জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করেছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ দুটি দলকে নিবন্ধন দিতে যাচ্ছে ইসি।
এ দুটি দলের বিষয়ে কারও কোনও আপত্তি আছে কি না, জানতে চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেবে ইসি। এই দুটি দলের বাইরে আদালতের নির্দেশনা থাকায় বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি নিবন্ধনযোগ্য।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।
তিনি বলেন, এনসিপির প্রতীক নিয়ে একটি বিষয় অনিষ্পন্ন আছে। তারা যে প্রতীক চেয়েছিল, তা ইসির এ সংক্রান্ত বিধিমালার তফসিলে নেই। তাদের কাছে প্রতীক চেয়ে চিঠি দেবে ইসি। তারা যে প্রতীকের কথা বলবে, সেটা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছিল। কিন্তু গত সপ্তাতে ইসি যে রাজনৈতিক দলের প্রতীকের গেজেট করেছে সেখানে শাপলা প্রতীক নেই। যে কারণে নিবন্ধনের বিষয়টি চূড়ান্ত করলেও দলটির প্রতীক এখনও নির্ধারিত হয়নি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসিতে নিবন্ধনের জন্য ১৪৩টি দল আবেদন করেছিল। প্রাথমিক বাছাইয়ে ২২টি দল টিকেছিল, যেগুলোর বিষয়ে মাঠপর্যায়ে তথ্য যাচাই করে ইসি। এর মধ্যে দুটি দল- এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ শর্ত পূরণ করেছে। তিনটি দলের বিষয়ে আরও পর্যালোচনা করা হবে। নয়টি দলের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করা হবে। আর সাতটি দলের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
ইসি সচিব জানান, নিবন্ধনের বিষয়ে তিনটি দলকে অধিকতর পর্যালোচনা করা হবে। সেগুলো হলো বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ–শাহজাহান সিরাজ)।
তিনি জানান, নয়টি দলের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করা হবে। সেগুলো হলো আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা ও জনতা পার্টি বাংলাদেশ।
জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অস্তিত্ব ও কার্যকারিতার পক্ষে প্রয়োজনীয় প্রমাণ না পাওয়ায় যে সাতটি দলের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে, সেগুলো হলো ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-সিপিবি এম), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ সল্যুশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী নিবন্ধন পেতে হলে দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি থাকতে হয়। প্রতিটি কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণও দেখাতে হয়।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। নিবন্ধিত না হলে দলীয় পরিচয় নির্বাচন করার সুযোগ নেই।
এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী আবার নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এখন দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি।