহুমুখী প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে সুসংহত ও আনুষ্ঠানিক রূপ দেবে। এছাড়া, যৌথ প্রশিক্ষণ, সমরাস্ত্র তৈরি এবং সৌদি আরবে পাকিস্তানি সেনা উপস্থিতির পথ খোলার সুযোগ তৈরি করল।”
ঐতিহাসিক বন্ধন ও সামরিক সহযোগিতা
১৯৪৭ সালের আগস্টে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর শুরুতেই যারা স্বীকৃতি দিয়েছিল, তার মধ্যে সৌদি আরব অন্যতম। ১৯৫১ সালে দুটি দেশ একটি বন্ধুত্বের চুক্তিতে সই করে, যা কৌশলগত, রাজনৈতিক, সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তি স্থাপন করে।
গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানি সেনা বেশ কয়েকবার সৌদি আরবে মোতায়েন হয়েছে এবং উপসাগরীয় অঞ্চল ও পাকিস্তানে সৌদিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, পাকিস্তান ১৯৬৭ সাল থেকে ৮ হাজারের বেশি সৌদি নাগরিককে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
১৯৮২ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি সৌদি আরবে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর কর্মী এবং সামরিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করে এই সহযোগিতা আরও জোরদার করে।
তবে এই সর্বশেষ চুক্তিটি এমন এক সময়ে হলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির। ইসরায়েলের গাজায় যুদ্ধ এবং আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায় উপসাগরীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
এদের মধ্যে অনেকেই এখনও নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, যদিও ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসাবে রয়ে গেছে ওয়াশিংটন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর হামাস নেতাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে আক্রান্ত কাতারেই যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টকমের (সেন্ট্রাল কমান্ড) এর অগ্রবর্তী সদর দপ্তর।
৪০ থেকে ৫০ হাজার মার্কিন সেনা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ঘাঁটিতে রয়েছে। এর মধ্যে রিয়াদের বাইরে প্রিন্স সুলতান বিমান ঘাঁটিও একটি।
সৌদি কর্মকর্তারা যদিও বলছেন যে পাকিস্তানের সঙ্গে এই চুক্তির আলোচনা কমপক্ষে এক বছর ধরে চলছিল; তারপরও তা যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রূ কঁচকে দেবে বলে মনে করেন ওয়াশিংটনভিত্তিক স্বাধীন নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাহার খান।
২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে, পাকিস্তান ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির অভিযোগে সাতবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে পাকিস্তানের তৈরি করা ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসীমা এবং সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে কি না, সে বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
সাহার খান আল জাজিরাকে বলেন, “পাকিস্তানকে নিয়ে ওয়াশিংটনের বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে এবং এই চুক্তি তা কমাবে না।”
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের স্বার্থে এটি পরিষ্কার করা উচিৎ যে তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ভারতকেন্দ্রিক এবং সৌদি আরবের সঙ্গে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় থাকলেও তারা সৌদির হয়ে যুদ্ধে লড়বে না, বরং কেবল প্রয়োজনে সহায়তা দেবে।
মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব
এবছরের জুন মাসে ইসরায়েল ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের একটি যুদ্ধ শুরু করে, যেখানে পারমাণবিক স্থাপনা এবং জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
আমেরিকান বোমারু বিমানগুলোও এই যুদ্ধে জড়িয়েছিল এবং ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ফোরদোর ওপর বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলে।
তিন মাস পর ইসরায়েল দোহায় একটি আবাসিক ভবনে হামলা চালায়, যেখানে দূতাবাস, সুপারমার্কেট এবং স্কুল রয়েছে। এতে অন্তত পাঁচজন হামাস সদস্য এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন।
দোহায় হামলার ফলে আরব এবং ইসলামিক দেশগুলোর একটি জরুরি বৈঠক হয়। উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সদস্য দেশগুলো (বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত) জানায় যে তারা একটি যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করবে।
ফয়সাল বলেন, পাকিস্তান-সৌদি চুক্তিটিকে এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেখা দরকার।
“এই ঘটনাগুলো উপসাগরীয় দেশগুলোর নিরাপত্তার উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে, একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ছাতার ওপর তাদের আস্থা হ্রাস পেয়েছে। যেহেতু উপসাগরীয় দেশগুলো তাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে চাইছে, তাই পাকিস্তান, মিশর এবং তুরস্কের মতো আঞ্চলিক দেশগুলো অংশীদার হিসাবে উঠে আসছে।”
খান অবশ্য বলেন, যদিও চুক্তিটির সময়কাল কাতারে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে একটি সংযোগের ইঙ্গিত দেয়, তবুও এই ধরনের চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছরও সময় লাগে।
