Beta
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে সম্পৃক্ত হচ্ছে না সেনাবাহিনী

বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় এক বছরের বেশি সময় ধরে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। ফাইল ছবি
বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় এক বছরের বেশি সময় ধরে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিয়ে আলোচনার মধ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনী জানাল, ছাত্র সংসদের নির্বাচনে তারা সম্পৃক্ত হতে চায় না।

এনিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর দেখার পর বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এবিষয়ে সরকারের কোনও নির্দেশনা প্রতিরক্ষা বাহিনী পায়নি, এই দায়িত্বে যুক্ত হওয়ার সুযোগও নেই।

ছাত-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় বছর পর আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৩ বছর পর ১১ সেপ্টেম্বর হবে জাকসু নির্বাচন।

গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় থেকেই বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে মাঠে রয়েছে প্রতিরক্ষা বাহিনী।

এই প্রেক্ষাপটে ডাকসু নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তের খবর এই সপ্তাহে জানিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জাকসু নির্বাচনের দিনও সেনা সদস্য মোতায়েন চেয়ে গত ২০ অগাস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে চিঠি পাঠায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছিল, ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা সদস্যরা থাকবে। প্রয়োজনে তারা ক্যাম্পাসেও প্রবেশ করবে এবং ভোট শেষে ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ঘিরে রাখবে।

শিক্ষার্থী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি দাবি করেছিল।

জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হয়ে এলেও কোনও ছাত্র সংসদ নির্বাচন এর আগে কখনও সেনা প্রহরায় না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি উঠেছিল সাবেক ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে।

ডাকসুর দুই বারের ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “সামরিক সরকারের সময়েও তো আমরা এরকম সিদ্ধান্ত নিতে দেখিনি। এমনকি পুলিশকে পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হতো না।”

বর্তমানে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা স্পর্শকাতর জায়গায়, যেখানে সেনাদের সঙ্গে ছাত্র সংঘর্ষের নজির রয়েছে, সেখানে এমন একটি সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হলো?”

ডাকসুর সাবেক জিএস মুশতাক হোসেনও ভিন্নমত জানিয়ে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের। অতীতে সেভাবেই ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। এর জন্য সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই, সেরকম কোনো পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি।”

জাকসুর সাবেক জিএস আজিজুল হাসান চৌধুরী শাহীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সঙ্গে সেনা মোতায়েন সাংঘর্ষিক। প্রশাসন যদি দায়িত্ব পালন করে এবং সব সংগঠনকে নিয়ে বসে তবে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।”

ডাকসুর স্বতন্ত্র প্যানেলের ভিপি প্রার্থী, জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা উমামা ফাতেমাও বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “আমাদের কারও সাথে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

“বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ইন্টারনাল (অভ্যন্তরীণ) ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী কেন মোতায়েন করা হবে, সেটাও আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা প্রচণ্ড রকমের লজ্জাজনক একটা ব্যাপার।”

এমন সব আলোচনার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার আইএসপিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, “সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত বিবিধ সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, যা সেনাবাহিনীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

“এ বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এসকল নির্বাচনসমূহে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কোনও নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনও দায়িত্বে সম্পৃক্ত হবার সুযোগ নেই।”

“বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মনে করে, বিদ্যমান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সমূহ একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হবে,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত