রাজধানী ঢাকার গুলশান, বনানী ও বারিধারার লেক উন্নয়নে ২০১০ সালে নেওয়া তিন বছরের প্রকল্প ১৫ বছরেও শেষ হয়নি। এর মাঝে তিন দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়।
আরেক দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্পের ব্যয় ১৪৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে আগামী বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এই ব্যয় সংশোধনীর ফলে প্রকল্পটির মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৫৫৫ কোটি টাকা।
গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেক উন্নয়ন ও লেকসংলগ্ন সড়ক ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে রাজধানীর পরিবেশগত উন্নয়ন, জলাধার সংরক্ষণ ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
প্রকল্পটির এই সংশোধনী বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
একনেক বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানিয়েছেন, বৈঠকে ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, গুলশান-বনানী-বারিধারার পরিবেশগত উন্নয়ন ও লেকের উন্নয়নে ২০১০ সালে কাজ হাতে নেওয়া হয়। তিন বছরে শেষ করার উদ্দেশ্যে গৃহীত প্রকল্পটি নানা জটিলতায় পড়ে ১৫ বছরেও শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আরও ১৪৫ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্প ব্যয় ৫৫৫ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “লেকে আসা পয়ঃনিস্কাশনের পানি বন্ধ করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়েই বেশি সমস্যা হচ্ছে। কড়াইল বস্তিসহ অবৈধ বসবাসকারীদের অন্য জায়গায় পুনর্বাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।”
২০১০ সালে ৪১০ কোটি টাকা ব্যয় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সরকার জোগান (জিওবি) দিচ্ছে ৩১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং রাজউকের অর্থায়ন রয়েছে ৯৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
তখন প্রকল্পটির মেয়াদকাল ছিল ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত। ওই মেয়াদে প্রকল্পটি শেষ হয়নি। তৃতীয় বার মেয়াদ ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু প্রকল্পর কাজ এখন প্রায় স্থবির রয়েছে।
তবে এ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৭৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-
>> ‘বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয়ের ৭টি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্প। এর মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
>> ‘প্রিভেনশন অব ভায়োলেন্স অ্যান্ড হার্মফুল প্র্যাক্টিসেস এগেইন্সট চিলড্রেন অ্যান্ড ওম্যান ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প। ব্যয় ১৭০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
>> ‘নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ব্যয় বাড়ছে ২২৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
>> ‘ডিজেস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট (কম্পোন্যান্ট-১,২) (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; ব্যয় বাড়ছে ৩৪ কোটি টাকা।
>> ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভারি ইমার্জেন্সি প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্রজেক্ট (বি-স্ট্রং) (ডিডিএম অংশ) প্রকল্প, ব্যয় ২৪৪ কোটি টাকা।
>> ‘খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ প্রকল্প; ব্যয় ৪৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
>> ‘উইকেয়ার ফেজ-১: ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক (এন-৭) উন্নয়ন’ (১ম সংশোধিত’ প্রকল্প; ব্যয় বাড়েছে ২ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।
>> ’বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এই প্রকল্পে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ব্যয় বাড়ানো হয়নি।