আসফান্দিয়ার মীর মনে করেন, উভয় দেশ কীভাবে অন্য দেশের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা সামলায়, তার একটি পরীক্ষা হয়ে যাবে এই চুক্তির মাধ্যমে।
তিনি বলেন, “পাকিস্তান এখন সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, বিশেষ করে প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে, জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
“সৌদি আরবও নিজেকে পাকিস্তানের বিরোধে জড়িয়ে ফেলেছে, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে এবং সম্ভবত তালিবান-নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের সঙ্গেও।”
প্রশ্ন যখন ভারত
এই প্রতিরক্ষা চুক্তিটি পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তিধর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতও ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক এখন তলানিতে রয়েছে। বিশেষ করে গত এপ্রিলে পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং তার জেরে দুই দেশের যুদ্ধে জড়ানোর পর।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, তারা এই চুক্তির ওপর চোখ রাখছেন।
“আমরা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব বিশ্লেষণ করব। সরকার ভারতের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যাপক জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ফয়সাল বলেন, এই চুক্তিটি পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্ককে নতুন আঙ্গিক দিতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিয়াদ-ইসলামাবাদ সম্পর্ক সৌদি আরবের আর্থিক সহায়তার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল; যদিও ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছিল সৌদি আরব।
গত দশকে পাকিস্তানের অর্থনীতি যখন টালমাটাল ছিল, তখন সৌদি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল ইসলামাবাদ।
ভারত তখন রিয়াদের সঙ্গে তার নিজস্ব সম্পর্ক ক্রমাগত গভীর করছিল। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই এপ্রিল মাসে এক দশকের মধ্যে তৃতীয়বার সৌদি আরব সফরে যান।
আসফান্দিয়ার মীর বলেন, নতুন চুক্তিটি বোঝাচ্ছে যে সৌদি আরব এখনও পাকিস্তানের সঙ্গে তার সম্পর্কের মূল্য দেয় এবং ভারত অন্যান্য দেশকে পাকিস্তান থেকে দূরে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করলেও ইসলামাবাদ বিচ্ছিন্ন নয়।
তিনি বলেন, “ঠিক যখন পাকিস্তান ভারতীয় সামরিক হুমকির সম্মুখীন, তখন পাকিস্তান সৌদি আরবের কাছ থেকে একটি শক্তিশালী যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি নিশ্চিত করেছে। তাই এটি ভবিষ্যতের ভারত-পাকিস্তান গতিশীলতায় অনেক জটিলতা সৃষ্টি করবে।”
সৌদির ওপর পাকিস্তানের পারমাণবিক ছাতা?
সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে বেসামরিক ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক প্রযুক্তি অর্জনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যাতে তারা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসতে পারে।
গত জানুয়ারিতে সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সালমান আল সউদ রিয়াদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং বিক্রির প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন, যা পারমাণবিক কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
কিন্তু সৌদি আরব বারবার এটিও স্পষ্ট করেছে যে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায় না।
২০২৪ সালের আমেরিকান সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড তার বই ‘ওয়ার’ এ একটি কথোপকথনের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ মার্কিন সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহামকে বলেছিলেন যে রিয়াদ কেবল জ্বালানির উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছে।
যখন গ্রাহাম সৌদি বোমার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। উডওয়ার্ড লিখেছেন, সালমান উত্তর দেন- “আমার বোমা বানানোর জন্য ইউরেনিয়াম দরকার নেই। আমি পাকিস্তান থেকে একটি কিনে নেব।”
নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাহার খান বলেন, পাকিস্তান এবং সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির পরিসর সম্পর্কে কিছু বিষয় এখনও অস্পষ্ট।
তিনি বলেন, “এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পাকিস্তান এর আগে প্রতিরক্ষা চুক্তি করলেও সেগুলোর কোনোটিই পারমাণবিক নিশ্চয়তা বা ‘পারমাণবিক ছাতা’ গঠনে নেতৃত্ব দেয়নি। এই চুক্তিতে এমন কিছু নেই, যা একটি পারমাণবিক ছাতা বা কোনো বর্ধিত প্রতিরোধের ইঙ্গিত দেয়।”
আসফান্দিয়ার মীর বলেন, “এই চুক্তিটি একটি নতুন জোট রাজনীতিকে উৎসাহিত করবে, যেখানে এর আওতা, প্রতিরোধ, সম্পদ প্রতিশ্রুতি, অপারেশনাল বিবরণ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।”
এই চুক্তি স্বাক্ষরের রাজনৈতিক গুরুত্ব তাতে কমে যায় না বলে মনে করেন মীর। ফয়সালও তাতে একমত পোষণ করেন।
ফয়সাল বলেন, যদিও এই চুক্তিটি একটি দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করার কথা উল্লেখ করে, তবুও সম্ভবত এটি আপাতত একটি জোট বা যৌথ প্রতিরক্ষা প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি একটি রাজনৈতিক বিবৃতি।
“তবে দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা সমন্বয় আরও গভীর হবে, যা উভয় দেশের সামরিক সক্ষমতাকেও শক্তিশালী করবে,” বলেন তিনি।
তথ্যসূত্র : আল জাজিরা